Advertisement
E-Paper

রঞ্জিতের কোর্টে হাজিরা নিয়ে নীতি-সঙ্কটে রাজ্য

রাজ্যের আশঙ্কা, রঞ্জিতকে রাঁচীর আদালতে হাজির করানোর পরে আদালত তাঁকে পুলিশ বা বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়ে দিলে মাওবাদীদের আত্মসমর্পণ ও পুনর্বাসন নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নীতিই ধাক্কা খাবে।

সুরবেক বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৭ ০৩:৫৮
মাওবাদী নেতা রঞ্জিত পাল। —ফাইল চিত্র।

মাওবাদী নেতা রঞ্জিত পাল। —ফাইল চিত্র।

রাজ্য পুলিশের ডিজি-কে একটি চিঠি লিখেছে সিবিআই। আর তাতেই আত্মসমর্পণকারী মাওবাদী নেতা রঞ্জিত পালকে নিয়ে আতান্তরে পড়ে গিয়েছে রাজ্য সরকার। কারণ, ওই চিঠিতে ঝাড়খণ্ডের এক সাংসদ খুনের মামলায় প্রধান অভিযুক্ত রঞ্জিতকে রাঁচী আদালতে হাজির করাতে অনুরোধ জানিয়েছে সিবিআই।

রাজ্যের আশঙ্কা, রঞ্জিতকে রাঁচীর আদালতে হাজির করানোর পরে আদালত তাঁকে পুলিশ বা বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়ে দিলে মাওবাদীদের আত্মসমর্পণ ও পুনর্বাসন নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নীতিই ধাক্কা খাবে। রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরের একটি সূত্রের খবর, রঞ্জিতের অসুস্থতা এবং ঝাড়খণ্ডে গেলে মাওবাদীদের থেকেই তাঁর নিরাপত্তার যথেষ্ট ঝুঁকি রয়েছে— এ সব কথা জানিয়ে আপাতত ওই হাজিরা ঠেকিয়ে রাখার চেষ্টা চলছে। তা ছাড়া রঞ্জিতের স্ত্রী সন্তানসম্ভবা। সেটাও সিবিআই-কে জানানো হবে বলে নবান্নের খবর।

২০০৭ সালের ৪ মার্চ গালুডির বাকুরিয়া গ্রামে জামশেদপুরের সাংসদ সুনীল মাহাতো খুনের মামলায় রঞ্জিত প্রধান অভিযুক্ত। ২০০৯ সালে রাঁচীর এসডিজেএম আদালতে সিবিআই রঞ্জিতকে প্রধান অভিযুক্ত দেখিয়ে চার্জশিট পেশ করে। রঞ্জিত তখন ফেরার ছিলেন। ঘটনার পরে ১০ বছর কেটে গেলেও সেই মামলার বিচার আজও শুরু করা যায়নি।

জামশেদপুরে সিবিআইয়ের দুর্নীতি দমন শাখা ওই মামলার তদন্ত করছে। সিবিআইয়ের কৌঁসুলি রাকেশ প্রসাদ বলেন, ‘‘আমরা জেনেছি, ওই মামলার প্রধান অভিযুক্ত রঞ্জিত পাল পশ্চিমবঙ্গে আত্মসমর্পণ করেছেন। রাঁচীর সিবিআই আদালতে তাঁকে হাজির করানো গেলে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে।’’ রাকেশ জানান, সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশকে সে-কথাই জানানো হয়েছে।

স্ত্রী ঝর্না ওরফে অনিতার সঙ্গে গত ২৫ জানুয়ারি রাজ্য পুলিশের সদর দফতর ভবানী ভবনে আত্মসমর্পণ করেন রঞ্জিত। রাজ্য সরকারের নীতি অনুযায়ী তাঁকে স্পেশ্যাল হোমগার্ডের চাকরি দেওয়া হয়েছে। ১২ জুন তিনি আনুষ্ঠানিক ভাবে ওই চাকরিতে যোগ দিয়েছেন। তবে এখনও কাজে যোগ দেননি। রয়েছেন পুলিশি ঘেরাটোপে।

ছোট-বড় মিলিয়ে রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ৩২৮ জন মাওবাদী আত্মসমর্পণ করেছেন। তাঁরা আর্থিক সুযোগ-সুবিধেও পাচ্ছেন। তাঁদের কাউকেই পুলিশ বা জেল হেফাজতে রাখা হয়নি। রঞ্জিতকে রাঁচী আদালতে হাজির করানোর সমস্যা কোথায়?

নবান্ন সূত্রের খবর, মাওবাদীদের বিরুদ্ধে মামলা বন্ধ হয়ে যাবে বলে রাজ্যের আত্মসমর্পণ নীতিতে বলা নেই। তবে মামলা চালানোর ক্ষেত্রে ‘ধীরে চলো’ নীতি নিচ্ছে রাজ্য। খুন বা অন্য কোনও ঘৃণ্য অপরাধের মামলা বাদ দিয়ে অন্য কিছু মামলা প্রত্যাহারও করে নেওয়া হচ্ছে। এমনকী পড়শি রাজ্যে মামলা থাকলে তাদেরও একই কথা জানিয়ে সমাধানসূত্র বার করার চেষ্টা করছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।

সিবিআইয়ের কৌঁসুলি রাকেশ প্রসাদ বলেন, ‘‘কেন্দ্র ও রাজ্যের মাওবাদী আত্মসমর্পণ নীতি এক নয়।’’ আর রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘সিবিআই আদালত যদি রঞ্জিতকে হাজির করাতে বলে, আমাদের কিছু করার নেই।’’

Ranjit Pal Maoist রঞ্জিত পাল court State Government
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy