Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

মোদী-রাজ্যের চেয়েও আধারে এগিয়ে বাংলা

কেন্দ্রীয় সরকারের ‘ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথরিটি অব ইন্ডিয়া’-র ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালের আনুমানিক জনসংখ্যার তুলনায় ৯১.৭%-এর আধার কার্ড হয়ে গিয়েছে। ওয়েবসাইটে ১৫ অগস্ট পর্যন্ত দেওয়া তথ্যে দেখা যাচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গের পিছনে রয়েছে বিজেপি-শাসিত ঝাড়খণ্ড, গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ ও অসম।

দেবজিৎ ভট্টাচার্য
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:০৯
Share: Save:

আধার কার্ড তৈরিতে দেশের বিজেপি-শাসিত বেশ কিছু রাজ্যকে পিছনে ফেলে দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। এমনকী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য গুজরাতের চেয়েও এগিয়ে রয়েছে বাংলা!

কেন্দ্রীয় সরকারের ‘ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথরিটি অব ইন্ডিয়া’-র ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালের আনুমানিক জনসংখ্যার তুলনায় ৯১.৭%-এর আধার কার্ড হয়ে গিয়েছে। ওয়েবসাইটে ১৫ অগস্ট পর্যন্ত দেওয়া তথ্যে দেখা যাচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গের পিছনে রয়েছে বিজেপি-শাসিত ঝাড়খণ্ড, গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ ও অসম। আধার তৈরির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে দিল্লি (২০১৭ সালের আনুমানিক জনসংখ্যার তুলনায় ১১৫.৮%) শেষে অসম (৬.৮%)। আর ১০০% ছুঁয়ে ফেলেছে গোয়া, তেলঙ্গানা ও হিমাচলপ্রদেশ।

আরও পড়ুন: প্রচার পেতে মত্ত নেতারা

নবান্নের দাবি, আরও বেশি মানুষের আধার কার্ড হয়েছে এ রাজ্যে। গত অগস্টের গোড়ায় রাজ্যের স্বরাষ্ট্র ও পার্বত্য বিষয়ক দফতর যে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে, তাতে বলা হয়েছে, ২০১৭-র আনুমানিক জনসংখ্যার সাপেক্ষে ১৮ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সের ১০৫% মানুষ আধার কার্ড তৈরি করিয়ে ফেলেছেন। ৫ থেকে ১৮ বছর বয়সিদের ৭৩% এবং ৫ বছরের নীচে ৫৪% শিশুর আধার কার্ড তৈরির কাজ সম্পূর্ণ। শুধু হিসেব দাখিলই নয়, কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা পেতে আধার কার্ড করা যে জরুরি এবং যত শীঘ্র সম্ভব তা করে নেওয়া উচিত— তা-ও মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে ওই বিজ্ঞপ্তিতে। এর জন্য সরকারের সমস্ত দফতর যে উপযুক্ত সাহায্য করবে, তা-ও জানানো হয়েছে স্বরাষ্ট্র দফতরের আবেদনে। আধার তৈরি করাতে গিয়ে যাতে অফিস কামাই না হয় তার জন্য নবান্নের পাঁচ তলায় ক্যাম্প অফিসও করেছে সরকার।

নবান্নের অন্দরে গুঞ্জন, মোদী সরকার যেখানে দেশের প্রত্যেক নাগরিকের আধার কার্ড করাতে মরিয়া, সেখানে বিজেপিরই দখলে থাকা রাজ্যগুলি কেন পিছিয়ে পড়েছে, সেটা তাদের দেখা উচিত।

আবার এই প্রশ্নও উঠেছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই যেখানে আধার নিয়ে মোদী সরকারের নীতির সমালোচনা করছেন, কটাক্ষ করছেন, ‘জন্ম থেকে মৃত্যু সবেতেই আধার কার্ড চাইছে বিজেপি সরকার’— সে ক্ষেত্রে আধার করানোর ব্যাপারে নবান্নের এই বাড়তি তৎপরতা কেন?

নবান্নের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা পেতে বহু ক্ষেত্রে আধার আবশ্যিক করা হয়েছে। এই অবস্থায় নাগরিকেরা কোনও ভাবে বঞ্চিত হন, মুখ্যমন্ত্রী সেটা চান না। কিন্তু যে ভাবে আধারকে বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে, সেটার সমালোচনা করছেন তিনি।’’

জীবনের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে আধারকে বাধ্যতামূলক করে তোলায় ব্যক্তিপরিসরের অধিকার ঘিরে জলঘোলা চলছে অনেক দিন ধরেই। একাধিক বিরোধী দল এর বিরুদ্ধে মুখর হলেও বিজেপি আমল দেয়নি। সম্প্রতি ব্যক্তিগতপরিসর নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ধাক্কা খাওয়ার পরে আধার কার্ড তৈরির প্রক্রিয়া কিছুটা হলেও মন্থর হয়েছে— জানাচ্ছেন নবান্নের এক কর্তা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE