আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের (ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট) ওয়েবসাইট আচমকাই কাজ করা বন্ধ করে দিল। ডব্লিউডব্লিউডব্লিউ ডট ডব্লিউবিজেডিএফ ডট কম নামে জুনিয়র চিকিৎসকদের যে ওয়েবসাইটটি রয়েছে, সেটি আচমকা কেন কাজ করা বন্ধ করল, তা ঘিরে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। জল্পনা শুরু হয়েছে, তা হলে কি ওয়েবসাইটটি বন্ধ করে দিল ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট (ডব্লিউবিজেডিএফ)? বিভিন্ন মহলে যখন এই বিষয়টি নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে, তখন ফ্রন্টের সদস্য অনিকেত মাহাতো আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘ওয়েবসাইট আন্ডারকনস্ট্রাকশন। সেটি এখনও লঞ্চ করেনি। এখনও কাজ চলছে। তার জন্য কখনও চালু থাকছে, কখনও বন্ধ থাকছে। ওয়েবসাইট বন্ধ করা হয়নি।’’
অনিকেত আরও বলেন, ‘‘বিধাননগর পুলিশ একটি নোটিস পাঠিয়ে জানতে চায়, কেন ওয়েবসাইট হঠাৎ বন্ধ করা হয়েছে? পুলিশকে সেই নোটিসের জবাবও দেওয়া হয়েছে। তাদের জানানো হয়েছে, আমাদের কাজ চলছে। টেকনিক্যাল টিম বিষয়টি দেখছে। মেরামতির কাজ চলছে। ওয়েবসাইট বন্ধ হয়নি। তদন্তে যা যা সহযোগিতা করার দরকার, সব রকম ভাবেই তা করা হবে।’’
ফ্রন্টের ওয়েবসাইট আচমকা কাজ না করায় প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্য তৃণমূলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘নির্যাতিতার আবেগকে ব্যবহার করে প্রচুর টাকা তুলেছিল জুনিয়র ডাক্তারদের সংগঠন। সেই টাকা গেল কোথায়? আইনজীবীরা বলছেন, তাঁরা কেউ পয়সা নিয়ে মামলা লড়েননি। আবার অন্য দিকে বলা হচ্ছে, আইনি প্রক্রিয়ায় পয়সা খরচ হচ্ছে। দুটো কী করে একসঙ্গে হতে পারে?’’ কুণালের আরও প্রশ্ন, ‘‘কী করে ওঁদের অ্যাকাউন্ট থেকে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থার অ্যাকাউন্টে টাকা গেল? এই প্রশ্ন যখন উঠছে, তখন দেখা গেল ওয়েবসাইট উধাও।’’ তদন্ত হওয়া দরকার বলে মনে করেন রাজ্য তৃণমূলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক।
প্রসঙ্গত, আর জি কর আন্দোলনের নামে বিপুল অঙ্কের আর্থিক তহবিল তৈরি করা হয়েছে বলে আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসক ফ্রন্টের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অভিযোগ তোলে জুনিয়র চিকিৎসকদের পাল্টা নবগঠিত অ্যাসোসিয়েশন। ওই সংগঠনের তরফে দাবি করা হয়, আন্দোলনের নামে যে ৪ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা তোলা হয়েছে, তা দিয়ে কী করা হয়েছে, সেটা প্রকাশ্যে জানানো হোক। এমনকি, ইডি তদন্তের দাবিও তোলা হয়। যদিও আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসক ফ্রন্টের তরফে আর্থিক অস্বচ্ছতার অভিযোগ পুরোপুরি খারিজ করা হয়েছে। তাদের কথায়, “হুমকি সংস্কৃতির মধ্যে আর্থিক দুর্নীতিও কী ভাবে চলেছে, সেটা সকলেই জানেন।”
এই অভিযোগের মধ্যে কয়েক দিন আগেই বিধাননগর পুলিশ তলব করে আরজি আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত সাত জুনিয়র ডাক্তারকে। তাঁদের দাবি, আন্দোলনের সময় গঠিত তহবিল নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছে তাঁদের। তহবিলের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্নের মধ্যে আচমকা ডব্লিউবিজেডিএফ-এর ওয়েবসাইট কাজ না করায় নতুন বিতর্ক তৈরি হয়েছে।