Advertisement
১৮ মে ২০২৪
BJP

BJP: বাংলা বন্‌ধের ডাক কি আলোচনা ছাড়াই? বিজেপি-র অন্দরেই উঠছে নানা প্রশ্ন

সোমবার গোটা রাজ্যেই সে ভাবে সাড়া ফেলতে পারেনি বন্‌‌ধ। দুপুরের আগেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী প্রকাশ্যে বন্‌ধ প্রত্যাহার করে নেওয়ার আর্জি জানান। এই পরিস্থিতিতে গেরুয়া শিবিরেই উঠেছে প্রশ্ন— আদৌ রাজ্য নেতৃত্বের মধ্যে কোনও আলোচনা করে কি বন্‌ধ ডাকা হয়েছিল?

বন্‌ধ ডাকা নিয়ে বিভ্রান্তি গেরুয়া শিবিরে।

বন্‌ধ ডাকা নিয়ে বিভ্রান্তি গেরুয়া শিবিরে। ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৫:৫১
Share: Save:

রবিবার সকাল থেকে চলছিল গোটা রাজ্যে পুরভোট। বিজেপি-র রাজ্য থেকে জেলার নেতা, কর্মীরা ভোট নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন। বিকেলে সাংবাদিক বৈঠকে আচমকাই ঘোষণা করা হয় সোমবার ১২ ঘণ্টার বন্‌‌‌ধ ডাকছে দল। সাংবাদিক বৈঠকে বালুরঘাট থেকে ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। অনেক রাজ্য নেতারই দাবি, সেই সময় সংবাদমাধ্যমের মতো তাঁরাও প্রথমবার জানতে পারেন দল বাংলা বন্‌ধের মতো বড় কর্মসূচি নিতে চলেছে। সেটাও মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরেই। সোমবার গোটা রাজ্যেই সে ভাবে সাড়া ফেলতে পারেনি বন্‌‌ধ। দুপুরের আগেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী প্রকাশ্যে বন্‌ধ প্রত্যাহার করে নেওয়ার আর্জি জানান। এই পরিস্থিতিতে গেরুয়া শিবিরেই উঠেছে প্রশ্ন— আদৌ রাজ্য নেতৃত্বের মধ্যে কোনও আলোচনা করে কি বন্‌ধ ডাকা হয়েছিল?

বিজেপি সূত্রে যা জানা গিয়েছে, রবিবার দিনভর রাজ্যের সর্বত্র যখন পুরভোটে বিজেপি প্রার্থী ও কর্মীরা বাধার মুখে পড়ছিলেন তখন দলের সহ-পর্যবেক্ষক অমিত মালবীয়র নেতৃত্বেই বন্‌‌ধ ডাকার সিদ্ধান্ত নেন সুকান্ত। সেই আলোচনায় ছিলেন দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী। এ ছাড়া রাজ্যের অন্য কোনও নেতার সঙ্গে নাকি আলোচনাই করা হয়নি। এমনটাই যে হয়েছে সেটা স্পষ্ট করে স্বীকার না করলেও সুকান্ত আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘দলের উচ্চ নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করেই বন্‌ধ ডাকা হয়েছে।’’ জেলা ও অন্যান্য রাজ্য নেতাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছিল কি না তা নিয়ে মুখ খুলতে চাননি সুকান্ত। এমনকি দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও সাংবাদিক বৈঠকের আগে বন্‌ধ ডাকা হতে পারে বলে জানতেন না বলে জানিয়েছেন তাঁর ঘনিষ্ঠরা। দলের রাজ্যে সাধারণ সম্পাদকদের অনেকেই অন্ধকারে ছিলেন বলেই বিজেপি সূত্রে খবর।

রবিবার পুরভোট থাকায় সুকান্ত বালুরঘাটে, দিলীপ খড়্গপুরে, শুভেন্দু কাঁথিতে ছিলেন। অন্যান্য রাজ্য নেতারাও বিভিন্ন জেলায় ছিলেন। বিকেলের সাংবাদিক বৈঠকে তাঁরা ভার্চুয়ালি যোগ দেন। সেখানেই ঘোষণা হয় বন্‌ধ। তবে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আগে কোনও ভার্চুয়াল বৈঠক হয়নি। সে কথা মেনেছেন সুকান্ত। জানা গিয়েছে, আগে না বলা হলেও রাত ১০টার সময়ে একটি ভার্চুয়াল বৈঠকে ডাকা হয় রাজ্য ও জেলা নেতাদের। সেখানে মূলত বন্‌ধ সফল করতে কী কী করতে হবে, কতটা ঝাঁপাতে হবে সে ব্যাপারেই নির্দেশ দেন সুকান্ত, অমিতাভরা। সেই বৈঠকে রাজ্য ও জেলা নেতাদের যাঁরা ডাক পেয়েছিলেন তাঁদের তেমন কিছু বলার সুযোগ ছিল না বলেও জানা গিয়েছে।

গত বিধানসভা নির্বাচনে হতাশাজনক ফলের পর থেকেই বিপর্যস্ত বিজেপি। কোনও নির্বাচন বা আন্দোলনেই তেমন সাফল্য মেলেনি। পুরভোট নিয়েও যে বিজেপি ছন্নছাড়া তা পদে পদে টের পাওয়া গিয়েছে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে রাজ্যে ভোট প্রক্রিয়ার মধ্যে বন্‌ধ সফল করা যাবে কি না তা আগে থেকে ভাবা উচিত ছিল বলেই মনে করছে দলের বড় অংশ। তাঁদের বক্তব্য, কয়েকজনের ভাবনা এই ভাবে দলের উপরে চাপিয়ে দেওয়া ঠিক হয়নি। এর ফলে নতুন করে বন্‌ধে সাড়া ফেলতে না পারার গ্লানিতে দলের মুখ পুড়ল বলেও মনে করছেন গেরুয়া শিবিরের অনেকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP Suvendu Adhikari Sukanta Majumdar Dilip Ghosh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE