Advertisement
E-Paper

ধৃত বরুণ-হত্যায় দোষী সুমন্ত

নাবালক থাকায় বরুণ বিশ্বাস খুনের দায়ে তাকে তিন বছর সরকারি হোমে কাটাতে হয়েছিল। হোম থেকে বেরিয়ে এ বার এক মহিলাকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার হল গোপালনগরের ন’হাটার বাসিন্দা সুমন্ত দেবনাথ।

সীমান্ত মৈত্র

শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৬ ০৩:২২
বাঁ দিকে ধৃত সুমন্ত দেবনাথ। ডান দিকে সাধন সরকার ও তাঁর স্ত্রী পুষ্পা সরকার। নিজস্ব চিত্র।

বাঁ দিকে ধৃত সুমন্ত দেবনাথ। ডান দিকে সাধন সরকার ও তাঁর স্ত্রী পুষ্পা সরকার। নিজস্ব চিত্র।

নাবালক থাকায় বরুণ বিশ্বাস খুনের দায়ে তাকে তিন বছর সরকারি হোমে কাটাতে হয়েছিল। হোম থেকে বেরিয়ে এ বার এক মহিলাকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার হল গোপালনগরের ন’হাটার বাসিন্দা সুমন্ত দেবনাথ।

বছর চারেক আগে সুটিয়া গণধর্ষণ-কাণ্ডের অন্যতম সাক্ষী তথা প্রতিবাদী মঞ্চের সম্পাদক বরুণকে গোবরডাঙা স্টেশনের এক নম্বর প্ল্যাটফর্মের সামনে গুলি করে খুন করা হয়। স্কুলশিক্ষক বরুণ ওই গণধর্ষণ কাণ্ডের বিরুদ্ধে এলাকায় জনমত তৈরি করেছিলেন। সেই বরুণকে সুপারি নিয়ে খুনের অভিযোগে দশম শ্রেণির ছাত্র সুমন্তকে ধরেছিল পুলিশ। এই খুন নিয়ে তোলপাড় হয় গোটা রাজ্য। বরুণকে নিয়ে তৈরি হয় সিনেমাও।

সুমন্তর তখন ১৬ বছর বয়স। নাবালক থাকায় জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ড সুমন্তকে তিন বছরের জন্য সরকারি হোমে পাঠায়। মাসকয়েক আগে সে হোম থেকে ছাড়া পায়। তার পরই গত ২৮ এপ্রিল গভীর রাতে ফের সুপারি নিয়ে হাবরার খারো এলাকার বাসিন্দা কল্যাণী বৈরাগীর (৪৫) বাড়িতে হামলা চালিয়ে তাকে চপার দিয়ে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে সুমন্তের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার রাতে হাওড়া স্টেশনের সামনে থেকে আবার সুমন্তকে গ্রেফতার করল পুলিশ। কল্যাণীকে খুনের অভিযোগে সুমন্তকে ধরার আগে ওই দিন দুপুরে পুলিশ খারো এলাকা থেকে সাধন সরকার ও পুষ্পা সরকার নামে এক দম্পতিকেও গ্রেফতার করে। পুলিশের দাবি, ওই দম্পতিই সুমন্তকে খুনের সুপারি দিয়েছিল। ধৃতদের শুক্রবার বারাসত জেলা আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাদের ১৪ দিন জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশে আজ, শনিবার তাদের টিআই প্যারেড হওয়ার কথা।

উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই মহিলাকে খুনের পর সুমন্ত মুম্বই পালিয়েছিল। মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে তাকে ধরা হয়েছে। এ ক্ষেত্রেও সে সুপারি নিয়েছিল। ওই খুনে জড়িত সুমন্তের বাকি সহযোগীদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।’’

কেন খুন করা হয় কল্যাণীদেবীকে?

তদন্তকারীদের দাবি, বরুণ-হত্যায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরে সুমন্ত যখন আড়িয়াদহের হোমে ছিল, তখন সেখানে তার সঙ্গে কল্যাণীদেবীর দুই ছেলে সুদীপ্ত এবং বিশ্বজিতের আলাপ হয়। সুদীপ্তের সঙ্গে সাধনের এক বিবাহিত মেয়ের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। সাধন তা মানতে পারেননি। সুমন্তর সঙ্গে আবার সাধনের আর এক মেয়ের সম্পর্ক হয়। তাদের বিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রতি দিয়ে সুদীপ্তকে সরিয়ে দেওযার জন্য সুমন্তকে সুপারি দেন সাধনেরা।

পুলিশের দাবি, জেরায় সুমন্ত জানিয়েছে, ২০ হাজার টাকা সুপারি দেওয়া হয়েছিল। সে আরও দু’জনকে সঙ্গে নিয়ে ২৮ এপ্রিল রাতে সুদীপ্তদের বাড়িতে চড়াও হয়। নিজেদের ‘পুলিশ’ পরিচয় দিয়ে তাদের ডাকে। সুদীপ্তের বাবা ভবেনবাবু দরজা খুলে বের হতেই সুমন্তের এক শাগরেদ মুখোশ খুলে ফেলে ভবেনবাবুকে লক্ষ করে গুলি চালায়। গুলি ভবেনবাবুর বুকের নীচে লাগে। স্বামীকে বাঁচাতে কল্যাণীদেবী ছুটে এলে সুমন্ত চপার দিয়ে তাঁকে কুপিয়ে খুন করে। সুদীপ্ত ও বিশ্বজিৎ পালায়। এর পরে সুমন্ত তার প্রেমিকাকে নিয়ে মুম্বই পালায়।

কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। লুকিয়ে সুমন্ত যখন প্রেমিকাকে নিয়ে মুম্বই থেকে ফিরছিল, তখন মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে পুলিশ তার নাগাল পেয়ে গেল।

Police Murder Victim
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy