Advertisement
E-Paper

‘সত্যের জয় হবে’! জেলমুক্ত হয়ে প্রথম ‘আনুষ্ঠানিক বিবৃতি’ পার্থের, ‘সৎ মানুষ’ মনে করা বেহালা পশ্চিমের কাছে চাইবেন ‘বিচার’

জেলমুক্তির নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল সোমবার। সেইমতো মঙ্গলবার দুপুরে মুক্তি পান পার্থ চট্টোপাধ্যায়। দুপুর ২টো ২০ নাগাদ বাইপাসের ধারের হাসপাতাল থেকে হুইলচেয়ারে চেপে বাইরে বেরিয়ে আসেন তিনি।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২৫ ১৬:৫৯
প্রিয় পোষ্যের সঙ্গে পার্থ চট্টোপাধ্যায়। মঙ্গলবার বিকেলে নাকতলার বাড়িতে।

প্রিয় পোষ্যের সঙ্গে পার্থ চট্টোপাধ্যায়। মঙ্গলবার বিকেলে নাকতলার বাড়িতে। ছবি: অমিত রায়।

জেলমুক্ত হওয়ার পর প্রথম বার মুখ খুললেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়ে জানালেন, আগামী দিনে সত্যের জয় হবে। একই সঙ্গে ওই বিবৃতিতে বিধায়ক পার্থ নিজের বিধানসভার কেন্দ্রের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেছেন, “আমি বেহালা পশ্চিমের মানুষের কাছে দায়বদ্ধ। যাঁরা আমাকে সৎ মানুষ মনে করে পর পর পাঁচ বার নির্বাচনে জিতিয়েছেন, আমি তাঁদের কাছেই বিচার চাইতে যাব।” প্রসঙ্গত, পার্থ বেহালা পশ্চিম কেন্দ্রের পাঁচ বারের বিধায়ক। ২০০১ সাল থেকে ওই কেন্দ্রে টানা জয়ী হয়ে আসছেন তিনি। বিবৃতির শুরুতেই পার্থ বলেন, “আইনের প্রতি আস্থাশীল ছিলাম। প্রাথমিক পর্যায়ে সেই সত‍্যের জয় হয়েছে। আগামী দিনে সত‍্যের জয় হবে।”

জেলমুক্তির নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল সোমবার। সেইমতো মঙ্গলবার দুপুরে মুক্তি পান পার্থ। দুপুর ২টো ২০ নাগাদ বাইপাসের ধারের হাসপাতাল থেকে হুইলচেয়ারে চেপে বাইরে বেরিয়ে আসেন তিনি। তিনি বেরিয়ে আসতেই হাসপাতাল চত্বরে আগে থেকে ভিড় করা অনুগামীরা স্লোগান তোলেন ‘পার্থদা জিন্দাবাদ’। এই সব দৃশ্য দেখে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী। কেঁদে ফেলেন তিনি। তবে হাসপাতালে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে কিছু বলেননি তিনি। অসম্মতিসূচক ঘাড় নেড়ে বুঝিয়ে দেন, তিনি কোনও উত্তর দিতে চান না।

নীলের উপর সাদা ফুলছাপ পাঞ্জাবি পরে বাইরে বেরোন পার্থ। তাঁর মুখে ছিল নীলরঙা মাস্ক। আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল গাড়ি। চালকের পাশের আসনে বসে নাকতলার বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন পার্থ। গাড়ির সঙ্গেই ছুটতে থাকেন পার্থ-অনুগামীরা। ভিতরে বসে হাত জোড় করে নমস্কার জানাতে দেখাতে যায় তাঁকে। ভিড় কাটিয়ে নাকতলার বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেয় পার্থের গাড়ি। পার্থকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যেতে সকাল থেকেই তাঁর বহু অনুগামী বাইক নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন। পার্থের গাড়ির পিছনে বাইক নিয়ে নাকতলায় যান তাঁরা।

বরণ করে পার্থকে বাড়িতে নিয়ে যান তাঁর আত্মীয়েরা। অন্যদের সাহায্যে পায়ে হেঁটেই বাড়িতে ঢোকেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী। পার্থকে বরণ করেন তাঁর ভাইয়ের স্ত্রী। উপস্থিত ছিলেন পার্থের ভাই এবং তাঁর কন্যা। পার্থ বাড়িতে ঢোকার পর সদর দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। দীর্ঘ দিন পর বাড়ি ফিরে নিকটাত্মীয়দের দেখে আবেগতাড়িত হয়ে কেঁদে ফেলেন পার্থ। তাঁকে সান্ত্বনা দেন ভাইয়ের মেয়ে। বাড়ির ভিতরে ঢুকেই মামা, প্রয়াত গীতিকার শিবদাস বন্দ্যোপাধ্যায়কে স্মরণ করেন পার্থ। বাড়ির সামনেও ‘পার্থদা জিন্দাবাদ’ বলে স্লোগান দেন অনুগামীরা। কবে বেহালায় পা রাখছেন, অনুগামীদের তরফ থেকে জানতে চাওয়া হয়।

তিন বছর তিন মাস ১৯ দিন পর নিজের বাড়িতে ফিরলেন পার্থ। নিয়োগ মামলায় ২০২২ সালের ২৩ জুলাই কলকাতার নাকতলার বাড়ি থেকে পার্থকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট কয়েক মাস আগেই বলে দিয়েছিল যে, সিবিআইয়ের মামলায় বিচারপর্ব শুরু হলেই পার্থ, এসএসসির তৎকালীন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য ও উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিংহের শর্তাধীন জামিন মঞ্জুর করা যাবে। ১৪ নভেম্বরের মধ্যে প্রথম পর্যায়ের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করে চূড়ান্ত জামিন মঞ্জুর করার নির্দেশও দেয় শীর্ষ আদালত। সেইমতো সোমবার ওই মামলায় অষ্টম সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ পর্ব শেষ হয়। তার পর আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক পার্থকে জেলমুক্ত করার নির্দেশ দেন। তার পর আদালতের এই সংক্রান্ত নথি পৌঁছোয় প্রেসিডেন্সি জেল কর্তৃপক্ষের কাছে। সেখান থেকে নথি যায় হাসপাতালে।

West Bengal Recruitment Case SSC Recruitment Case
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy