খুব একটা ভাল সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি না আমরা। অন্তত তেমনটাই বলছে রোজকার সংবাদমাধ্যম। খুন, ধর্ষণ, দুর্ঘটনা, জঙ্গিহানার প্রাত্যহিকতায় ক্রমেই আড়াল হয়ে যাচ্ছে মানবিক অনুভূতিগুলি। কিন্তু আড়াল হলেও তারা আছে মানুষের মধ্যেই। আর মানুষগুলো লড়ে যাচ্ছেন বেঁচে থাকার জন্য, অথবা বাঁচিয়ে রাখার জন্য। সেই অনুভূতিগুলিকে উস্কে দিতেই শনিবার সন্ধেয় সুবর্ণবণিক সমাজ প্রেক্ষাগৃহে বার্ষিক ‘হর্ষ অনুষ্ঠান’-এর আয়োজন করেছিল স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘স্পর্শ’। এ দিন তাদের তৃতীয় বার্ষিক অনুষ্ঠান ছিল।
শনিবার অনুষ্ঠানের মঞ্চে সম্মান জানানো হয় সমাজের মূলধারার বাইরের যোদ্ধাদের। সেই তালিকায় যেমন আছেন এ বছরের এভারেস্ট আরোহী মলয় মুখোপাধ্যায়, নন্দাঘুণ্টি শৃঙ্গ অভিযাত্রী শান্তনু চট্টোপাধ্যায়, তেমনই আছেন জয়নগরের অ্যাসিড-আক্রান্ত তরুণী মনীষা পৈলান। আছেন কাঁকুরগাছির মুদি-দোকানের ব্যবসায়ী ভক্তিপদ দাস, যিনি দীর্ঘ দিন ধরে গরিব মানুষদের অর্ধেক দামে চাল-ডাল-তেল-নুন বিক্রি করেছেন। রয়েছেন সুজিত চক্রবর্তী, নিজের দাদা সমর চক্রবর্তীর মৃত্যুর পর দাদার দেহ দান করেছেন নিজের উদ্যোগে।
এভারেস্ট অভিযানের পেছনে যে লড়াইটা লড়েছেন নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের যুবক মলয়, তেমনই অ্যাসিডে মুখ পুড়ে যাওয়ার পরেও মাথা উঁচু করে জীবনটাকে মেপে নিতে চেয়েছেন জয়নগরের মনীষা। জোর গলায় জানিয়েছেন, অ্যাসিডে চামড়াটুকুই পুড়েছে, আত্মবিশ্বাস নয়। তাঁদের সম্মানের আলোয় এ দিন মঞ্চ ভাগ করে নিল ৪৩ জন অনাথ শিশুও। পুজোর আগে নতুন জামা পাওয়ার আনন্দে ভরে উঠল শনি-বিকেলের প্রেক্ষাগৃহ।
আড়ম্বর নেই, আন্তরিকতা আছে ষোলো আনা। আছে সেবা, সম্মান, সংহতি। বস্তুত এই তিনটি শব্দই মূল মন্ত্র স্পর্শের। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক তাপসকুমার দে জানালেন, এই সময়ে প্রত্যেকেই নিজের মতো করে লড়াই করে চলেছেন প্রতিনিয়ত। তাঁর কথায়, ‘‘হাজারো প্রতিকূলতার মধ্যে মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছেন কেউ। কেউ বা আ়ড়ালে থেকে সহায় হচ্ছেন অন্য লড়াইয়ের। তাঁদেরকেই সম্মান জানাই আমরা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy