বছর দুয়েক আগে চাপাচাপিটা শুরু হয়েছিল। রাজ্যের গ্রিডে সৌর বিদ্যুৎ-সহ অপ্রচলিত শক্তির ব্যবহার বাড়াতে ক্রমাগত সেই চাপ বাড়িয়ে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। বিদ্যুৎ মহল সূত্রের খবর, সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের কাছে এই বিষয়ে ফের চিঠি দিয়েছে তারা। তাতে বলা হয়েছে, পরিবেশের স্বার্থেই সৌর বিদ্যুৎ ও অপ্রচলিত শক্তির মিশ্রণের ব্যবহার বাড়ানো দরকার।
তবে এই নিয়ে চটজলদি কোনও বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে চাইছে না রাজ্য বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশন। তারা জানাচ্ছে, বণ্টন সংস্থাগুলির সঙ্গে আলোচনা করেই নতুন নির্দেশিকা জারি করা হবে। রাজ্যের এক বিদ্যুৎকর্তা জানান, কেন্দ্রের দাবি যা-ই হোক, রাজ্য এখনই তা পূরণের জায়গায় নেই। কারণ সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনে রাজ্য অনেকটাই পিছিয়ে।
কতটা পিছিয়ে বাংলা, বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্যেই তা পরিষ্কার। তিনি জানান, কিছু দিন আগে এ রাজ্যে মাত্র ২০ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন হতো। এখন সেটা কিছুটা বেড়েছে। সেটাকে দ্রুত ১০০ মেগাওয়াটের কাছাকাছি পৌঁছে দেওয়ার তোড়জোড় চলছে। গড়ে তোলা হবে ‘সোলার পার্ক’-ও। মন্ত্রীর কথায়, ‘‘কেন্দ্র ২০১৯ সালের মধ্যে এ রাজ্যের গ্রিডে ছয় শতাংশের মতো সৌর বিদ্যুৎ মিশ্রণের কথা বলেছে। তার জন্য রোজ ৩০০ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হবে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে সব জায়গায় সূর্যের বিকিরণ সমান না-হওয়ায় এত বিপুল উৎপাদন সম্ভব নয়। তবি আমরা উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টা করছি।’’
অপ্রচলিত শক্তি মন্ত্রক চাইছে, ২০১৯ সালের মধ্যে দেশের বণ্টন সংস্থাগুলির গ্রিডে সৌর ও অপ্রচলিত শক্তির মিশ্রণের জন্য ১৭ শতাংশ সংরক্ষণের বন্দোবস্ত হোক। ২০১৭-’১৮ সালের অর্থবর্ষে যার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৪.২৫%। এ বিষয়ে গত বছরেই একটি নির্দেশিকা জারি করে কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রক। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতেই কমিশনগুলিকে চাপ দেওয়া হচ্ছে। রাজ্য বিদ্যুৎ কমিশন কেন্দ্রীয় নির্দেশিকার কথা সরকারি ও বেসরকারি বণ্টন সংস্থাগুলিকে জানিয়ে দিয়েছে। যদিও রাজ্য সরকার মনে করছে, এত দ্রুত গ্রিডে সৌর বিদ্যুৎ ও অপ্রচলিত শক্তির মিশ্রণ বাড়ানো সম্ভব নয়।
বিদ্যুৎ কমিশনের এক কর্তা জানান, ফি-বছর সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহারের যে-লক্ষ্যমাত্রা ঠিক হয়, কেন্দ্র তা নিয়ে আপস করতে রাজি নয়। অপ্রচলিত শক্তি কম ব্যবহার করলে সেই ঘাটতি সৌর বিদ্যুৎ কিনে পূরণ করে দিতে হবে, এমনই নির্দেশ দিয়েছে দিল্লি। এটা করতে পারলে কয়লার ব্যবহার কমানো যাবে।
পরিবেশ দূষণ কমানোর সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বব্যাপী উষ্ণায়ন রুখতে ২০১৫ সালে প্যারিস চুক্তিতে সই করে ভারত। তার পর থেকেই সৌর ও অপ্রচলিত শক্তির ব্যবহার বাড়ানোর জন্য জোর দিয়ে আসছে কেন্দ্র। মূলত বাতাসে কার্বন ডাইঅক্সাইড কমিয়ে আনাই তাদের মূল লক্ষ্য। সেই জন্য অপ্রচলিত শক্তির ব্যবহার বাধ্যতামূলক করার পথে হাঁটতে চলেছে কেন্দ্র।
যদিও ২০১৬-’১৭ অর্থবর্ষে অধিকাংশ রাজ্যই এ ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy