রাজ্যে লোকসভায় ১৮টি আসন জয়ের পর বিজেপি জবরদখল এবং হিংসার রাজনীতি করছে বলে বার বার সরব হচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার বিজেপিকে ‘হিংসার রাজনীতি’ থেকে বিরত থাকতে বললেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। তাঁর বক্তব্য, রাজনৈতিক হিংসায় জড়ালে মানুষের চোখে নীচে নেমে যেতে হবে। যার প্রতিক্রিয়ায় তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘কৈলাসবাবুরা এত দিনে বুঝতে পেরেছেন, ধর্মের কার্ড খেলে আর বেশি দূর এগনো যাবে না। এ বার কর্মের কার্ড চাই। আর সে ক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই এগিয়ে আছেন। তাই এখন এ সব বলছেন।’’
লোকসভা ভোটে জেতার পর দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের নেতৃত্বে দেশ জুড়ে ফের সদস্যকরণ অভিযানে নামছে বিজেপি। এ রাজ্যে সেই অভিযান শুরু করতে বুধবার কলকাতার আইসিসিআর-এ একটি বৈঠক হয়। সেখানে প্রতি বুথে অন্তত ২৫ জন এবং রাজ্যে ন্যূনতম ২ কোটি সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক হয়। ওই বৈঠকেই কৈলাস বলেন, ‘‘তৃণমূল রাজনৈতিক হিংসা করছে। আমরাও হিংসা দিয়ে তার জবাব দিতে পারি। কিন্তু দেব না। কারণ, হিংসার পথ নিলে আমরা মানুষের চোখে নীচে নেমে যাব। আমরা দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল এবং সরকার। ওটা আমরা করতে পারি না।’’ তবে একই সঙ্গে কৈলাসের হুঁশিয়ারি, ‘‘আমরা শালীনতার রাজনীতি করছি। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, আমরা দুর্বল।’’
তৃণমূলের মহাসচিব পার্থবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘আমরা রাজ্যের শাসক দল। শাসক দল সব সময় শান্তি এবং সম্প্রীতি বজায় রাখতে চায়। তৃণমূল হিংসায় বিশ্বাস করে না। আর রাজনৈতিক হিংসা বলে কিছু হয় না। হিংসা হিংসাই।’’ পার্থবাবুর পাল্টা অভিযোগ, ‘‘বিজেপি কেন্দ্রের শাসক দল হয়েও ধর্মের কার্ড খেলে বিভাজনের রাজনীতি করে। কারণ ওদের কোনও কর্মসূচি নেই।’’
কৈলাস এ দিন ফের অভিযোগ করেন, মমতা দেশের কথা না ভেবে কেবল নিজের গদি বাঁচানোর কথা ভাবেন। কৈলাস বলেন, ‘‘সেচ এবং পানীয় জলের গ্রামীণ প্রকল্পে অনুদানের বিষয়ে আলোচনার জন্য সব রাজ্যের কৃষিমন্ত্রীদের ডাকা হয়েছিল। এ রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী যাননি। শুধু দু’জন ইঞ্জিনিয়ারকে পাঠিয়েছিলেন। তাঁদের সঙ্গে প্রয়োজনীয় নথিপত্রও ছিল না। এর ফলে পশ্চিমবঙ্গ ওই প্রকল্প থেকে বঞ্চিত হল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অহঙ্কারের জন্যই রাজ্যের লোকসান হচ্ছে।’’ মমতা অভিযোগ করেছিলেন, তৃণমূল থেকে যারা বিজেপিতে যাচ্ছে, তারা ‘চোর’। তার প্রতিক্রিয়ায় কৈলাস এ দিন বলেন, ‘‘তৃণমূল দলটা কয়লা খাদান। সেখান থেকে বেছে বেছে হিরেগুলো আমরা নিচ্ছি। আবর্জনাগুলো তৃণমূলেই পড়ে থাকছে।’’ পার্থবাবুর পাল্টা কটাক্ষ, ‘‘বেছে বেছে কেমন হিরের টুকরো ছেলেদের বিজেপি নিচ্ছে, তা বাংলার মানুষ দেখছেন। আবর্জনা নিচ্ছে। আবর্জনার স্তূপ থেকে আর বেরোতে পারবে না।’’
এ দিন রাজ্য বিজেপি কার্যালয়ে বিভিন্ন সরকারি দফতরের কিছু কর্মী দলে যোগদান করেন। সেখানে মুকুল রায়ও বলেন, ‘‘সংযত হয়ে কাজ করবেন। এমন কিছু করবেন না, যাতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy