E-Paper

ছোট শিল্পের উন্নয়নে কেন্দ্রীয় প্রকল্পে বঙ্গও

প্রশাসনিক মহলের খবর, ২০২০ সালের শেষ নাগাদ কেন্দ্র প্রকল্পটির প্রস্তাব পাঠায় রাজ্যে। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে তার পরে তেমন নড়াচড়া হয়নি।

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০২৩ ০৭:৪২
Picture of industry.

প্রশাসনিক মহলের খবর, ২০২০ সালের শেষ নাগাদ কেন্দ্র প্রকল্পটির প্রস্তাব পাঠায় রাজ্যে। প্রতীকী ছবি।

কমবেশি আড়াই বছর আগেকার প্রকল্প। অবশেষে ছোট শিল্প ক্ষেত্রের উন্নয়নে সেই কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হতে চলেছে রাজ্য সরকার। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, অসংগঠিত ছোট, অতি ছোট শিল্প ক্ষেত্র, বিশেষ করে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের সঙ্গে যুক্ত শিল্পের পুনর্গঠনের জন্য ‘প্রধানমন্ত্রী ফর্মালাইজ়েশন অব মাইক্রো এন্টারপ্রাইজ়’ (পিএমএফএমই) প্রকল্প বঙ্গে যৌথ ভাবে রূপায়ণ করা হবে। প্রকল্প খরচের ৬০% দেবে কেন্দ্র, ৪০% খরচ করবে রাজ্য সরকার।

প্রশাসনিক মহলের খবর, ২০২০ সালের শেষ নাগাদ কেন্দ্র প্রকল্পটির প্রস্তাব পাঠায় রাজ্যে। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে তার পরে তেমন নড়াচড়া হয়নি। সম্প্রতি এটি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নবান্ন। পর্যবেক্ষকেরা জানান, কোভিডের ধাক্কা সাধারণ অর্থনীতির সঙ্গে সঙ্গে এমন ছোট উৎপাদন ক্ষেত্রগুলির উপরেও লেগেছিল। এই সব শিল্প ক্ষেত্র বেশ শ্রমনিবিড় এবং অর্থনীতির সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত। অর্থাভাবে সেগুলির আধুনিকীকরণ বা সম্প্রসারণ থমকে গিয়েছিল। অর্থনীতিবিদদের অনেকেই জানাচ্ছেন, এমন সব শিল্প ক্ষেত্রকে চাঙ্গা করা গেলে আর্থিক গতিবিধি যেমন বাড়বে, নিশ্চিত করা যাবে কর্মসংস্থানও। কিন্তু বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতিতে রাজ্যের একার পক্ষে এই দায়িত্ব নেওয়া কঠিন। তাই কেন্দ্রীয় প্রকল্পটি গ্রহণের সিদ্ধান্ত যুক্তিযুক্ত বলে মনে করা হচ্ছে।

প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “প্রকল্পের জন্য পৃথক খরচের খাত নির্ধারিত হয়েছে। এই প্রকল্পে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরকে করা হয়েছে রাজ্যের নোডাল দফতর।”

এ ক্ষেত্রে এক-একটি ইউনিটকে সর্বাধিক ১০ লক্ষ টাকা সহায়তা দেওয়া যাবে। ফলে তাদের ঋণের ভারও কমবে। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের সঙ্গে যুক্ত স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকেও আর্থিক সহায়তা দেওয়ার সুযোগ আছে। জেলা-ভিত্তিক এমন পণ্যের সংরক্ষণে পরিকাঠামো তৈরিতে তিন কোটি টাকা পর্যন্ত সহযোগিতা পাওয়া যাবে। পণ্যের প্রচারেও মিলবে সহায়তা। প্রশিক্ষণ, গবেষণার জন্য কোনও বিশ্ববিদ্যালয় নোডাল প্রতিষ্ঠান হিসেবে চিহ্নিত হবে।

এমনিতেই এখন ‘এক জেলা এক পণ্য’ নীতিতে এগোতে চাইছে কেন্দ্র। যেমন, মালদহের আম, পূর্ব মেদিনীপুরের কাজু-পান, হাওড়ার নারকেল-বেকারি, হুগলির আলু, জলপাইগুড়ির আনারস, দক্ষিণ ২৪ পরগনার পেয়ারা ইত্যাদি দিয়ে চাহিদাসম্পন্ন বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনের সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়াও রয়েছে প্রাণিসম্পদ, পোল্ট্রি, দুগ্ধজাত দ্রব্য, মৎস্য ও সামুদ্রিক ক্ষেত্রগুলিকে কেন্দ্র করে নানা উৎপাদন শিল্প। মিষ্টির দোকানও এর আওতাভুক্ত। তথাকথিত শিল্পের তালিকাভুক্ত না-হলেও এগুলির সঙ্গে লক্ষাধিক মানুষের রুজি জড়িয়ে আছে। সেগুলির পরিধি বা উৎপাদন বাড়লে কর্মসংস্থানও বাড়ানো যাবে।

এক প্রশাসনিক কর্তার কথায়, “প্রতিটি উৎপাদিত সামগ্রীর চাহিদা আছে। শুধু আধুনিক পরিকাঠামো ও খাদ্য সুরক্ষার মানদণ্ডের অভাবে তা ছড়িয়ে পড়তে পারে না। অথচ এক-একটি ক্ষেত্রে ন্যূনতম ১৫-২০ জন শ্রমিক যুক্ত থাকেন। রাজ্যে এমন ১৬ হাজার ইউনিট আধুনিকীকরণের জন্য চিহ্নিত হয়েছে। উৎপাদন বাড়িয়ে, উৎপাদিত সামগ্রীর মানদণ্ড বজায় রেখে তা ব্র্যান্ডিং ও বাজারজাত করা গেলে কর্মসংস্থান আরও বাড়বে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Small scale industry West Bengal Central Government

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy