E-Paper

কেন্দ্রীয় বিধি মেনে আবাস প্রকল্প রাজ্যে

উপভোক্তা বাছাইয়ে কেন্দ্রের বিধিগুলিও কার্যকর করেছে রাজ্য। আবাসের ক্ষেত্রে পৃথক মোবাইল অ্যাপ, জিয়ো-ট্যাগ, ছবি-সহ একাধিক স্তরে যাচাই বাধ্যতামূলক।

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৫:৫৭

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বিধিকেই মান্যতা দিয়ে এ রাজ্যে বাড়ি তৈরির প্রকল্পে উপভোক্তা বাছাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। যোগ্য উপভোক্তা যাচাইয়ের ক্ষেত্রেও কেন্দ্র এবং রাজ্যের অবস্থান কার্যত এক। প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় শর্তগুলি নিয়ে এক সময় রাজ্যের আপত্তি ছিল। প্রশাসনের একাংশের মতে, বর্তমানে আবাস প্রকল্পে কেন্দ্রীয় অনুদান বন্ধ থাকলেও ভবিষ্যতে তা ফের চালু হওয়ার আশা রাখছে রাজ্য। সম্ভবত সেই কারণেই আপত্তি ভুলে কেন্দ্রীয় বিধিগুলিকেই অনুসরণ করা হয়েছে। বরাদ্দের জটমুক্তি নিয়ে ইতিবাচক বার্তা পেলেই এই সব তথ্য কেন্দ্রের সামনে তুলে ধরবে রাজ্য।

কেন্দ্রের বিধি অনুযায়ী, দু’-তিন বা চারচাকার মোটরচালিত গাড়ি অথবা মাছ ধরার নৌকো থাকলে আবাসের উপভোক্তা হওয়া যাবে না। মোটরচালিত তিন অথবা চার চাকার কৃষি উপকরণ, ৫০ হাজার টাকা বা তার বেশি মূল্যের কিসান ক্রেডিট কার্ড, পাকা বাড়ি থাকলে, পরিবারের কেউ সরকারি কর্মী হলে, মাসে ১০ হাজার টাকার বেশি পারিবারিক আয় হলে, আয়কর এবং প্রফেশনাল ট্যাক্স দিলে, ফ্রিজ়, ল্যান্ডলাইন ফোন, আড়াই একরের বেশি সেচযুক্ত জমি, পাঁচ একরের বেশি বহুফসলি জমি বা সাড়ে সাত একরের বেশি জমি থাকলেও আবাস প্রকল্পের সুবিধা মিলবে না। রাজ্যও কার্যত এই বিধিগুলিকেই মান্যতা দিয়েছে রাজ্যও। তবে এর বাইরে দু’চাকার মোটরচালিত গাড়ি বা মাসিক পারিবারিক আয় ১০ হাজারের বদলে ১৫ হাজার টাকাকে নিজেদের বিধিভুক্ত করেছে রাজ্য।

উপভোক্তা বাছাইয়ে কেন্দ্রের বিধিগুলিও কার্যকর করেছে রাজ্য। আবাসের ক্ষেত্রে পৃথক মোবাইল অ্যাপ, জিয়ো-ট্যাগ, ছবি-সহ একাধিক স্তরে যাচাই বাধ্যতামূলক। রাজ্যেরও সিদ্ধান্ত, প্রত্যেক পঞ্চায়েত এলাকায় ব্লক, মহকুমা এবংজেলা-আধিকারিকদের মাধ্যমে ছবি, ভিডিয়ো রেকর্ডিং-সহ যাচাই হবে। উপভোক্তার তালিকা প্রকাশ, বিডিও, যুগ্ম-বিডিও, এসডিও, জেলাস্তরের আধিকারিক, রাজ্যস্তরের নজরদারি দল, স্থানীয় পুলিশ স্তরে পুনরায় যাচাই, সোশ্যাল অডিট হবে। এ ছাড়াও, আধার কার্ড, ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিসের অ্যাকাউন্ট, মোবাইল নম্বর যাচাইয়ের সঙ্গে প্রত্যেক উপভোক্তার আধার-নির্ভর ‘ইউনিক ডকুমেন্ট আইডেন্টিফিকেশন নম্বর’ (ইউডিআইএল) হবে।

অনেকেই বলছেন, কেন্দ্রের অনুমোদন থাকা প্রথম ১১ লক্ষ (রাজ্যের সিদ্ধান্তে আরও এক লক্ষ উপভোক্তা ছিলেন) উপভোক্তার জন্য রাজ্যের খরচ হয়েছে প্রায় ১৪,৪০০ কোটি টাকা। পরের ১৬ লক্ষের (যাতে কেন্দ্রের অনুমোদন নেই এখনও) জন্য প্রায় ১৯,২০০ কোটি টাকা খরচ হবে। মোট খরচের (প্রায় ৩৩,৬০০ কোটি টাকা) ৬০ শতাংশ কেন্দ্রের দেওয়ার কথা। সেই বরাদ্দ যাতে পাওয়া যায়, সেই লক্ষ্যেই কি কেন্দ্রীয় বিধি মেনে চলছে রাজ্য?

পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, “আবাসের আগের তালিকাও কেন্দ্রের বিধি মেনে এবং অনুমোদন-সহ তৈরি হয়েছিল। তাই নতুন ১৬ লক্ষের বাছাইয়েও একই মানদণ্ড মানার সিদ্ধান্ত হয়েছে।” তাঁর সংযোজন, “কেন্দ্র কবে টাকা দেবে, বা আদৌ দেবে কি না, তা স্পষ্ট নয়।” অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, নতুন ১৬ লক্ষ উপভোক্তার প্রথম কিস্তির জন্য চলতি আর্থিক বছরেই রাজ্যকে প্রায় ৯,৬০০ কোটি টাকা খরচ করতে হবে। যার বাজেটে কোনও সংস্থান নেই। সেই টাকা জোগাড় নিয়েও প্রশ্ন আছে। অর্থ দফতরের কর্তাদের একাংশের বক্তব্য, ঘোষণা যখন হয়েছে, তখন খরচ তো করতেই হবে। সে ক্ষেত্রে অ্যাপ্রোপ্রিয়েশন বিলের মাধ্যমে সেই খরচ আগামী বাজেটে যুক্ত হতে পারে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Pradhan Mantri Awas Yojana West Bengal government Central Government

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy