Advertisement
E-Paper

স্যালাইন-কাণ্ড: ইচ্ছাকৃত ভাবে না-করলে অসম্ভব! মুখ্যমন্ত্রী মমতা বোঝালেন চক্রান্ত আছে ঘটনাপ্রবাহে

বিধানসভায় মমতা জানান, দু’দফায় দু’টি পৃথক ল্যাবরেটরিতে ওষুধ বা স্যালাইনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তার পরে সেটি ব্যবহার করা হয়। মেদিনীপুর মেডিক্যালের ক্ষেত্রেও নমুনা পরীক্ষায় কোনও গলদ ছিল না।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৯:৪৫
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের স্যালাইনকাণ্ড নিয়ে বিধানসভায় বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের স্যালাইনকাণ্ড নিয়ে বিধানসভায় বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

ওষুধের গুণমান বজায় রাখার জন্য রাজ্য সরকারের কড়া প্রোটোকল রয়েছে। কেউ ইচ্ছাকৃত ভাবে না-করলে বা কোনও চক্রান্ত ছাড়া খারাপ মানের ওষুধ সরকারি হাসপাতালে সরবরাহ করা অসম্ভব! মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের স্যালাইন বিতর্ক নিয়ে মঙ্গলবার বিধানসভায় এমনই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

জানুয়ারির শুরুর দিকের ঘটনা। মেদিনীপুর মেডিক্যালে অস্ত্রোপচারের পরে একই দিনে পাঁচ প্রসূতি অসুস্থ হয়ে পড়েন। অভিযোগ, স্যালাইন দেওয়ার পরেই তাঁরা অসুস্থ বোধ করেন। পরে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়। তার কিছু দিন পরে মৃত্যু হয় অন্য এক প্রসূতির সন্তানের। ‘রিঙ্গার্স ল্যাকটেট’ স্যালাইন দেওয়ার পরেই ওই অসুস্থতা এবং মৃত্যু বলে দাবি করা হয়। ওই ঘটনা নিয়েই বিতর্কের শুরু। প্রশ্ন ওঠে ‘রিঙ্গার্স ল্যাকটেট’ নামে একটি স্যালাইনের ব্যবহার নিয়ে। ওই স্যালাইন ব্যবহারের কারণেই কি অঘটন? প্রশ্ন ওঠে স্বাস্থ্য দফতরের ভূমিকা নিয়ে। মঙ্গলবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বুঝিয়ে দিয়েছেন, ওই ঘটনার জন্য সরকারের ‘অসতর্কতা’ দায়ী নয়। তিনি জানান, কোনও ওষুধ হাসপাতালে পাঠানোর আগে দু’টি ল্যাবরেটরি থেকে গুণমান পরীক্ষা করা হয়। হাসপাতালে সরবরাহের পরেও তা ব্যবহারের আগে ‘র‌্যান্ডম স্যাম্পল’ পুনরায় দু’টি ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করা হয়। উভয় ক্ষেত্রেই একটি ল্যাবরেটরি থাকে ‘ন্যাশনাল অ্যাক্রিডিটেশন বোর্ড ফর টেস্টিং অ্যান্ড ক্যালিব্রেশন ল্যাবরেটরিজ়’ (এনএবিএল) অনুমোদিত। অপরটি রাজ্য সরকারের ‘স্টেট ড্রাগ কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ ল্যাবরেটরি’।

রাজ্য সরকার ‘রিঙ্গার্স ল্যাকটেট’ বা অন্য কোনও স্যালাইন কেনার পর কী কী সাবধানতা অবলম্বন করে, তার গোটা প্রক্রিয়া বিধানসভায় ব্যাখ্যা করেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা জানান, হাসপাতালে সরবরাহের আগে স্যালাইনগুলির গুণমান অত্যন্ত ভাল ভাবে যাচাই করা হয়। কোনও সংস্থার ওষুধ কেনার পরে প্রতিটি ‘ব্যাচ’ থেকে স্যালাইন বা ওষুধের নমুনা দু’টি পৃথক ল্যাবরেটরিতে পাঠিয়ে পরীক্ষা করা হয়। দু’টি জায়গা থেকেই যথাযথ শংসাপত্র পেলে তবেই সেগুলি পাঠানো হয় হাসপাতালে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও ল্যাবরেটরির থেকে পাঠানো শংসাপত্র দেখে ওই স্যালাইন বা ওষুধ গ্রহণ করেন। রোগীর শরীরে প্রয়োগের আগে তা আবার পরীক্ষা হয়। দ্বিতীয় বারও রিপোর্ট সঠিক এলে তবেই সেই ওষুধ বা স্যালাইন ব্যবহার হয়।

মুখ্যমন্ত্রী জানান, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে যে ‘রিঙ্গার্স ল্যাকটেট’ মিশ্রণ ব্যবহৃত হয়েছে, সেটিও একই ভাবে হয়েছে। ল্যাবরেটরিতে ওষুধ পরীক্ষার রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, ওষুধের গুণমানে কোনও গলদ ছিল না। সঠিক মানের স্যালাইনই মেদিনীপুর মেডিক্যালে সরবরাহ করা হয়েছিল বলে জানান মমতা।

মেদিনীপুর মেডিক্যালে অসুস্থ হয়ে পড়া পাঁচ প্রসূতির মধ্যে দু’জন এখনও পুরোপুরি সুস্থ হননি। তাঁদের মধ্যে দু’জন এখনও কলকাতায় এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় জানিয়েছেন, সম্প্রতি তিনি নিজে এসএসকেএমে গিয়ে ওই দুই প্রসূতির সঙ্গে দেখা করে তাঁদের খোঁজখবর নিয়ে এসেছেন। মমতা জানান, ওই দিন তিনি অসুস্থ সঙ্গীতশিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়কে দেখতে এসএসকেএমে গিয়েছিলেন। সে দিনই দেখা করে আসেন দুই অসুস্থ প্রসূতির সঙ্গেও।

মেদিনীপুরের হাসপাতালের স্যালাইন-কাণ্ড ঘিরে বিতর্কের জল গড়িয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট পর্যন্তও। হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের বেঞ্চে এই সংক্রান্ত একটি মামলা চলছে। ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকেই স্যালাইন-কাণ্ডে হাই কোর্টে রিপোর্ট জমা দিয়েছে রাজ্য সরকার। সেখানেও রাজ্য জানিয়েছিল, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে সরবরাহকৃত স্যালাইনে ভেজাল বা দূষণ ছিল না।

Mamata Banerjee Midnapore Medical College and Hospital Saline Controversy Ringers lactate solution
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy