আরজি করের আর্থিক দুর্নীতি মামলার তদন্তে উঠে আসা নির্ভরযোগ্য নথি পেতে সন্দীপ ঘোষদের নিম্ন আদালতে আবেদন করতে বলল কলকাতা হাই কোর্ট। মঙ্গলবার বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্তের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ওই সংক্রান্ত নথি চেয়ে অভিযুক্তেরা আবেদন করতে পারবেন। নিম্ন আদালত ওই আবেদন বিবেচনা করে নির্দেশ দেবে। হাই কোর্ট জানায়, এই সময়ের মধ্যে দুর্নীতি মামলার বিচারপ্রক্রিয়া নিম্ন আদালত চালিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। আপাতত তাতে হস্তক্ষেপ করা হবে না।
আরজি কর দুর্নীতি মামলায় সিবিআইয়ের নথি পেতে সন্দীপ ঘোষ-সহ পাঁচ অভিযুক্ত হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। বিচারপতি বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে অভিযুক্তদের সেই সব নথি দেওয়ার নির্দেশ দেয়। মঙ্গলবার শুনানিতে সিবিআইয়ের আইনজীবী তথা কেন্দ্রের ডেপুটি সলিসিটর জেনারেল রাজদীপ মজুমদার জানান, আদালতের নির্দেশ মেনে পর্যাপ্ত নথি দেওয়া হয়েছে। বিরোধিতা করে সন্দীপের আইনজীবী সব্যসাচী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সওয়াল, সব নথি হাতে পাননি তাঁরা। শুধুমাত্র তদন্তসূত্র সংক্রান্ত নথি দেওয়া হয়েছে। পাল্টা সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, তদন্ত চলছে। এই অবস্থায় নির্ভরযোগ্য কোনও তথ্য বা নথি দেওয়া সম্ভব নয়। তাতে তদন্তে প্রভাব পড়তে পারে। সিবিআইয়ের ওই সওয়াল শুনে হাই কোর্ট জানায়, ট্রায়াল কোর্ট নির্ভরযোগ্য নথি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেবে। সেখানে আবেদন করতে হবে অভিযুক্তদের।
বস্তুত, আরজি করে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ প্রকাশ্যে আনেন হাসপাতালের প্রাক্তন অতিরিক্ত সুপার আখতার আলি। তিনি এই ঘটনায় ইডি এবং সিবিআইকে দিয়ে তদন্ত করাতে চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। প্রাক্তন ডেপুটি সুপারের অভিযোগ, বিভিন্ন সময়ে চিকিৎসার সরঞ্জাম কেনার নামে টেন্ডার দুর্নীতি হয়েছিল আরজি করে। হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনিই ‘ঘনিষ্ঠ’দের টেন্ডার পাইয়ে দিয়েছিলেন। আরজি করে আর্থিক দুর্নীতির মামলায় প্রথম গ্রেফতার হন সন্দীপ। টানা কয়েক দিন সিবিআই দফতরে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরে এই মামলার সূত্র ধরে বিপ্লব সিংহ, আফসার আলি এবং সুমন হাজরাকেও গ্রেফতার করেছিলেন তদন্তকারীরা। এই মামলায় শেষ গ্রেফতার আশিস পাণ্ডে। প্রত্যেকেই বর্তমানে জেলবন্দি।