Advertisement
E-Paper

প্রি-পেড মিটারের দাওয়াই বিদ্যুতে

বাংলার ঘরে ঘরে আলো পৌঁছে দেওয়ার কর্মসূচি বহুলাংশে সফল। কিন্তু কোষাগারে তার প্রতিফলন তেমন ঘটছে না। কেননা বাজারে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া কমবেশি ১০০০ কোটি টাকার।

পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:৫৩

বাংলার ঘরে ঘরে আলো পৌঁছে দেওয়ার কর্মসূচি বহুলাংশে সফল। কিন্তু কোষাগারে তার প্রতিফলন তেমন ঘটছে না। কেননা বাজারে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া কমবেশি ১০০০ কোটি টাকার। তার উপরে রয়েছে বিভিন্ন জায়গায় হুকিং-ট্যাপিং করে কোটি কোটি টাকার বিদ্যুৎ চুরি। এই সব কারণে লোকসানের বোঝা ক্রমশ চেপে বসছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার ঘাড়ে। তাই প্রি-পেড মিটার লাগানোর মতো পুরনো দাওয়াই ফের প্রয়োগের কথা ভাবছে তারা। লক্ষ্য একটাই, লোকসান কমিয়ে রাজস্ব আদায় বাড়ানো।

বেশ কয়েক বছর ধরে সল্টলেক ও নিউ টাউনে এক শ্রেণির গ্রাহকের ঘরে প্রি-পেড মিটার ভাল ভাবেই চালু রয়েছে। কয়েক বছর আগে বোলপুর, শিলিগুড়ি, হলদিয়া, আসানসোল শহরেও গ্রাহকদের ঘরে ঘরে প্রি-পেড মিটার লাগানোর পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু নানা কারণে তা বাস্তবায়িত হয়নি। এ বার নির্দিষ্ট কয়েকটি জায়গায় ওই মিটার লাগানো যায় কি না, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। চিহ্নিত করা হয়েছে হাওড়া, ব্যারাকপুর, দুর্গাপুর, আসানসোলের মতো কিছু শহরকে। যে-সব এলাকায় এক শ্রেণির গ্রাহকের মধ্যে বিল না-মেটানোর প্রবণতা আছে, সেই জায়গাগুলিতে আলোচনার মাধ্যমে প্রি-পেড মিটার ব্যবস্থা চালু করার বিষয়ে ইতিমধ্যে আলোচনাও হয়েছে শীর্ষ মহলে।

রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি দফতর বিদ্যুতের বিল ফেলে রাখে। তাই গত বছর ছোট অফিসগুলিতে প্রি-পেড মিটার লাগানোর নির্দেশিকা জারি হয়। ঠিক হয়েছে, পাঁচ কিলোওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ ব্যবহার করে, এমন অফিসে প্রি-পেড মিটার লাগাতে পারবে বণ্টন সংস্থা। অফিসগুলিকে মোবাইলের মতো মিটার রিচার্জ করাতে হবে অর্থাৎ বিদ্যুৎ খরচের টাকা আগাম দিয়ে রাখতে হবে। সেই টাকা

শেষ হয়ে গেলে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে মিটার থেকে বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।

বণ্টন সংস্থা সূত্রের খবর, সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী বিভিন্ন ছোট সরকারি অফিসে এ বার প্রি-পেড মিটার লাগানোর কাজ শুরু হবে। বিল মেটাতে গড়িমসি করেন, বিভিন্ন শহরের এমন গ্রাহকদের ঘরেও পরীক্ষামূলক ভাবে প্রি-পেড মিটার লাগানোর ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে।

এক বিদ্যুৎকর্তার দাবি, অনেক গ্রাহকই ঘরে প্রি-পেড মিটার লাগিয়ে নিতে চাইছেন। অনেকের পৈতৃক বাড়ি রয়েছে জেলায়, কিন্তু কেউ সেখানে থাকেন না। অনেকে নতুন ফ্ল্যাট কিনেছেন কোনও শহরে। ওই সব গ্রাহক প্রি-পেড মিটার চান, যাতে আগাম টাকা ভরে রেখে দিতে পারেন। নানা কারণে নতুন করে ধাপে ধাপে প্রি-পেড মিটার লাগানোর প্রয়োজন দেখা দিয়েছে বলে জানাচ্ছেন বিদ্যুৎকর্তাদের একাংশ।

যথাসময়ে বিল না-মেটানোর প্রবণতার কথা শুনে সম্প্রতি উত্তরবঙ্গে একটি প্রশাসনিক বৈঠকে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিদ্যুৎকর্তারা জানাচ্ছেন, মানুষের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে, কিন্তু এক শ্রেণির গ্রাহক বিল মেটাচ্ছেন না। হুকিং-ট্যাপিং করে বিদ্যুৎ পরিষেবা নিচ্ছেন। এগুলো বন্ধ করার উপরে জোর দিতে বলেছে রাজ্যে প্রশাসন। প্রি-পেড মিটার সেই কাজে অনেকটাই সহায়ক হতে পারে।

Prepaid Meter WBSEDCL Electricity
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy