Advertisement
১১ মে ২০২৪
COVID-19

সব কোভিড হাসপাতালকে প্রস্তুতির নির্দেশ রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের

সোমবার রাজ্যের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতরের সচিব সৌমিত্র মোহন নতুন করে নির্দেশিকা জারি করেছেন।

রাজ্যে ফের বাড়ছে করোনার প্রকোপ।

রাজ্যে ফের বাড়ছে করোনার প্রকোপ। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২১ ০৫:৫১
Share: Save:

বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে রাজ্যে করোনা আক্রান্তের হার ঊর্ধ্বমুখী। আশঙ্কা, আগামী দিনে আক্রান্তের সংখ্যা আরও বেড়ে জরুরি পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। তার মোকাবিলায় কোভিড হাসপাতালগুলিকে এখন থেকেই তৈরি থাকার নির্দেশ দিল রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। সূত্রের খবর, কোথায় কী কারণে সংক্রমণ বাড়ছে সে বিষয়ে বিশদ আলোচনা করতে আজ, মঙ্গলবার সমস্ত জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্স করবে স্বাস্থ্য দফতর।

সোমবার রাজ্যের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতরের সচিব সৌমিত্র মোহন নতুন করে নির্দেশিকা জারি করেছেন। তা রাজ্যের সমস্ত মেডিক্যাল কলেজের সুপার, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের পাঠানো হয়েছে। নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, এর আগে যে হাসপাতালগুলিতে কোভিড আক্রান্তদের চিকিৎসা করা হচ্ছিল, তার সমস্ত যন্ত্রপাতি, মেডিক্যাল গ্যাস পাইপ লাইন সিস্টেম (এমজিপিএস) পরীক্ষামূলক ভাবে খতিয়ে দেখতে হবে। প্রয়োজনে জরুরি ভিত্তিতে মেরামত করতে হবে। পাশাপাশি অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহের বিষয়টিও দেখতে হবে। পিপিই, মাস্ক, গ্লাভস পর্যাপ্ত মজুত রাখতে হবে। সর্ব ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত সংখ্যক কর্মী আছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে।

একই সঙ্গে করোনা হাসপাতালে খাবার সরবরাহ, বায়োমেডিক্যাল বর্জ্য নিষ্কাশন, সাফাই কাজের সঙ্গে যে সব সংস্থা যুক্ত ছিল, তাদেরও সতর্ক করার কথা বলা হয়েছে।

রাজ্যের মুখ্য সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ও এ দিন সব জেলাশাসককের সঙ্গে এ নিয়ে বৈঠক করেন। প্রশাসন সূত্রের খবর, জেলায় যে সমস্ত হাসপাতালে কোভিড রোগীর চিকিৎসা হচ্ছিল, তাদের মধ্যে যেগুলি নন-কোভিড হয়ে গিয়েছে, তাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলে রাখার

নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব। যাতে জরুরি পরিস্থিতিতে শয্যা সঙ্কট তৈরি না হয়। অক্সিজেন সরবরাহ যাতে ঠিকঠাক থাকে। আর কয়েক দিন পরেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন শুরু। তার নিরিখেও করোনা সুরক্ষাতে জোর দিচ্ছে প্রশাসন। এক জেলা আধিকারিকের কথায়, ‘‘কোভিড বিধি মেনে ভোট কর্মীদের যাবতীয় সরঞ্জাম দেওয়ার উপরেও জোর দেওয়া হয়েছে।

ভোট প্রচার-সহ নির্বাচনের অন্যান্য বিষয়েও কোভিড বিধি মান্য করায় জোর দিতে বলা হয়েছে। আরটিপিসিআর পরীক্ষাও বাড়াতে বলা হয়েছে।’’

রাজ্য প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘লকডাউন অথবা কন্টেনমেন্ট জ়োন করা নিয়ে যে বিভ্রান্তি বিভিন্ন মহলে ছড়াচ্ছে, তা সম্পূর্ণ ভুল। এমন কোনও পরিকল্পনা এখনই সরকারের নেই।’’

তবে, রাজ্যে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা যে বাড়ছে, স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান থেকেই তা স্পষ্ট। গত ১ মার্চ যেখানে দৈনিক আক্রান্ত ১০০-র ঘরে ছিল, সেটাই শেষ কয়েক দিনে বেড়ে প্রায় ৪০০-র-ঘরে পৌঁছেছে। সোমবার রাজ্যে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩৬৮ জন। ১ মার্চ থেকে ২২ মার্চের মধ্যে সব থেকে বেশি আক্রান্ত ছিল ২১ মার্চ (৪২২ জন)। রাজ্যের কোভিড কেয়ার নেটওয়ার্কের উপদেষ্টা চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, ‘‘৪২২-এর থেকে সংখ্যা তো ১০০-তে নামেনি। কিছু মাত্র কম। দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যার ওঠানামা আগেও হয়েছে। তারপরে আচমকা জ্যামিতিক পদ্ধতিতে অনেকটা বেড়ে যাবে। মহারাষ্ট্রে তো আক্রান্তের সংখ্যা সব হিসেবকে ছাড়িয়ে গিয়েছে। সুতরাং এখন থেকেই অনেক বেশি মাত্রায় সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।’’

রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর রবিবারেও প্রতিষেধক দিয়ে চলেছে। ওই দিন ১৭ হাজার ১৭৭ জনকে প্রতিষেধক দেওয়া হয়। সোমবার রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত রাজ্যে ২৬৮৩টি কেন্দ্রে ১ লক্ষ ৬৩ হাজার ১৮৫ জন প্রতিষেধক নিয়েছেন। সব মিলিয়ে এ দিন পর্যন্ত রাজ্যে মোট ৩৪ লক্ষ ৪০ হাজার জন প্রতিষেধক নিয়েছেন।

করোনায় আক্রান্ত হয়ে এ দিনই উত্তরবঙ্গে মানস জোয়ারদার নামে কৃষি দফতরের এক কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। সোমবার রায়গঞ্জ মেডিক্যালের কোভিড ওয়ার্ডে তাঁর মৃত্যু হয়। ৫৬ বছর বয়সি মানসের বাড়ি রায়গঞ্জ শহরের অশোকপল্লি এলাকায়। উত্তর দিনাজপুরের উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক-৩ গৌতম মণ্ডল জানিয়েছেন, মৃতের সংস্পর্শে যাঁরা এসেছিলেন, তাঁরা করোনা সংক্রামিত হয়েছেন কী না, তা নিশ্চিত হতে তাঁদের লালারস পরীক্ষা করানোর অনুরোধ করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Health COVID-19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE