Advertisement
E-Paper

গোরক্ষপুর ঠেকাতে ভাঁড়ার মেলাচ্ছে রাজ্য

টাকার জোগান থাকা সত্ত্বেও ‘শিশু সাথী’র মতো প্রকল্পে বিল না-মেটানোর কারণে বেসরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচার বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।

সোমা মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৭ ০৩:৫১

গোরক্ষপুরের শিশু মৃত্যুর ঘটনার পরে রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালেও ওষুধ-অক্সিজেনের স্টক মেলানো শুরু হয়েছে। আর তাতেই নজরে এসেছে, এ রাজ্যেও বিভিন্ন হাসপাতালে ভাঁড়ার শূন্য হওয়ার এমন পরিস্থিতি একাধিক বার তৈরি হয়েছে। বড় কোনও দুর্ঘটনা ঘটেনি বলে বিষয়টি সামনে আসেনি।

কিন্তু গোরক্ষপুরের ঘটনার পরে স্বাস্থ্যকর্তারা বাধ্য হয়েই নড়ে বসেছেন। সরবরাহকারী বিভিন্ন সংস্থাকে সতর্ক করা হয়েছে— কোনও পরিস্থিতিতেই যেন সরবরাহ বন্ধ না-হয়। বন্ধ হলে বরাবরের মতো তাদের কালো তালিকাভুক্ত করার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: পরীক্ষা ছাড়াই ছাড়পত্র পাচ্ছে বিদেশি ওষুধ

কিন্তু দিনের পর দিন বকেয়া থাকা টাকা না পেলে সরবরাহ নিশ্চিত করাটাও সমস্যা হয়ে ওঠে বলে দাবি সংস্থাগুলির। টাকার জোগান থাকা সত্ত্বেও ‘শিশু সাথী’র মতো প্রকল্পে বিল না-মেটানোর কারণে বেসরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচার বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।

রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমরা জরুরি বৈঠক করেছি। সমস্ত হাসপাতালকে সজাগ থাকতে বলা হয়েছে। সময় থাকতে সব কিছু আনিয়ে রাখা হচ্ছে। কোনও অসুবিধা হবে না, এ’টুকু নিশ্চিত করতে পারি।’’

কিন্তু এই সতর্কতা তো গোরক্ষপুরের ঘটনার পরে। সাধারণ ভাবে ওষুধ-অক্সিজেনের ভাঁড়ার নিয়ে কতটা তৈরি থাকে সরকারি হাসপাতাল? স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে খবর, গত তিন মাসে রাজ্যের একাধিক সরকারি হাসপাতাল থেকে ভাঁড়ার ফুরোনোর অভিযোগ স্বাস্থ্য দফতরে জমা হয়েছে। জেলার ৪টি হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে অক্সিজেন ফুরিয়ে যাওয়ার খবর এসেছে। অস্ত্রোপচারের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহ না-হওয়ায় অস্ত্রোপচার আটকে থেকেছে দুটি জেলা হাসপাতালে। খাস কলকাতার একটি মেডিক্যাল কলেজে ক্যানসারের ওষুধ ফুরিয়ে যাওয়ায় আতান্তরে পড়েছেন রোগীরা। ওষুধ না-পেয়ে রোগী মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। প্রাথমিক ভাবে স্বাস্থ্যকর্তারা খোঁজ নিয়ে দেখেছেন, এর পিছনে রয়েছে মূলত দু’টি কারণ। প্রথমত, টাকা বাকি থাকার কারণে বিভিন্ন সংস্থা সরবরাহে টালবাহানা করে। দ্বিতীয়ত, বহু হাসপাতাল সময় থাকতে ওষুধপত্র ‘অর্ডার’ দেয় না। একেবারে শেষ মুহূর্তে তড়িঘড়ি তারা চেয়ে পাঠায়।

এসএসকেএম হাসপাতালের এক শিক্ষক-চিকিৎসক বলেন, ‘‘ওষুধ ফুরিয়ে গেলে নিয়মের মারপ্যাঁচ এড়াতে আমরা মৌখিক ভাবে ওষুধ কিনে আনতে বলি। কিন্তু ভর্তি থাকা রোগীর অক্সিজেনে টান পড়লে কী করা যাবে!’’ তাঁর কথায়, দফতরের কর্তারা সজাগ না-হলে গোরক্ষপুরের মতো ঘটনা এখানেও ঘটতে পারে।

ওষুধ-অক্সিজেন সরবরাহকারী একাধিক সংস্থা আবার টাকা পেতে হয়রানির অভিযোগ তুলছেন। একটি সংস্থার কর্ণধারের অভিযোগ, ‘‘টাকা পেতে জুতো ক্ষয়ে যায়। কখনও ঘুষও দিতে হয়।’’

স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য অবশ্য বলেন, ‘‘এখন তো সবই অনলাইনে হয়। পাওনার ফাইল কার কাছে রয়েছে, সরবরাহকারী সংস্থা তা সহজেই জেনে নিতে পারে। বকেয়া পেতে ঘুষ দিতে হওয়ার কথা নয়।’’

ভুক্তভোগীদের একাংশ অবশ্য মনে করেন, মন্ত্রীর এই বক্তব্য আসলে কাগজে-কলমে। বাস্তবে এর প্রতিফলন কমই হয়।

State Government Oxygen Medicines Hospital Gorakhpur tragedy গোরক্ষপুর শিশু সাথী
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy