Advertisement
E-Paper

সরকারি অর্থব্যয়ে লাগাম টানল নবান্ন, নতুন নির্দেশিকায় আর্থিক অনুমোদন-ঊর্ধ্বসীমায় কাটছাঁট, কী ব্যাখ্যা দিচ্ছে রাজ্য সরকার?

১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা, সড়ক যোজনার মতো একাধিক কেন্দ্রীয় প্রকল্পে অর্থ বন্ধ নিয়ে দিল্লির বিরুদ্ধে ধারাবাহিক ভাবে সরব রাজ্য সরকার। রাজ্য নিজেদের কোষাগার থেকে অর্থ দিয়ে সেই প্রকল্পগুলি চালাচ্ছে। এই আর্থিক পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দফতরের খরচের ঊর্ধ্বসীমায় লাগাম পরানো হল।

শোভন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৫ ১৩:৩২
WB State Government has reduced the upper limit of sanction of expenditure on the projects of various departments

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: আনন্দবাজার আর্কাইভ।

বিধানসভা ভোট যখন আর কয়েক মাস বাকি, তখন সরকারি অর্থ খরচে লাগাম টানল নবান্ন। এই মর্মে সোমবার একটি নির্দেশিকা জারি করেছে রাজ্য সরকার। সেখানে ২০২৩ সালের নির্দেশিকা সংশোধন করে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে কোন দফতরের সচিব এবং প্রধান সচিবেরা সংশ্লিষ্ট দফতরের প্রকল্পের জন্য সর্বোচ্চ কত টাকার অনুমোদন দিতে পারবেন।

নবান্নের জারি করা নতুন নির্দেশিকায় বলা হয়েছে পূর্ত, সেচ, পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ, পুর ও নগরোন্নয়নের মতো দফতরগুলি সর্বোচ্চ ৩ কোটি টাকার প্রকল্পে অনুমোদন দিতে পারবে। নতুন প্রকল্প হোক বা চলমান প্রকল্পের পরবর্তী ধাপ— সব ক্ষেত্রেই ৩ কোটি টাকার ‘ঊর্ধ্বসীমা’ প্রযোজ্য। ২০২৩ সালের নির্দেশিকা অনুযায়ী যা ছিল ৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ, খরচ অনুমোদনের ঊর্ধ্বসীমায় এক লপ্তে ২ কোটি টাকা কাটছাঁট করা হয়েছে এই দফতরগুলির ক্ষেত্রে।

তেমনই উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন, সুন্দরবন উন্নয়ন এবং পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন দফতরের কাজের ক্ষেত্রে এই ঊর্ধ্বসীমা করা হয়েছে ১ কোটি টাকা। দু’বছর আগের নির্দেশিকায় যা ছিল ৩ কোটি টাকা। এ ক্ষেত্রেও খরচ অনুমোদনের ঊর্ধ্বসীমা ২ কোটি টাকা কমানো হয়েছে। আবাসন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এমএসএমই), তথ্যসংস্কৃতি দফতরের ক্ষেত্রে ঊর্ধ্বসীমা ধার্য করা হয়েছে ৭৫ লক্ষ টাকা। বাদবাকি অন্যান্য দফতরের ক্ষেত্রে ৫০ লক্ষ টাকার ঊর্ধ্বসীমা নির্ধারিত করেছে নবান্ন। অর্থসচিব প্রভাত কুমার মিশ্রের স্বাক্ষরিত নির্দেশিকায় এ-ও স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে যে, সব ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্ট দফতরের উপদেষ্টার সিলমোহর লাগবে।

কেন এই নির্দেশিকা? সরকারের এক পদস্থ কর্তার কথায়, ‘‘বেশ কিছু দফতর সরকারের কোষাগারের কথা না-ভেবে উপুড়হস্ত হয়ে খরচ করছে। যা খরচ হচ্ছে সেই কাজের পর্যালোচনাও (রিভিউ) সঠিক ভাবে হচ্ছে না। সব দিক ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’ প্রসঙ্গত, ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা, সড়ক যোজনার মতো একাধিক কেন্দ্রীয় প্রকল্পে অর্থ বন্ধ নিয়ে দিল্লির বিরুদ্ধে ধারাবাহিক ভাবে সরব রাজ্য সরকার। কেন্দ্র অর্থ বরাদ্দ বন্ধ করলেও রাজ্য নিজেদের কোষাগার থেকে অর্থ দিয়ে সেই প্রকল্পগুলি চালাচ্ছে। সেই সঙ্গে রয়েছে লক্ষ্মীর ভান্ডার, কন্যাশ্রী, স্বাস্থ্যসাথীর মতো একগুচ্ছ সামাজিক তথা জনকল্যাণমূলক প্রকল্প। ফলে নবান্নের কোষাগারের উপর ‘চাপ’ রয়েছে। ‘চাপ’ যে রয়েছে, তা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও একাধিক বার প্রকাশ্যেই স্পষ্ট করেছেন। এই আর্থিক পরিস্থিতিতেই বিভিন্ন সরকারি দফতরের খরচের ঊর্ধ্বসীমায় লাগাম পরিয়েছে রাজ্য সরকার।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার ঝাড়খণ্ডের রাজধানী রাঁচীতে পূর্বাঞ্চলীয় পরিষদের বৈঠক রয়েছে। সেখানে রাজ্যের তরফে প্রতিনিধিত্ব করছেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। ওই বৈঠকে উপকূলীয় ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, কেন্দ্রীয় প্রকল্প বাস্তবায়নে সমন্বয়-সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা। বৈঠকে পৌরোহিত্য করবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। নবান্ন সূত্রে খবর, ওই বৈঠকে রাজ্যের প্রাপ্য নিয়ে সরব হতে পারেন চন্দ্রিমা।

West Bengal government CM Mamata Banerjee Budget Expenditure
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy