Advertisement
E-Paper

বেঁচে থাকার শংসাপত্র জমার ডিজিটাল প্রকল্পে নেই রাজ্য

মধ্যমগ্রামে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে মঞ্জুশ্রীদেবীর পরিবার জানতে পারে, যত সমস্যাই হোক না কেন, পেনশনগ্রাহককে হাজির হতেই হবে। মঞ্জুশ্রীদেবীর কথায়, ‘‘দুই পেনশনের ক্ষেত্রে দু’রকম পদ্ধতি কেন হবে? চোখে অপারেশন হয়েছে। অসুস্থ শরীরে এত দৌড়ঝাঁপ করব কী করে?’’

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:১৫

রাজ্য সরকারের অনুমোদিত স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষিকা মঞ্জুশ্রী বসু। বয়স ৭৯ বছর। মঞ্জুশ্রীদেবী দু’টি পেনশন পান— প্রয়াত প্রাক্তন রেলকর্মী স্বামীর পারিবারিক পেনশন এবং প্রাক্তন শিক্ষিকা হিসেবে নিজস্ব পেনশন। উভয় ক্ষেত্রেই বেঁচে থাকার শংসাপত্র দাখিল করা বাধ্যতামূলক। ব্যাঙ্কের ভিড় এড়াতে বাড়ির কাছেই ডিজিটাল মাধ্যমে শংসাপত্র দাখিল করতে যান তিনি। কেন্দ্রীয় সরকারের ডিজিটাল পরিষেবা ‘জীবন প্রমাণ’ ব্যবহার করে মিনিট দশেকের মধ্যে পারিবারিক পেনশনের শংসাপত্র জমা দেন। কিন্তু নিজের পেনশনের জন্য শংসাপত্র দিতে গেলে সংশ্লিষ্ট পরিষেবাপ্রদানকারী সংস্থা মঞ্জুশ্রীদেবীকে জানায়, রাজ্য সরকার ওই ডিজিটাল মাধ্যমে যুক্ত না থাকায় সশরীরে ব্যাঙ্কে যেতে হবে তাঁকে।

মধ্যমগ্রামে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে মঞ্জুশ্রীদেবীর পরিবার জানতে পারে, যত সমস্যাই হোক না কেন, পেনশনগ্রাহককে হাজির হতেই হবে। মঞ্জুশ্রীদেবীর কথায়, ‘‘দুই পেনশনের ক্ষেত্রে দু’রকম পদ্ধতি কেন হবে? চোখে অপারেশন হয়েছে। অসুস্থ শরীরে এত দৌড়ঝাঁপ করব কী করে?’’ প্রসঙ্গত, চোখের চিকিৎসার জন্য আপাতত মধ্যমগ্রাম ছেড়ে তিনি থাকছেন দক্ষিণ কলকাতার কসবায়।

মঞ্জুশ্রীদেবীর মতো সমস্যায় রাজ্য সরকারের পেনশনপ্রাপকদের অনেকেরই। অধিকাংশেরই বাড়ির কাছে ব্যাঙ্ক নয়। ফলে অনেক ক্ষেত্রেই সন্তান বা আর কাউকে সঙ্গী করে ব্যাঙ্কে যেতে হয় তাঁদের। অশক্ত শরীরে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। তাঁদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকারের পেনশনগ্রাহকেরা আঙুলের ছোঁয়ায় সহজেই বেঁচে থাকার শংসাপত্র দাখিল করতে পারছেন। অথচ ই-গভর্ন্যান্সে এগিয়ে থাকার দাবি করলেও রাজ্য এই পরিষেবা দিচ্ছে না। প্রসঙ্গত, বিহার, তামিলনাড়ু, ওড়িশা, কেরল, অন্ধ্রপ্রদেশ –সহ বেশ কিছু রাজ্যে এই প্রকল্পে যুক্ত হয়েছে।

রাজ্য অর্থ দফতরের আধিকারিকদের একাংশের ব্যাখ্যা, এই ডিজিটাল প্রকল্প শুরুর আগে আলোচনায় মাত্র কয়েকটি জায়গায় এই পরিষেবা চালুর কথা বলেছিল কেন্দ্র। রাজ্য তখন জানায়, কয়েকটি জায়গায় এই ব্যবস্থা চালু করলে তা বিশেষ কাজে আসবে না।

প্রশাসনের অন্দরের খবর, বিষয়টি নিয়ে এখন ভাবনাচিন্তা চলছে। রাজ্য প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘‘প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কবে থেকে সংযুক্তি হবে, তা এখনই বলা যাবে না। তবে বেঁচে থাকার শংসাপত্রই শেষ কথা নয়। কারণ, কোনও পেনশনভোগী যে বর্তমানে কোনও পেশায় যুক্ত নন, সেই শংসাপত্রও দিতে হচ্ছে। সেই কাজ অনলাইনে হচ্ছে না। তাই গোটা বিষয়টি বিবেচনার স্তরে রয়েছে।’’

কেন্দ্রীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট ‘জীবন প্রমাণ’ ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মাসের প্রথম দিন থেকে এ যাবৎ ৩০.১৬ লক্ষ কেন্দ্রীয় পেনশনপ্রাপক ডিজিটাল মাধ্যমে শংসাপত্র দিয়েছেন।

Pension Certificate Digital Projest West Bengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy