বুধবার রাজ্যপালের কাছে গিয়ে সন্ত্রাসের ভূরি ভূরি অভিযোগ পাওয়ার কথা বলেছিলেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার অমরেন্দ্রকুমার সিংহ। কিন্তু তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই পরিসংখ্যান পেশ করে কমিশন দাবি করল, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর্ব নির্বিঘ্নেই চলছে। শাসক দলের পাশাপাশি বিরোধীরাও সমান তালে মনোনয়ন জমা দিচ্ছে। কমিশনের এ-ও দাবি, এ বারের পরিস্থিতি ২০১৩ সালের থেকে ভাল।
যদিও এ দিনই কমিশন এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলেছে, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় বাধাদানের যে অভিযোগ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল করেছে, অনেক ক্ষেত্রেই তার সারবত্তা রয়েছে মনে করা হচ্ছে। সে জন্য গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতির মনোনয়ন বিডিও অফিসের পাশাপাশি মহকুমাশাসকের অফিসেও জমা দেওয়া যাবে। এ ব্যাপারে জেলাশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, মনোনয়নের স্থানগুলিতে ১৪৪ ধারা জারি করা নিয়ে নতুন করে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ জমা নেওয়ার জন্য একটি ‘কমপ্লেন সেল’ গঠন করেছে কমিশন।
এ দিন জেলার পর্যবেক্ষকদের নিয়ে বৈঠক করেন কমিশনার। সেখানে বলা হয়েছে, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিনে পর্যবেক্ষকেরা জেলায় থাকবেন।
বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক করার কথা ছিল কমিশনারেরই। কিন্তু তিনি ব্যস্ত থাকায় আসেন কমিশনের যুগ্মসচিব শান্তনু মুখোপাধ্যায়। এ পর্যন্ত জমা পড়া মনোনয়নের তালিকা দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘পরিসংখ্যান বলছে গত বারের থেকে পরিস্থিতি ভাল। দু’-একদিনের মধ্যে পরিস্থিতি আরও ভাল হবে বলে কমিশনার আশাবাদী।’’
তবে কমিশন ‘সব ঠিক আছে’ বললেও বিরোধীদের অভিযোগে ভাটা পড়েনি। একের পর এক জেলা থেকে বিরোধীদের উপরে শাসক দলের কর্মীদের চড়াও হওয়ার খবরও আসছে। এ দিনই কমিশনারের কাছে গিয়ে বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল এবং রাজ্যের দুই মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী ও রবীন্দ্রনাথ ঘোষের নামে নালিশ জানিয়েছে বিজেপি। দলীয় নেতাদের অভিযোগ, বিরোধী প্রার্থীদের হুমকি দিচ্ছেন অনুব্রত। পূর্ব মেদিনীপুরের যে সব পঞ্চায়েত বিরোধী শূন্য হবে, তাদের হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদ পাঁচ কোটি টাকা পুরস্কার দেবে বলে ঘোষণা করেছেন শুভেন্দু। আর বিরোধীদের মনোনয়ন জমা দিতে সাহায্য করলে পুলিশকে চরম পরিণতির মুখে পড়তে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ।
কমিশনের দফতরের সামনে এ দিন বিক্ষোভ দেখান ফরওয়ার্ড ব্লক কর্মীরা। আজ, শুক্রবার সেখানে ধর্না দেবে বামফ্রন্ট ও তার বাইরের মোট ১৭টি দল। বিরোধীদের অভিযোগ স্খালনে আসরে নেমেছে তৃণমূলও। এ দিন প্রতিনিধি দল নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে যান মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পরে তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএম রাজ্যপালের কাছে মিথ্যা তথ্য দিচ্ছে। আমরা তাঁকে প্রকৃত তথ্য দিয়েছি। কাউকে যে মনোনয়ন জমা দিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে না, তা-ও জানিয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy