পশ্চিমবঙ্গের দুই জেলার চার বিধানসভা কেন্দ্রের ২০০২ সালের ‘বিশেষ’ ভোটার তালিকা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না! এমনই খবর নির্বাচন কমিশন সূত্রে। ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সমীক্ষার (স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন বা এসআইআর) প্রস্তুতি চলছে এ রাজ্যে। এখনও পর্যন্ত ১১ রাজ্যের প্রায় ১১০টি বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। তার মধ্যেই ভোটার তালিকা খুঁজে না-পাওয়ার বিষয়টি প্রকাশ্যে এল।
শেষ বার এসআইআর হয়েছে দু’যুগ আগে। ২০০২ সালে। সেই ভোটার তালিকাকে ভিত্তি করেই এগোচ্ছে কমিশন। বিহার দিয়ে শুরু হয়েছে এসআইআর প্রক্রিয়া। কমিশন পরে জানায়, শুধু বিহার নয়, অন্য রাজ্যগুলিতে হবে প্রক্রিয়া। ২০০২ বিশেষ নিবিড় সমীক্ষার ভোটার তালিকা নামে ওই ভোটার তালিকা প্রকাশ শুরু হয়েছে এ রাজ্যে। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের ওয়েবসাইটে এই তালিকা ইতিমধ্যে প্রকাশ করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ১১টি জেলার শতাধিক বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে কমিশন। বাকি জেলার সব বিধানসভার ভোটার তালিকা চলতি সপ্তাহের মধ্যেই প্রকাশ হয়ে যাবে বলে খবর কমিশন সূত্রে। কিন্তু যে চার বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটার তালিকা পাওয়া যাচ্ছে না, তা নিয়ে বিকল্প ভাবনাচিন্তাও শুরু করেছে কমিশন।
কমিশন সূত্রে খবর, বীরভূম এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার চার বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটার তালিকার খোঁজ নেই। দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলপি এবং বীরভূমের মুরারই, রামপুরহাট এবং রাজনগর বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটার তালিকা খুঁজে না-পাওয়ায় ‘বিপাকে’ কমিশন। মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের ওয়েবসাইটে এখনও পর্যন্ত কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, দুই দিনাজপুর, মালদহ, নদিয়া, হাওড়া, হুগলি, মেদিনীপুর এবং বাঁকুড়া জেলার শতাধিক বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।
এখন প্রশ্ন, ওই চার বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটার তালিকা পাওয়া না গেলে কী হবে? কমিশন সূত্রে খবর, পশ্চিমবঙ্গে ২৩ বছর আগের ভোটার তালিকা সংরক্ষিত নথি। ওই চার বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটার তালিকার খোঁজ চলছে। কমিশন আশা করছে ওই তালিকা পাওয়া যাবে। যদি তালিকা পাওয়া না যায়, তবে বিকল্প হিসাবে ২০০৩ সালের খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে! উল্লেখ্য, জেলা নির্বাচনী আধিকারিক বা জেলাশাসকের (ডিএম) কাছ থেকেই ভোটার তালিকা চেয়ে পাঠিয়েছিলেন মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক। সূত্রের খবর, মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের অফিস থেকে সংশ্লিষ্ট জেলার ডিএমদের ওই তালিকা খুঁজে বার করার কথা বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
প্রসঙ্গত, নির্দিষ্ট সময়ান্তরে কমিশন এই বিশেষ নিবিড় (এসআইআর) সমীক্ষা করে। রাজ্যগুলিতে শেষ বার এই এসআইআর হয়েছিল ২০০২ সাল থেকে ২০০৪ সালের মধ্যে। বিহারে হয়েছিল ২০০৩ সালে। ভোটার তালিকায় থাকা নামের মধ্যে কারা মৃত, কারা অন্যত্র চলে গিয়েছেন, কারা ভুয়ো— গভীরে গিয়ে তা সমীক্ষা করে কমিশন। তার পরে তৈরি করে সংশোধিত তালিকা।
এসআইআর-এ ‘কারচুপি’র অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ৮ অগস্ট জাতীয় নির্বাচন কমিশনের দফতর ঘেরাও করবেন তাঁর দলের সাংসদেরা। গত ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে মমতা জানিয়েছিলেন, বাংলায় এসআইআর-এ বৈধ ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হলে প্রতিবাদ হবেই। এসআইআর-কে কেন্দ্র করে উত্তাল জাতীয় রাজনীতি। উত্তাল সংসদও।