Advertisement
E-Paper

মহরমের সঙ্গেই বিসর্জন, কোর্টে জোর ধাক্কা খেল রাজ্য

বিসর্জন ও ধর্মীয় মিছিল কোন রাস্তা দিয়ে যাবে— তা নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণ করবে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। বিসর্জনের শোভাযাত্রা ও ধর্মীয় মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের সংযত আচরণ করার নির্দেশও দিয়েছে আদালত।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:১৮

একাদশীর দিন, অর্থাৎ ১ অক্টোবর মহরমের সঙ্গে প্রতিমা বিসর্জনও দেওয়া যাবে বলে জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারের জারি করা নিষেধাজ্ঞার উপরে স্থগিতাদেশ জারি করে অস্থায়ী প্রধান বিচারপতি রাকেশ তিওয়ারি ও বিচারপতি হরিশ টন্ডনের ডিভিশন বেঞ্চ বৃহস্পতিবার বলেছে, দশমী থেকে ৪ অক্টোবর প্রতিদিন রাত ১২টা পর্যন্ত বিসর্জন হবে।

রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্তকে আদালতের নির্দেশ, বিভিন্ন পুলিশ কমিশনারেট ও বিভিন্ন জেলার প্রশাসনকে বিসর্জন সংক্রান্ত নির্দেশ জানিয়ে দিতে হবে। বিসর্জন ও ধর্মীয় মিছিল কোন রাস্তা দিয়ে যাবে— তা নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণ করবে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। বিসর্জনের শোভাযাত্রা ও ধর্মীয় মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের সংযত আচরণ করার নির্দেশও দিয়েছে আদালত।

বিচারপতিরা জানান, তাঁদের এই নির্দেশ ‘অন্তর্বর্তিকালীন’। পুজোর ছুটির পরে পরবর্তী শুনানি হবে। তার আগে রাজ্য ও আবেদনকারীদের আদালতে হলফনামা দিতে হবে। ডিভিশন বেঞ্চ রায় দেওয়ার পরে, এজি তার উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে আবেদন জানান। বেঞ্চ তা খারিজ করে দেয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য।

আরও পড়ুন:বিনয়কে দেখলেই দণ্ড দিন: ফতোয়া জারি গুরুঙ্গের

মহরমের দিন বিসর্জন বন্ধ থাকবে বলে রাজ্য যে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল, তার বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা হয়। আবেদনকারীদের আইনজীবী স্মরজিৎ রায়চৌধুরী, পার্থ ঘোষেরা দাবি করেন, এই নিষেধাজ্ঞা ধর্মাচরণ নিয়ে সংবিধানের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। এ দিন রায় ঘোষণার আগে এজি জানান, তিনি আরও বলতে চান। বিচারপতিরা সেই অনুমতি দিলে কিশোরবাবু বলেন, একই সঙ্গে শোভাযাত্রা ও মহরমের মিছিল বেরোলে সম্প্রীতি বিঘ্নিত হতে পারে। তাই বিসর্জনের দিনক্ষণ নিয়ন্ত্রণ করতে চায় রাজ্য। প্রশাসনের খেয়ালখুশিতে এই বিজ্ঞপ্তি জারি হয়নি। তাঁর কথায়, ‘‘বিসর্জনের জন্য প্রশাসন চার দিন সময় দিয়েছে। মাঝে এক দিন বন্ধ থাকলে কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।’’

এর পর বিচারপতি তিওয়ারি উদাহরণ দিয়ে বলেন, কেন তাঁরা বলছেন, প্রশাসন নিয়ন্ত্রণের বদলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে বসে আছে এবং কেন তাঁরা একে ‘সরকারের খেয়ালখুশি’ বলে মনে করছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ধরা যাক, একটি জায়গায় এক দল লোক জড়ো হয়েছে। তার মানেই গোলমাল বাধবে? তবু ধরা যাক, সেই লোকেরা গোলমাল পাকানোর মতলব করল। পুলিশ প্রথমেই গুলি না চালিয়ে তাদের সরে যেতে বলবে। কাজ না হলে জলকামান দাগবে। পরে মৃদু লাঠি চালাবে। তাতেও জনতা না সরলে আরও জোরে লাঠি চালাবে। শেষ অস্ত্র গুলি ছোড়া। বিসর্জন বন্ধের বিজ্ঞপ্তি জারি করে পুলিশ পয়লাই গুলি ছুড়ে বসেছে। একে নিয়ন্ত্রণ করা বলে না, নিষেধাজ্ঞা বলে।’’

এজি প্রশ্ন করেন, ‘‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় এমন বিজ্ঞপ্তি জারি হতে পারে না? আইনশৃঙ্খলা দেখা কি রাজ্যের বিষয় নয়? আদালত কি প্রশাসনের কাজে হস্তক্ষেপ করতে পারে?’’

জবাবে দুই বিচারপতিই বলেন, ‘‘সেই পুরনো যুক্তিতে ফিরতে হয়। রাজ্য তখনই তা করতে পারে যখন আশঙ্কার কোনও ভিত্তি থাকে। এমন আশঙ্কার সপক্ষে কোনও তথ্যপ্রমাণ রয়েছে? এ সব না জানাতে পারলে সরকারের বিজ্ঞপ্তিকে ‘নিষেধাজ্ঞাই’ বলতে হবে। যা কি না সংবিধানের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘনের সামিল।’’

Idol Immersion Durga Puja 2017 High Court Mamata Banerjee Muharram 2017 State Government কলকাতা হাইকোর্ট মহরম
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy