রাজ্যে চটলগুলির সমস্যা মেটাতে দেরিতে হলেও তৃণমূল সরকারের ঘুম ভাঙার ইঙ্গিত মিলেছে সোমবার।
চটের বস্তার বরাত না-পেয়ে গত এক বছরে পশ্চিমবঙ্গে ২১টি চটকল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। চটকল-মালিকদের মূল অভিযোগ, রাজ্যের আলু বা ধান সংগ্রহের কাজে চালকল-মালিক বা হিমঘর-মালিকেরা কখনওই নতুন চটের বস্তা ব্যবহার করেন না। ফলে দেশের মধ্যে এ রাজ্যে সব চেয়ে বেশি চটকল থাকলেও বস্তার বরাতের জন্য তাদের তাকিয়ে থাকতে হয় পঞ্জাব, হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশের দিকে। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এ বার চালের মতো শস্যদানা বস্তাবন্দি করার ব্যবস্থায় বদল আনছে রাজ্য সরকার। ঠিক হয়েছে, ধান-চাল সংগ্রহের জন্য চালকল-মালিকদের অন্তত ৭০ শতাংশ নতুন চটের বস্তা কিনতেই হবে। তাতে চটকলের তৈরি বস্তার কিছুটা হলেও গতি হবে।
সোমবার নবান্নে কৃষিমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু বলেন,‘‘চলতি মরসুমে ২৫ লক্ষ টন ধান-চাল সংগ্রহ করার লক্ষ্যমাত্রা ধার্য হয়েছে। সেই ধান-চাল সংগ্রহের জন্য ৭০ শতাংশ নতুন বস্তা কিনতে হবে। এর ফলে এখানকার চটকল-মালিকদের কিছু সমস্যা মিটবে।’’
কিন্তু চালকল-মালিকেরা যদি নতুন বস্তা কিনতে রাজি না-হন?
খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘এই নিয়ে আমরা ইতিমধ্যে চালকল-মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। এখানকার চটকলগুলি যে বস্তার বরাত না-পেয়ে ধুঁকছে, সেটা তাঁদের বোঝানো হয়েছে। তাই এ বার ধান-চাল সংগ্রহের সময় অধিকাংশই নতুন বস্তা ব্যবহার করা হবে।’’
রাজ্যের ৫৯টি চটকলের মধ্যে ২১টি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। চটকলের সঙ্কট কাটাতে অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের নেতৃত্বে একটি মন্ত্রিগোষ্ঠীও তৈরি করেছিল সরকার। মাসখানেক আগে নবান্নে চটকল-মালিকদের নিয়ে একটি বৈঠক ডাকেন অর্থমন্ত্রী। সেখানেই চটকল খোলার পথে দু’টি প্রধান বাধার কথা জানান মিল-মালিকেরা। ১) চটের বস্তার বরাত না-মেলা। ২) শাসক দলের শ্রমিক-নেতাদের জুলুমবাজি।
রাজ্য সরকার দু’টি বিষয়েই যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল। সেই অনুযায়ী ধান-চাল সংগ্রহে নতুন বস্তা কিনতে এক রকম বাধ্য করিয়েই চটকলগুলির বরাত বাড়ানোর কৌশল নেওয়া হল বলে জানিয়েছেন এক কর্তা। সেই সঙ্গে বস্ত্র দফতরের নিয়ন্ত্রণ থেকে চটকলগুলিকে শিল্প দফতরের অধীনে এনে শ্রমিক-নেতাদের জুলুমবাজি বন্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy