প্রতীকী ছবি।
আধার নিয়ে ফের কেন্দ্রের সঙ্গে সংঘাত রাজ্যের। তার জেরে আগামী মার্চের পর রাজ্যের বহু শিশু ও কিশোরের মিড-ডে-মিল ও অঙ্গনওয়াড়ি প্রকল্পের সুবিধা পাওয়া নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। কেন্দ্র চায়, ব্যাঙ্ক ও ডাকঘরের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গও সকলের আধার নথিভুক্তি শিবিরের দায়িত্ব নিক। কিন্তু বাড়তি খরচের প্রশ্ন তুলে সেই দায় নিতে নারাজ রাজ্য।
গত বছর আধারের ভিত্তিতে উপভোক্তাদের সরাসরি ১৫টি প্রকল্পের সুবিধা দেওয়ার কথা জানায় কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রক। ডিসেম্বরের শেষে তারা রাজ্যের নারী শিশুকল্যাণ দফতরে চি দিয়ে জানিয়েছে, আধার না থাকলে বা আধারের জন্য নাম নথিভুক্ত না করলেও আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত ওই সব প্রকল্পের সুবিধা মিলবে। কিন্তু তার মধ্যে ওই উপভোক্তাদের আধারের জন্য নথিভুক্ত করতে হবে। সরকারি সূত্রের খবর, এ রাজ্যে পাঁচ বছর পর্যন্ত শিশুদের ৬১.৮% ও ৫-১৮ বছর বয়সীদের ৭৭.৫% আধারে নথিভুক্ত। ফলে এখনও বহু শিশু ও কিশোর আধার প্রক্রিয়ার বাইরে থাকায় মার্চের মধ্যে তাদের নথিভুক্তি নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। কারণ চিঠিতে ওই মন্ত্রক অন্য রাজ্যের মতো এ রাজ্যকেও আধার শিবির করার দায়িত্ব নিতে বলেছে। রাজ্য প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তা অবশ্য জানিয়ে দিয়েছেন, রেজিস্ট্রার হওয়ার প্রস্তাব মানা সম্ভব নয়।
উল্লেখ্য, গোড়ায় কেন্দ্রীয় রেজিস্ট্রার জেনারেল অব ইন্ডিয়ার পদ্ধতি মেনে আধার শিবির ও নথিভুক্তিকরণের দায়িত্বে ছিল কেন্দ্রীয় জনগণনা দফতর। ২০১৬ থেকে তার বদলে আধার কর্তৃপক্ষের (ইউআইডিএআই) পদ্ধতি চালু হয়। সে ক্ষেত্রে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা ও প্রতিটি রাজ্য, দু’পক্ষই রেজিস্ট্রার হয় বা শিবিরের মূল দায়িত্ব থাকে। উভয়ই এই শিবির চালানোর জন্য আলাদা আলাদা ভাবে হয় নিজেদের কর্মী বা বেসরকারি সংস্থাকে নিয়োগ করে।
ইউআইডিএআইয়ের অভিযোগ, বারবার বলা সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গ কখনওই সেই দায়িত্ব নেয়নি। কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থাগুলি এত দিন এ রাজ্যে আধার শিবির চালাচ্ছিল। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর দফতর নির্দেশ দেয়, ব্যাঙ্ক ও ডাকঘর ছাড়া ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ মার্চের মধ্যে ধাপে ধাপে বন্ধ করা হবে সমস্ত বেসরকারি আধার কেন্দ্র। এই ব্যবস্থা সুষ্ঠু ভাবে চালাতে ব্যাঙ্ক ও ডাকঘরে এমন শিবির বাড়ানোর পাশাপাশি রাজ্যগুলিকেও তা চালু করতে বলা হয়েছে।
কিন্তু তাতে নারাজ রাজ্য প্রশাসনের একাংশের ব্যাখ্যা, ওই দায়িত্ব নিলে সংশ্লিষ্ট দফতরকে এক জন সিনিয়র আইএএস অথবা ডব্লিউবিসিএস অফিসারকে পূর্ণ সময়ের জন্য নিয়োগ করতে হবে। সব জেলায় কর্মী-সহ আলাদা অফিস খুলতে হবে। তা ছাড়া এখন প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশুদের আধার নম্বর তৈরির জন্য কেন্দ্র রাজ্যকে মাথাপিছু যথাক্রমে ৫০ টাকা ও ২৭ টাকা কমিশন দেয়। রেজিস্ট্রার হলেও কমিশন একই থাকবে। বরং সব মিলিয়ে বিপুল আর্থিক বোঝা চাপবে রাজ্যের ঘাড়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy