৩ বছর ৩ মাস ১৯ দিন পর বাড়ি ফিরেছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। জামিনে ছাড়া পাওয়ার শর্তপূরণ হয়েছে এসএসসি দুর্নীতি মামলায় ধৃত রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীর। দক্ষিণ কলকাতার যে এলাকায় তাঁর বাড়ি, সেই নাকতলায় ইতিমধ্যে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) জন্য এনুমারেশন ফর্ম বিলি শুরু হয়ে গিয়েছে। পার্থ কবে পাবেন ওই ফর্ম?
প্রাক্তন মন্ত্রী তথা একদা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ টালিগঞ্জ বিধানসভা এবং যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের বাসিন্দা। নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, ৭২ বছরের পার্থের ভোটার তালিকায় ক্রমিক সংখ্যা ৯২০। নাকতলা শিশুভারতী স্কুলে তিনি ভোট দেন। ওই এলাকার বুথ লেভেল অফিসার বা বিএলও সূত্রে জানা যাচ্ছে, এখনও পার্থের বাড়িতে এনুমারেশন ফর্ম দেওয়া হয়নি। সংশ্লিষ্ট বিএলও-র কথায়, ‘‘এখনও পর্যন্ত ওঁর বাড়ি যাওয়া হয়নি। ক্রমিক নম্বর ধরে এ পর্যন্ত ৭৫০ জনকে ফর্ম বিলি করেছি।’’ পার্থের ক্রমিক নম্বর জানার পরে বিএলও জানাচ্ছেন, তাঁর বাড়ি যেতে যেতে শুক্রবার হয়ে যাবে। ওই বিএলও বলেন, ‘‘বুথের সব ফর্মই আমার কাছে এসে গিয়েছে। ফর্ম আসার পরে আমাদের নিজস্ব কিছু কাজ থাকে। সেগুলি মিটিয়ে শুক্রবার বিকেল নাগাদ ৯২০ নম্বর সিরিয়ালের ফর্ম দিতে যেতে পারব।’’
মঙ্গলবার বাড়ি ফেরা ইস্তক খুব বেশি কথা বলেননি পার্থ। বাড়িতে অমুগামীদের ভিড় দেখা গিয়েছে। তাঁদের দেখে চোখে জল আসে পার্থের, নীলের উপর সাদা ফুলছাপ ফতুয়া এবং লুঙ্গি পরিহিত সাসপেন্ডেড তৃণমূলনেতা পোষ্য ‘চোকো’কে আদর করতে দেখা গিয়েছে। তাঁর ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে খবর, বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে নির্দল বিধায়ক হিসাবে যোগদান করে বক্তৃতা করতে চান তিনি। পার্থের নিজের কথায়, ‘‘আমি বেহালা পশ্চিমের (বিধানসভা) মানুষের কাছে দায়বদ্ধ। যাঁরা আমাকে সৎমানুষ মনে করেন, পর পর পাঁচ বার নির্বাচনে জিতিয়েছেন, আমি তাঁদের কাছেই বিচার চাইতে যাব।’’
২০২২ সালে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডির তল্লাশিতে প্রচুর অর্থ উদ্ধার হয় তৎকালীন মন্ত্রী পার্থ ও তাঁর বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে। ঘটনাক্রমে ইডির হাতে গ্রেফতার হন অর্পিতা। পরে পার্থকেও গ্রেফতার করেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকেরা। নিয়োগ দুর্নীতিতে সিবিআই তদন্তভার নেওয়ার পর তারা পার্থকে গ্রেফতার করে।
আরও পড়ুন:
তার পর প্রায় সাড়ে তিন বছর প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে ছিলেন পার্থ। প্রথমে ইডির মামলায় সুপ্রিম কোর্টে জামিন পান তিনি। পরে অন্য মামলাগুলিতে নিম্ন আদালতে থেকেও তাঁর জামিন মঞ্জুর হয়। শেষে গত সেপ্টেম্বরে সিবিআইয়ের মামলাতেও জামিন পান রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী।