Advertisement
E-Paper

আলো-খাদ্য ও শৌচাগার, তিন ‘নেই’-এ বিক্ষোভ

চেন্নাই থেকে ফেরা শ্রমিকদের অভিযোগ, ট্রেন ছাড়ার পর থেকে কামরায় আলো-পাখা নেই।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০২০ ০৪:৪৬
নেই আলো-পাখা বা খাবারও। দেশের নানা প্রান্ত থেকে যে সব শ্রমিক স্পেশাল রাজ্যের জেলায় জেলায় যাচ্ছে, তার অনেকগুলিতেই এমন সব ছবি। ছবি: রয়টার্স।

নেই আলো-পাখা বা খাবারও। দেশের নানা প্রান্ত থেকে যে সব শ্রমিক স্পেশাল রাজ্যের জেলায় জেলায় যাচ্ছে, তার অনেকগুলিতেই এমন সব ছবি। ছবি: রয়টার্স।

কখন নিজের বাড়ির চৌহদ্দিতে পৌঁছনো যাবে, ঠিক নেই। ভিড় কামরায় পারস্পরিক দূরত্বের বালাই নেই। নেই আলো-পাখা বা খাবারও। দেশের নানা প্রান্ত থেকে যে সব শ্রমিক স্পেশাল রাজ্যের জেলায় জেলায় যাচ্ছে, তার অনেকগুলিতেই এমন সব ছবি। বেশির ভাগই ঘরে ফেরার প্রবল টানে এ সব সয়ে যাচ্ছেন।

কিন্তু চেন্নাই থেকে আগরতলা যাচ্ছিল যে বিশেষ ট্রেনটি, তার যাত্রী শ্রমিকেরা আর পারলেন না। বিক্ষোভে ফেটে পড়লেন। একই ভাবে ক্ষোভ দেখালেন কেরল থেকে বর্ধমানে ফেরা যাত্রীদের একাংশও।

চেন্নাই থেকে ফেরা শ্রমিকদের অভিযোগ, ট্রেন ছাড়ার পর থেকে কামরায় আলো-পাখা নেই। খাবার যা দেওয়া হয়েছে, মুখে তোলার অযোগ্য। এই পরিস্থিতিতে ট্রেন শুক্রবার সকাল ১১টা নাগাদ বোলপুর স্টেশনে পৌঁছয়। সেখানেই ১২০০ যাত্রীকে খাবার ও পানীয় দেওয়া হয়। তত ক্ষণে যাত্রাপথের যাবতীয় দুর্ভোগের অভিযোগ তুলে তাঁরা রেলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে শামিল হন। রেল অবশ্য বিক্ষোভের কথা অস্বীকার করেছে। তবে রামপুরহাট স্টেশনে ট্রেনটির যান্ত্রিক ত্রুটি সারানো হয়েছে বলেও তাদের তরফে জানানো হয়।

আরও পড়ুন: ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলবে নতুন রাস্তাটা, ঠেকাতে মরিয়া ড্রাগন

আরও পড়ুন: আর্থিক বৃদ্ধি গত ১১ বছরে সর্বনিম্ন

একই ছবি দেখা যায় শুক্রবার সকালে বর্ধমান স্টেশনেও। কেরল থেকে আসা শ্রমিকদের এখান থেকে বাসে তুলে বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে এই কাজে ঘণ্টা চারেক লাগছে। সেই সময়ে যাত্রীরা দেখেন, স্টেশনের শৌচাগারের বেহাল দশা। সেখানে নামা দক্ষিণ ২৪ পরগনার দুই মহিলা বলেন, ‘‘কেরল থেকে আসছি। ওড়িশা থেকে কোনও খাবার পাইনি। চিঁড়ে খেয়ে কাটাতে হয়েছে। বর্ধমানে নামার পরে বিস্কুট দিয়েছে। কিন্তু শৌচাগারে পর্যন্ত যেতে পারিনি।’’ এই পরিস্থিতিতে যাত্রীদের একাংশ বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। পরে পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক বিজয় ভারতী বলেন, ‘‘শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে সুবিধা-অসুবিধার কথা জেনেছি।’’

পরিস্থিতি অন্যত্রও ভাল কিছু নয়, দাবি ঘরে ফেরা শ্রমিকদের। উত্তরপ্রদেশের গৌতমবুদ্ধ নগর স্টেশন থেকে ট্রেনে চেপেছেন কোচবিহারের ফিরদৌস, সহিদুলরা। ১৮ ঘণ্টার উপরে ট্রেনে কাটিয়ে বৃহস্পতিবার রাত ১০টায় নিউ কোচবিহারে পৌঁছনোর পরে ভেঙে পড়েন ফিরদৌস। বলেন, ‘‘মালদহে আসার পরে খাবার পেলাম। তার আগে কী ভাবে যে কাটিয়েছি, আমরাই জানি!’’ একই কথা জানালেন মুম্বই থেকে এনজেপি-তে আসা

ট্রেনের যাত্রীরাও। যদিও উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক শুভানন চন্দ বলেন, ‘‘নির্ধারিত সূচি থেকে দেরিতে চলায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ট্রেনে খাবার, জল নিয়ে কিছু সমস্যা ছিল। বৃহস্পতিবার থেকে সমস্যা মিটে গিয়েছে। তা-ও অভিযোগ যখন উঠেছে, আমরা খতিয়ে দেখছি।’’

রেলের খামখেয়ালিপনাও কম নেই। বৃহস্পতিবার পুরুলিয়ার আদ্রা থেকে পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুরের দিকে যাচ্ছিল একটি বিশেষ ট্রেন। বাঁকুড়া স্টেশনে ঢুকতেই কিছু যাত্রী চেন টেনে ট্রেন থামান। বাঁকুড়ার স্টেশন ম্যানেজার শান্তব্রত বিশ্বাস জানান, ওই ট্রেনটির বাঁকুড়ার দিকে আসার কথাই ছিল না। ট্রেন থামিয়ে প্রায় ৫৮ জন স্টেশনে নামেন। রেলের তরফে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে তাঁদের বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনের হাতে তুলে দেওয়া হয়। বাঁকুড়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) রাজু মিশ্র বলেন, ‘‘৫৮ জনের মধ্যে বেশির ভাগই বাঁকুড়ার।’’

প্রায় সব ক্ষেত্রেই স্টেশনে ঘরে ফেরাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তার পরে হচ্ছে লালারস পরীক্ষা। এরই মধ্যে বসিরহাটে ফেরা ৬ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে শুক্রবার। তাঁদের দত্তপুকুর কোভিড হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মুম্বই-ফেরত এক ব্যক্তি অন্য একটি বাড়িতে আশ্রয় নিতে গেলে উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

West Bengal Lockdown Coronavirus Lockdown Migrant workers
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy