Advertisement
E-Paper

শুনানি হল না ডিভিশন বেঞ্চে, শুভেন্দুর ‘সনাতনী সম্মেলন’ নিয়ে সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ই আপাতত বহাল

বুধবার দিঘাতে জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই দিন ওই একই জেলায় কাঁথিতে ‘সনাতনী হিন্দু সম্মেলন’ করতে চেয়ে পুলিশের কাছে অনুমতি চাইলেও তা দেওয়া হয়নি।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৫ ২০:৩৫

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনের দিনেই (৩০ এপ্রিল, বুধবার) কাঁথিতে ‘সনাতনী হিন্দু সম্মেলন’ করার অনুমতি নিয়ে সিঙ্গল বেঞ্চের মঙ্গলবারের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু মঙ্গলবার সেই আবেদনের শুনানি হল না ডিভিশন বেঞ্চে। ফলে আপাতত বহাল রইল সিঙ্গল বেঞ্চের রায়।

হাই কোর্ট সূত্রের খবর, বুধবার রাজ্যের আবেদনের শুনানি হতে পারে ডিভিশন বেঞ্চে। প্রসঙ্গত, দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনের দিনেই (৩০ এপ্রিল, বুধবার) কাঁথিতে ‘সনাতনী হিন্দু সম্মেলন’ করার জন্য বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে মঙ্গলবার শর্তসাপেক্ষে অনুমতি দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের বেঞ্চ। তবে কর্মসূচির শর্তও বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। বিচারপতি জানান, তিন হাজার লোক নিয়ে এই সভা করা যেতে পারে। বেঁধে দেওয়া সংখ্যার বেশি জমায়েত করা যাবে না।

বুধবার দিঘায় জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই দিন ওই একই জেলায় কাঁথিতে ‘সনাতনী হিন্দু সম্মেলন’ করতে চেয়ে পুলিশের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছিল একটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের তরফে। তবে পুলিশ অনুমতি না দেওয়ার পরই হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল তারা। গত সপ্তাহে এই মামলা শুনানিতে বিচারপতি ঘোষ রাজ্যের অবস্থান জানতে চেয়েছিলেন। তবে ৩০ এপ্রিলের এই কর্মসূচিতে আপত্তি ছিল রাজ্যের। সোমবার বিচারপতি ঘোষের এজলাসে এই মামলার শুনানি ছিল। রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়, ওই দিন মুখ্যমন্ত্রীর কর্মসূচি রয়েছে। সেটি একটি বড় অনুষ্ঠান। বিভিন্ন ‘ভিভিআইপি’ অতিথি আসবেন। সেখানে নিরাপত্তাজনিত কারণে প্রচুর পুলিশকর্মী প্রয়োজন।

এই পরিস্থিতিতে একই দিনে কাঁথিতে সভা করার অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছিলেন রাজ্যের আইনজীবী। কিন্তু রাজ্যের আপত্তি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মামলাকারীর আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্য। দিঘা থেকে কাঁথির দূরত্বের বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন তিনি। তাঁর বক্তব্য ছিল, একই জেলায় হলেও দিঘা থেকে কাঁথির দূরত্ব অনেকটাই। দিঘায় কোনও কর্মসূচি হলে জেলার অন্য জায়গায় বাকিরা কেন কোনও কর্মসূচি করতে পারবেন না? সোমবার দীর্ঘ ক্ষণ শুনানির পর বিচারপতি ঘোষ নির্দেশ ঘোষণা স্থগিত রেখেছিলেন। মঙ্গলবার শর্তসাপেক্ষে অনুমতি দেন তিনি। সেই নির্দেশই চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় রাজ্য।

এই মামলায় সিঙ্গল বেঞ্চ তার পর্যবেক্ষণে জানিয়েছিল, গত শুক্রবার কাঁথি থানার ওসি ওই সভার অনুমতি বাতিল নিয়ে যে অবস্থান নিয়েছেন আদালত তা বিবেচনায় রেখেছে। তা দেখে মনে হয়েছে, পুলিশকর্মী কম রয়েছে। তাই ভিড় নিয়ন্ত্রণে সমস্যা হতে পারে। এই সব বিষয়ের থেকে থানার ওসি ‘রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট কারণ’ দেখিয়েছেন। একে ‘অতিসক্রিয়তা’ বলে আদালত মনে করছে।

কাঁথি থানার ভূমিকায় আদালত বিরক্ত বলে বার্তা দিয়ে বিচারপতি ঘোষ জানান, কাঁথি থানার ওসির অবশ্যই জানা উচিত, বিরোধী রাজনৈতিক দলের ব্যক্তিদের অধিকারও সমান ভাবে গুরুত্ব দেওয়া দরকার। রাজনৈতিক যোগ দেখে কোনও ব্যক্তির উৎসবে অংশ নেওয়ার অধিকার গুরুত্ব দেওয়া উচিত নয়। যেখানে একটি পুরো জেলা উৎসবের মেজাজে রয়েছে। ধর্ম সম্মেলন ধর্মীয় না কি রাজনৈতিক অনুষ্ঠান ওসির তা দেখার দরকার নেই।

সব দিক বিবেচনা করে সিঙ্গল বেঞ্চ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যে হেতু জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনে প্রচুর মানুষ অংশ নেবেন। তাই মামলাকারী অনুষ্ঠান করবে তবে তিন হাজার লোক নিয়ে। সভাস্থলে একত্রে তিন হাজারের বেশি লোক জমায়েত করতে পারবে না। মামলাকারীকে জল, বায়ো-টয়লেট, নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে পদক্ষেপ করতে হবে। পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক রাখতে হবে। কমপক্ষে ২০ জনের নাম, ফোন নম্বর জমা দিতে হবে। যাতে কোনও সমস্যা হলে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়।

Calcutta High Court Suvendu Adhikari Hindu temple Digha Jagannath Temple
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy