Advertisement
E-Paper

বর্জ্য-জল নেই, স্তব্ধ প্রকল্প

অঢেল দূষণ-বিষে জর্জরিত গঙ্গা। সেই গরলের মোকাবিলায় শোধন প্রকল্পও তৈরি। অথচ বর্জ্যমিশ্রিত দূষিত জল পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রকল্পে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থাই নেই।

সুরবেক বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:৫৬

অঢেল দূষণ-বিষে জর্জরিত গঙ্গা। সেই গরলের মোকাবিলায় শোধন প্রকল্পও তৈরি। অথচ বর্জ্যমিশ্রিত দূষিত জল পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রকল্পে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থাই নেই।

অগত্যা নদিয়ার গয়েশপুরে তৈরি জল শোধনের প্ল্যান্ট বসে আছে হাত গুটিয়ে। যদিও পশ্চিমবঙ্গে গঙ্গার দূষণ কমাতে কেন্দ্রের দেওয়া প্রায় ১৭০ কোটি টাকায় এক বছরেরও বেশি আগে প্রস্তুত হয়ে গিয়েছে সেটি। শোধনের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ নোংরা জল ওই প্রকল্পে আনার বন্দোবস্ত করতে পারেনি রাজ্য সরকারই। তৈরি হয়েও কার্যত অচল হয়ে আছে কেন্দ্রীয় পরিবেশ ও বন মন্ত্রকের ১০০ শতাংশ আর্থিক সাহায্যে গড়ে ওঠা ওই জল শোধন প্রকল্প।

অথচ কেন্দ্রীয় ও পশ্চিমবঙ্গ— দুই দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নথিই বলছে, এই রাজ্যে গঙ্গার দূষণ কমার লক্ষণ নেই। গয়েশপুরের শোধন প্রকল্পটি যাতে চালু করা যায়, সেই জন্য রাজ্য সরকার তিনটি পুরসভা এলাকার সব গৃহস্থ বাড়ির নোংরা, বর্জ্য-জল ওই প্রকল্পে আনতে উদ্যোগী হয়েছে। ভাটপাড়া, কল্যাণী ও গয়েশপুর পুরসভার বাসিন্দাদের নোংরা জল ওই প্রকল্পে এনে ফেললে প্রকল্পটি পূর্ণ ক্ষমতায় চলতে পারবে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞেরা।

নবান্নে শুক্রবার রাজ্যের গঙ্গা দূষণ নিয়ন্ত্রণ কমিটির প্রথম বৈঠকে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। মুখ্যসচিব মলয় দে ওই কমিটির চেয়ারম্যান। কমিটির আহ্বায়ক কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ)-র সিইও সৌমিত্র মোহন। তিনি বলেন, ‘‘গয়েশপুরের জল শোধন প্রকল্পের সঙ্গে ভাটপাড়া, কল্যাণী ও গয়েশপুর পুরসভার প্রতিটি বাড়ির বর্জ্য-জল নিকাশির সংযোগ করার জন্য ৬৫ কোটি টাকা মঞ্জুর করেছে রাজ্য। ছ’মাসের মধ্যে ওই কাজ শেষ হবে।’’ কেএমডিএ সূত্রের খবর, ১১ হাজার গৃহস্থ বাড়ির সংযোগের কাজ এখনও বাকি।

আরও পড়ুন: ডাক্তারদের চাপ কমাতে দাওয়াই সেই ধ্যান

রাজ্যের পরিবেশ দফতর সূত্রের খবর, গয়েশপুরের প্রকল্পটি দিনে ৫০ কোটি লিটার জল শোধন করতে পারে। নোংরা জল ওই প্রকল্পে আসার পরে তা শোধন করা হবে এবং সেই শোধিত জল ফেলা হবে গঙ্গায়। বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, প্রকল্পটির যা ক্ষমতা, তার ৮০ শতাংশ জল না-পেলে সেটি পূর্ণ ক্ষমতায় চলতে পারবে না, সেটিকে চালুও করা যাবে না পুরোদমে।

বছরখানেক আগে তৈরি হওয়া সত্ত্বেও প্রকল্পটি কেন কাজ করছে না, তা জানতে কয়েক মাস আগে গয়েশপুরে আসেন কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান এসপি সিংহ পরিহার। কেন্দ্রীয় সরকারের শীর্ষ স্তর থেকে তাঁর কাছে খবর পৌঁছেছিল। রাজ্যের পরিবেশ দফতরের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই সময়ে বহু ট্যাঙ্কার বোঝাই জল ওই প্লান্টে ফেলে পর্ষদের চেয়ারম্যানকে কোনও রকমে বোঝানো হয়, সেটি চালু আছে। মেডিক্যাল কলেজের পরিকাঠামো ঠিকঠাক আছে— এটা কেন্দ্রীয় পরিদর্শকদের বোঝানোর জন্য ঠিক যে-ভাবে অন্য মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষক ও সরঞ্জাম তুলে এনে দেখানো হয় কুমিরছানার মতো!

নবান্নের খবর, শুক্রবারের বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান, নদী-বিশেষজ্ঞ কল্যাণ রুদ্র প্রস্তাব দেন, হালিশহর, কল্যাণী ও কাঁচরাপাড়ার ভিতর দিয়ে যাওয়া ‘বাগের খাল’ নামে নিকাশি নালাকে তিন কিলোমিটার ঘুরিয়ে গয়েশপুরের ওই প্রকল্পে এনে ফেলতে পারলে সমস্যার সমাধান হবে।

Water purification plant Water project Ganga Dirty Water
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy