Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

রাজ্য সময় বাড়াবে না, ভাসান নিয়ে কাটল না জট

হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নিশীথা মাত্রের ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) এবং মামলার আবেদনকারীকে এ দিন জানায়, সব পক্ষই দীর্ঘ সওয়াল করতে চাইছে। সেই সওয়াল শোনার মতো অঢেল সময় নেই। অবসর নেওয়ার আগে সোমবারই ছিল বিচারপতি মাত্রের কাজের শেষ দিন।

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৪:৫৭
Share: Save:

যতটুকু সময় বেড়েছে, সে তো বেড়েছেই। সেটা আরও একটু বাড়িয়ে ৩০ সেপ্টেম্বর, দশমীতে রাত দেড়টা পর্যন্ত প্রতিমা বিসর্জনের অনুমতি দেওয়া যায় কি না, রাজ্য সরকারকে সেই বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করতে বলেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু রাজ্য সোমবার জানায়, দশমীতে রাত ১০টার পরে বিসর্জনের অনুমতি দেওয়া যাবে না। ফলে এ দিনও ভাসান-মামলার ফয়সালা হয়নি।

হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নিশীথা মাত্রের ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) এবং মামলার আবেদনকারীকে এ দিন জানায়, সব পক্ষই দীর্ঘ সওয়াল করতে চাইছে। সেই সওয়াল শোনার মতো অঢেল সময় নেই। অবসর নেওয়ার আগে সোমবারই ছিল বিচারপতি মাত্রের কাজের শেষ দিন। তাই কাল, বুধবার ভাসান-মামলার পরবর্তী শুনানি হবে নতুন অস্থায়ী প্রধান বিচারপতি রাকেশ তিওয়ারির ডিভিশন বেঞ্চে। নিরঞ্জন নিয়ে মোট তিনটি জনস্বার্থ মামলা হয়েছে ডিভিশন বেঞ্চে।

আরও পড়ুন: স্বচ্ছতা নিয়ে চিঠি ঘিরে নয়া সংঘাত

হাইকোর্ট ১৫ সেপ্টেম্বর এজি-কে নির্দেশ দিয়েছিল, দশমীতে রাত দেড়টা পর্যন্ত ভাসানের অনুমতি দেওয়া যায় কি না, ১৮ সেপ্টেম্বর আদালতে তা জানাতে হবে। এজি এ দিন জানান, সেটা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। একাদশীতে বিসর্জন বন্ধ রাখা হয়েছে। কেননা সে-দিন রাজ্য জুড়ে অন্য সম্প্রদায়ের মিছিল বেরোবে।

ডিভিশন বেঞ্চের অন্য বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী বলেন, ‘‘কোনও পুজো কমিটির প্রতিমা যদি দশমীতে রাত সাড়ে ৯টা বা পৌনে ১০টায় নিরঞ্জনের জন্য লাইন দেয়, ১০টা বেজে গেলে কে সেই প্রতিমার নিরঞ্জন হবে না?’’

এজি জানান, যে-সব পুজো কমিটি প্রতিমা নিয়ে ১০টার মধ্যে বিসর্জনের ঘাটে পৌঁছে যাবে, তাদের ভাসান দিতে অসুবিধা হবে না। বিচারপতি চক্রবর্তী প্রশ্ন তোলেন, ‘‘সকলের পক্ষে শোভাযাত্রা নিয়ে ১০টার মধ্যে বিসর্জনের ঘাটে পৌঁছে যাওয়া সম্ভব হবে কি?’’

মামলার অন্যতম আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী স্মরজিৎ রায়চৌধুরী জানান, সরকার আদৌ এই ভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে না। যে-আশঙ্কায় সরকার এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, তা ভিত্তিহীন। কারণ, এর আগে যত বার দশমীতে অন্য ধর্মের মিছিল বেরিয়েছে, কখনওই সংঘাত বাধেনি। তা ছাড়া এটা শুধু কলকাতা বা লাগোয়া জেলার নয়, কোচবিহার থেকে সুন্দরবন পর্যন্ত এলাকার বাসিন্দাদের সমস্যা।

অন্য একটি জনস্বার্থ মামলার আবেদনকারীর আইনজীবী আদালতে প্রশ্ন তোলেন, রাজ্য সরকার কোন অধিকারে একাদশীতে পুরোপুরি বিসর্জন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিল?

তা শুনে বিচারপতি মাত্রে ওই আইনজীবীর কাছে জানতে চান, বিগত চার-পাঁচ বছরে দশমীর পরে প্রতিদিন প্রতিমা বিসর্জন হয়েছে কি না? বিসর্জনের নির্দিষ্ট দিন থাকে কি না? সওয়ালের মধ্যে আইনজীবী স্মরজিৎবাবু জানান, রাজ্য সরকারের এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা নাগরিকদের সংবিধান স্বীকৃত মৌলিক অধিকার (নিজধর্ম পালন) লঙ্ঘন করছে।

এজি জানান, আবেদনকারীরা যদি দীর্ঘ সওয়ালে যেতে চান, তা হলে তাঁরা আগে সওয়াল শেষ করুন। পরে তিনি তাঁর পাল্টা সওয়ালে প্রত্যেকের বক্তব্যের উত্তর দেবেন।

এজি-র বক্তব্য শুনে ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, সময়ের অভাবে এ দিন দীর্ঘ সওয়াল শোনা সম্ভব নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE