Advertisement
E-Paper

৩২ হাজারের ৩৬০টি নিয়োগে অনিয়ম, তাকেই বলা হচ্ছে বড় দুর্নীতি! প্রাথমিক শিক্ষক মামলায় হাই কোর্টে দাবি করল রাজ্য

২০২৩ সালে তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে ৪২৫০০ জন শিক্ষকের মধ্যে চাকরিচ্যুত হন প্রশিক্ষণহীন ৩২ হাজার শিক্ষক। প্রাক্তন বিচারপতির রায় ছিল, চাকরি বাতিল হলেও ওই শিক্ষকেরা স্কুলে যাবেন।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২৫ ১৯:২৫

—প্রতীকী চিত্র।

প্রাথমিক স্কুলগুলিতে ৩২ হাজার শিক্ষক নিয়োগে কোনওপ্রকার দুর্নীতি হয়নি। কলকাতা হাই কোর্টে এমনই সওয়াল করল রাজ্য সরকার। রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত বলেন, ‘‘৩২০০০ নিয়োগে কোনও দুর্নীতি হয়নি। শুধুমাত্র ৩৬০টি নিয়োগে অনিয়মের প্রমাণ মিলেছে।’’

২০২৩ সালের ১২ মে হাই কোর্টের তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে ৪২৫০০ জন শিক্ষকের মধ্যে চাকরিচ্যুত হন প্রশিক্ষণহীন ৩২ হাজার শিক্ষক। প্রাক্তন বিচারপতির রায় ছিল, চাকরি বাতিল হলেও ওই শিক্ষকেরা স্কুলে যাবেন। তিন মাসের মধ্যে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে রাজ্যকে। সেখানে যোগ্য এবং উত্তীর্ণদের চাকরি বহাল থাকবে। সিঙ্গল বেঞ্চের ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে যায় পর্ষদ। তৎকালীন বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ সিঙ্গল বেঞ্চের চাকরি বাতিল সংক্রান্ত রায়ের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করে। তবে একই সঙ্গে ওই ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ মতো নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া পর্ষদকে শুরু করতে হবে। হাই কোর্টের ওই দুই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য এবং পর্ষদ। সেখানে আবেদন জানান চাকরিহারাদের একাংশ।

মঙ্গলবার ওই সংক্রান্ত মামলায় রাজ্যের যুক্তি, সামান্য অংশে কিছু পদ্ধতিগত ত্রুটি ধরা পড়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ সেটা নিজেরাই সংশোধন করেছে। তাই এ জন্য গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়াকে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ বলা ঠিক নয়। এজি দত্তের সওয়াল, ‘‘সিবিআই তদন্তে দুর্নীতির কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কেবলমাত্র কিছু প্রিন্টিং বা ডেটা প্রসেসিং সংক্রান্ত ত্রুটি ধরা পড়েছে। কারণ, এস বসু রায় অ্যান্ড কোম্পানি কোনও নিয়োগ সংস্থা নয়। তারা শুধুমাত্র ডেটা প্রসেসিংয়ের কাজ করেছে। পরীক্ষার্থীদের নম্বর দিয়েছেন পরীক্ষকেরা। কোম্পানি সেই ডেটা প্রিন্ট করেছে মাত্র।’’

রাজ্যের তরফে আদালতে এ-ও জানানো হয়, মেধাতালিকা প্রকাশেও কোনও অনিয়ম হয়নি। ২০১৬ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগপ্রক্রিয়া সংশোধিত আইনের অধীনে পরিচালিত হয়েছিল। সেই আইন অনুযায়ী চূড়ান্ত মেধাতালিকা প্রকাশ করে পর্ষদ। তার পরে জেলা প্রাথমিক স্কুল কাউন্সিল পর্ষদের দেওয়া তালিকা অনুযায়ী জেলার ভিত্তিতে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে।

এই প্রেক্ষিতে আদালত প্রশ্ন তোলে, তা-হলে ৯৬ জন প্রশিক্ষিত প্রার্থীর চাকরি বাতিল করতে হল কেন? রাজ্য জবাব দেয়, ওই ৯৬ জনকে পর্ষদের তরফে কোনও সুপারিশ করা হয়নি। সেই কারণেই তাদের চাকরি বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু এই নিয়োগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ‘বিরাট দুর্নীতি’ বলে সামনে আনা হচ্ছে। রাজ্যের আরও দাবি, পর্ষদ নিজেই অনিয়ম ধরেছে এবং সংশোধন করেছে। ফলে ৩২ হাজার চাকরির গোটাটা বাতিলের নির্দেশ অযৌক্তিক। এই মামলায় পর্ষদের বক্তব্য, ২৬৪ জন প্রশিক্ষিত টেট উত্তীর্ণ প্রার্থীর মার্কশিটে কিছু ত্রুটি ধরা পড়েছিল। পরে তা সংশোধন করা হয়। মঙ্গলবার এই মামলার শুনানি শেষ হয়নি। আগামী সপ্তাহে পরবর্তী শুনানি।

Primary Recruitment Case Calcutta High Court West Bengal government
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy