E-Paper

জেলায় কাজ মিলবে, আশ্বাস আমিরকে, পাল্টা প্রশ্নও

যদিও আমিরকে জেলায় কাজের ব্যবস্থার আশ্বাস দিয়েছে রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিক উন্নয়ন পর্ষদ। এই আশ্বাসে নিজে কিছু স্বস্তি পেয়েছেন, মানছেন আমির। এখন অন্য পরিযায়ী শ্রমিকদেরও জেলাতেই কাজ চান আমির ও তাঁর পরিজনেরা।

অভিজিৎ সাহা

শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০২৫ ০৭:৪৫

—প্রতীকী চিত্র।

রাজস্থান থেকে বিমানে কলকাতা হয়ে বাংলাদেশে ‘পুশব্যাক’। সেখান থেকে নানা ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে ঘরে ফেরা। অভিযোগ, এই আড়াই মাসের যাত্রার মধ্যে জুটেছে জেলের ভাত, বেল্ট-লাঠির আঘাত। সেই অভিজ্ঞতার পরেও বাড়ি ফেরার তিন দিনের মধ্যেই ফের কাজের সন্ধানে ভিন্ রাজ্যে যাওয়ার ভাবনাচিন্তা শুরু করেছেন মালদহের কালিয়াচকের জালালপুরের পরিযায়ী শ্রমিক আমির শেখ।

যদিও আমিরকে জেলায় কাজের ব্যবস্থার আশ্বাস দিয়েছে রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিক উন্নয়ন পর্ষদ। এই আশ্বাসে নিজে কিছু স্বস্তি পেয়েছেন, মানছেন আমির। এখন অন্য পরিযায়ী শ্রমিকদেরও জেলাতেই কাজ চান আমির ও তাঁর পরিজনেরা। আমিরের মতো গত এক মাসে রাজস্থান, ওড়িশা, হরিয়ানা, দিল্লিতে হেনস্থার মুখে পড়ার অভিযোগ তুলে বাড়ি ফিরেছেন মালদহের বহু পরিযায়ী শ্রমিক। তবে রুজির টানে ফের ভিন্ রাজ্যে পাড়ি দিয়েছেন তাঁদের সিংহভাগই। সব পরিযায়ী শ্রমিকের জেলায় কাজের দাবিতে সরব হয়েছে বিরোধীরাও।

বাংলাদেশে ‘পুশব্যাক’ হওয়া বছর চব্বিশের আমির শেখ বৃহস্পতিবার রাতে ঘরে ফেরেন। রাজস্থানের পুলিশ, বিএসএফের মারে এখনও খুঁড়িয়ে হাঁটতে হচ্ছে বলে দাবি তাঁর। তবু তিনি বলেন, “ভাবছি, সুস্থ হলে ফের ভিন্ রাজ্যে যাব। বাবাও পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করেন। তবে বাইরের পরিস্থিতি ভাল না। তাই অনেকে ভিন্ রাজ্যে কাজে যেতে নিষেধ করছেন। কিন্তু কাজ না করলে খাব কী?” রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিক উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা রাজ্যসভার তৃণমূলের সাংসদ সামিরুল ইসলাম অবশ্য বলেন, “আমিরকে বাইরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। জেলাতেই তাঁর কাজের বন্দোবস্ত করা হবে।”

দক্ষিণ মালদহের কংগ্রেস সাংসদ ইশা খান চৌধুরীর অভিযোগ, “ভাতা, অনুদান দিয়ে রাজ্যের তৃণমূল সরকার ভোট-রাজনীতি করছে। কিন্তু মানুষকে কর্মসংস্থানের কোনও দিশা দেখাতে পারছে না। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারও কর্মসংস্থান দিতে ব্যর্থ।”

এই প্রসঙ্গে উত্তর মালদহের বিজেপির সাংসদ খগেন মুর্মুর দাবি, “বিজেপিশাসিত রাজ্যে কাজ আছে, তাই বাংলার মানুষ যাচ্ছেন। বাংলায় তৃণমূলের সরকার কোনও কাজ দিতে পারছে না।” সামিরুলের পাল্টা দাবি, ‘‘কেন্দ্র একশো দিনের কাজ বন্ধ রেখেছে। তবু বিকল্প কর্মসংস্থান দিচ্ছে রাজ্য।”

আমিরের বাবা জিয়েম শেখও পরিযায়ী শ্রমিক। কাকা মহম্মদ আজমাউল শেখ এক সময়ে ভিন্ রাজ্যে কাজ করলেও, এখন এলাকায় জিনিস ফেরি করেন। জিয়েম বলেন, “ঘর ছেড়ে ভিন্ রাজ্যে যেতে কখনও ইচ্ছে না। জেলায় কাজের ব্যবস্থা হলে তো ভালই হয়।” আমিরের পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়াও। তিনি বলেন, “ওঁর পরিবারকে সব রকম ভাবে সহায়তা করা হবে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bengali Migrant Worker harassment West Bengal government kaliachak

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy