Advertisement
E-Paper

পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর, ওসিকে ৬ ঘণ্টা আটকে রেখে জাতীয় সড়ক অবরোধ বীরভূমে

মন্দিরের ট্রাস্টি এবং গ্রামের বাসিন্দারা পুলিশের নিষ্ক্রিয়তাকেই দায়ী করেছেন এই চুরির জন্য।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৮ ১৪:১৫
চুরির ঘটনা ঘিরে রণক্ষেত্র্র বীরভূমের সদাইপুর এলাকা।—নিজস্ব চিত্র।

চুরির ঘটনা ঘিরে রণক্ষেত্র্র বীরভূমের সদাইপুর এলাকা।—নিজস্ব চিত্র।

একটি মন্দিরে চুরির ঘটনাকে ঘিরে কার্যত রণক্ষেত্র্রের চেহারা নিল বীরভূমের সদাইপুর এলাকা। থানার ওসিকে আটকে রাখা, পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুর চালানোর পাশাপাশি উত্তেজিত জনতা জাতীয় সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাল।

ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার সকালে। সদাইপুরের বহু পুরনো মন্দির চিনপাই কালী মন্দির। স্থানীয় সূত্রে খবর, এ দিন সকালে পুরোহিত মন্দিরে গিয়ে দেখেন, দরজার তালা ভাঙা। ভেতরে গিয়ে দেখেন, সমস্ত লন্ডভন্ড। প্রতিমার গায়ে থাকা সমস্ত সোনা-রুপোর গয়না চুরি গিয়েছে। প্রণামী বাক্স ভেঙেও লুঠ করা হয়েছে সমস্ত নগদ টাকা। পুরোহিত সঙ্গে সঙ্গে খবর দেন মন্দিরের ট্রাস্টিদের। খবর দেওয়া হয় সদাইপুর থানার পুলিশকেও। ঘটনাস্থলে সদাইপুর থানার ওসি এলে তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখানো শুরু করেন গ্রামের মানুষ।

মন্দিরের ট্রাস্টি এবং গ্রামের বাসিন্দারা পুলিশের নিষ্ক্রিয়তাকেই দায়ী করেছেন এই চুরির জন্য। মন্দিরের এক ট্রাস্টি বলেন, “মঙ্গলবার প্রতিমাকে সমস্ত গয়না পরানো হয়। তখন থেকেই আমরা পুলিশকে জানিয়েছিলাম প্রহরার ব্যবস্থা করার জন্য। মঙ্গলবার দু’জন সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন ছিলেন পাহারার জন্য।”

ওসিকে ঘিরে বিক্ষোভ।

আরও পড়ুন: দেদার ফাটল শব্দবাজি, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ আমলই দিল না রাজ্য​

গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ, বুধবার রাতে সেই সিভিক ভলান্টিয়ারদের তুলে নেওয়া হয়। এক ট্রাস্টি বলেন, “আমরা বলেছিলাম রাতে পাহারা রাখতে। কারণ, তখনও মাতৃপ্রতিমার গায়ে সমস্ত গয়না রয়েছে। কিন্তু ওসি রাজি হলেন না। গ্রামের কিছু যুবক জোর করলে পাল্টা ওসি তাঁদের ধমক দেন।” মন্দিরের অন্য এক ট্রাস্টি সমীরণ মিত্র বলেন, ‘‘পুজো উপলক্ষে মন্দিরের পাশেই বাউল গান এবংমেলা হয়। অনেক মানুষ আসেন। রাতে ওসি এসে মেলার মাইক বন্ধ করতে বলেন। সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর তিনি সব আলোও নিভিয়ে দিতে বলেন। ফলে সুনসান হয়ে যায় গোটা এলাকা।” সমীরণের দাবি, সব মিলিয়ে প্রায় ৮০ ভরি সোনার গয়না এবং আট কিলো রুপোর গয়না চুরি গিয়েছে।

রাস্তায় বিক্ষোভ উত্তেজিত জনতার।

গ্রামের বাসিন্দাদের দাবি, রাত দেড়টা পর্যন্ত লোকজন ছিল মন্দির চত্বরে। তারপরেই চুরির ঘটনা ঘটেছে। আর সেখান থেকেই পুলিশের নিষ্ক্রিয়তাকেই দায়ী করতে থাকেন গ্রামবাসীরা।

সকালে চুরির ঘটনা শোনার পর ওসি পৌঁছতেই তাঁকে আটকে রেখে বিক্ষোভ শুরু হয়ে যায়। পুলিশকে ঘিরে কটূক্তি করতে শুরু করেন গ্রামবাসীরা। প্রায় ছ’ঘণ্টা ধরে ওই অবস্থা চলতে থাকে। আটকে রাখা হয় পুলিশকে। তার মধ্যেই ভাঙচুর করা হয় পুলিশের একটি গাড়িও। ওসি আটকে পড়ার খবর শুনে বিশাল বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুবিমল পাল। তিনি কোনও মতে ওসিকে মুক্ত করেন। ততক্ষণে টায়ার জ্বালিয়ে জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন গ্রামবাসীরা। গ্রামবাসীদের দাবি, অবিলম্বে ওই ওসির গাফিলতির জন্য তাঁকে সাসপেন্ড করতে হবে। সঙ্গে দোষীদের গ্রেফতার করে চুরি যাওয়া সমস্ত গয়না উদ্ধার করতে হবে পুলিশকে।

প্রতিমার গায়ের সমস্ত গয়নাও চুরি গিয়েছে।

আরও পড়ুন: দেওয়ালির রাতে দেবলীনার দানে প্রাণ ফিরল ৩ জনের​

অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের আশ্বাসে বেলা ১২টা নাগাদ অবরোধ ওঠে।

Crime Police Theft Birbhum
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy