Advertisement
E-Paper

কলকাতার জমি-বাড়ি-ফ্ল্যাট ক্রেতাদের জন্য আংশিক স্বস্তি, নয়া ‘সার্কল রেট’ কার্যকর করেও ছাড় দিল রাজ্য

‘সার্কল রেট’ মূলত সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে সরকারের নির্ধারিত ন্যূনতম মূল্য। এর উপর ভিত্তি করেই রেজিস্ট্রেশন ফি এবং স্ট্যাম্প ডিউটি ধার্য হয়।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৯:০২
West bengal government has given a big relief to the city\\\\\\\'s home buyers by giving a rebate on the circle rate

—প্রতীকী চিত্র।

কলকাতার ফ্ল্যাট, জমি বা বাড়ির ক্রেতাদের জন্য বড় স্বস্তি। সম্প্রতি একাধিক এলাকায় ‘সার্কল রেট’ হঠাৎ প্রায় ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছিল। এর ফলে ফ্ল্যাট, বাড়ি বা জমি কেনাবেচার সময় ক্রেতাদের উপর অতিরিক্ত স্ট্যাম্প ডিউটি ও রেজিস্ট্রেশন ফি-এর বোঝা চাপছিল। দীর্ঘ দিন ধরে আবাসন ব্যবসায়ী সংগঠনগুলির আপত্তির পর অবশেষে রাজ্য সরকার সেই রেট আংশিক সংশোধন করল। সার্কল রেট মূলত সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে সরকারের নির্ধারিত ন্যূনতম মূল্য। এর উপর ভিত্তি করেই রেজিস্ট্রেশন ফি এবং স্ট্যাম্প ডিউটি ধার্য হয়। নিবন্ধন ও স্ট্যাম্প রাজস্ব অধি দফতর সূত্রে খবর, প্রোমোটার সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে একাধিক বার জানানো হয়েছিল যে, হঠাৎ বৃদ্ধি করা এই সার্কল রেট বাজারদরের তুলনায় অনেক বেশি হয়ে যাচ্ছে। ফলে ক্রেতাদের বাস্তব বাজারমূল্যের চেয়েও বেশি রেজিস্ট্রেশন খরচ গুনতে হচ্ছে।

বনহুগলি (বিটি রোড) এলাকায় আগে এই রেট ৮৮ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছিল, এখন তা কমিয়ে ৫৩% করা হল। সল্টলেক লাগোয়া মহিষবাথানের ক্ষেত্রে সার্কল রেট ৮৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫৪ শতাংশ করা হয়েছে। দক্ষিণ বাইপাস এলাকায় আগে সার্কল রেট বৃদ্ধি করে ৮৩ শতাংশ করা হয়েছিল, এখন তা সংশোধন করে ৫২ শতাংশে আনা হয়েছে। কলকাতা পুরসভার সংযুক্ত এলাকা বেহালা সরশুনা এবং নিউ টাউনে সার্কল রেট নতুন ভাবে তৈরি করা হবে। তবে টালিগঞ্জের সিরিটি, মহাবীরতলা ও বিএল সাহা রোডের মতো কিছু এলাকায় এখনও কোনও পরিবর্তন আনা হয়নি। রাজ্যের অর্থ দফতরের একটি সূত্র জানাচ্ছে, অ্যাক্সোলিউট হিসেবে সবচেয়ে বড় হ্রাস দেখা গিয়েছে মহিষবথানের ক্ষেত্রে। সেখানে প্রতি বর্গফুটে আগের তুলনায় ৩,৪৬৩ টাকা কমানো হয়েছে। এর পর তপসিয়ায় ২,৮১৪ টাকা, বনহুগলি বিটি রোড এলাকায় ২,৪৭৫ টাকা এবং বেহালা সরশুনায় ২,০০১ টাকা হ্রাস করা হয়েছে। ফলে ক্রেতাদের সরাসরি সাশ্রয় হবে।

নতুন ছাড় ঘোষণার পর দক্ষিণ কলকাতা এলাকার এক প্রোমোটিং সংস্থার কর্ণধার বলেন, “সার্কল রেট যদি বাজারদরের কাছাকাছি থাকে, তবে তা সবার জন্য ভাল হবে। নির্মাণমূল্যের দিক থেকে সাধারণত বাজারদর ও সরকারি রেটের মধ্যে বেশি ফারাক থাকে না। কিন্তু জমির দামে কিছু এলাকায় ইনস্পেক্টর জেনারেল অফ রেজিস্ট্রেশন (আইজিআর)-এর রেট বাজারদরের তুলনায় ঠিক করা হয়েছিল অনেক বেশি। আমরা সেই বিষয়টি নিয়েও কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করব।” পশ্চিমবঙ্গের রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী সংগঠনগুলির দাবি মেনে সার্কল রেটে এই আংশিক ছাড় ফ্ল্যাট, জমি বা গৃহক্রেতাদের বড় স্বস্তি দিয়েছে। বিশেষত মধ্যবিত্ত ক্রেতাদের ক্ষেত্রে যাঁরা গৃহঋণের পাশাপাশি স্ট্যাম্প ডিউটি ও রেজিস্ট্রেশনের অতিরিক্ত খরচে বিপদে পড়ছিলেন, তাঁদের জন্য এটি উল্লেখযোগ্য স্বস্তির খবর বলেই মনে করছেন আবাসন ব্যবসায়ীরা। তবে যে সব এলাকায় এখনও সংশোধন হয়নি, সেখানে যে তাঁদের দাবি বহাল থাকছে, সে কথা জানাতে ভুলছেন না আবাসন ব্যবসায়ীরা।

তবে নয়া এই নিয়মে ছাড় ঘোষণার পরেও, রাজ্য সরকারের রাজস্ব আদায় যে কয়েক গুণ বেড়ে যাবে সে বিষয়ে নিশ্চিত নবান্নের আধিকারিকদের একাংশ। অর্থ দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘ফ্ল্যাট বা জমি কেনাবেচার সময় ক্রেতাদের উপর অতিরিক্ত স্ট্যাম্প ডিউটি ও রেজিস্ট্রেশন ফি ঘোষণার পর থেকে অর্থ দফতরের কাছে নানা মহল থেকে অনুরোধ আসছিল। আমরা বিষয়টি বিবেচনা করে দেখার আশ্বাস দিয়েছিলাম। বিষয়টি নিয়ে আলাপ আলোচনার পর আপাতত কয়েকটি জায়গা বাদ রেখে অনেক ক্ষেত্রেই ছাড়ের ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার।’’

Circle Rate West Bengal government
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy