Advertisement
E-Paper

দিদির দেখা চান গুরুঙ্গ

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সূত্র বলছে, দার্জিলিঙের পরিস্থিতি যে ভাবে মমতা মোকাবিলা করেছেন, বিনয়কে বসিয়ে তাঁকে দার্জিলিং-ছাড়া করেছেন, তাতে অনেকটাই কোণঠাসা গুরুঙ্গ।

জয়ন্ত ঘোষাল

শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:৪৭

প্রবল চাপের মুখে পাহাড়ের নেতা বিমল গুরুঙ্গ এখন কলকাতায় গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করতে চাইছেন। সেই বৈঠকে যদি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বিনয় তামাঙ্গ থাকেন, তাতেও গুরুঙ্গের আপত্তি নেই। সম্প্রতি গুরুঙ্গ তাঁর এক রাজনৈতিক দূত মারফত ওই বার্তা দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহকে। মমতা এ প্রস্তাবে এখনও রাজি হননি। রাজনাথকে এ ব্যাপারে মধ্যস্থতার অনুরোধ করেছেন গুরুঙ্গ।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সূত্র বলছে, দার্জিলিঙের পরিস্থিতি যে ভাবে মমতা মোকাবিলা করেছেন, বিনয়কে বসিয়ে তাঁকে দার্জিলিং-ছাড়া করেছেন, তাতে অনেকটাই কোণঠাসা গুরুঙ্গ। রাজ্যের বিরুদ্ধে দমনমূলক কাজ করার অভিযোগে মামলা করে সুপ্রিম কোর্টে হেরেও গিয়েছেন তিনি। এই অবস্থায় গুরুঙ্গের মতে আত্মসমর্পণই আপাতত একমাত্র পথ। এ ছাড়া, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের মতে, গুরুঙ্গের বিরুদ্ধে দুর্নীতির এত অভিযোগ আছে যে ওঁর পক্ষে চরম আক্রমণাত্মক হওয়া কিছুটা কঠিন।

তবে গুরুঙ্গের দলের নেতাদের মধ্যেই এই কৌশল নিয়ে মতপার্থক্য আছে। দলের একাংশের মত, পাহাড়ে এখনও গুরুঙ্গের প্রভাব আছে। গুরুঙ্গ যদি সোজা পাহাড়ে হাজির হয়ে গ্রেফতার হন, তাতে ফায়দা বেশি হতে পারে। গুরুঙ্গের বয়স এখন পঞ্চাশের কোঠায়। কাজেই এখন গ্রেফতার হলেও ভবিষ্যতে রাজনীতি করার সুযোগ থাকবে। কিন্তু গুরুঙ্গ নিজে আপাতত আত্মসমর্পণের কৌশল নিতে বেশি আগ্রহী বলেই সূত্রের খবর। তবে মুখ্যমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছ থেকে সাড়া না পেলে তিনি গ্রেফতার হওয়ার পথ ধরতেও পারেন বলে দলের ওই অংশের ইঙ্গিত।

গুরুঙ্গ অবশ্য কেন্দ্রকে এটা বোঝাতেও চেষ্টা করছেন যে, জিটিএ-র নির্বাচন না করে বারবার রাজ্য সরকারের নির্দেশে পরিষদের মেয়াদ বাড়ানো ‘অসাংবিধানিক’। ত্রিপাক্ষিক জিটিএ চুক্তিতে কেন্দ্রও ছিল। তাই চাইলে কেন্দ্র এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতেই পারে। কিন্তু রাজনাথ নিজে উদ্যোগী হতে রাজি নন। গুরুঙ্গ শিবিরের ধারণা, বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের চাপেই রাজনাথ দু’বার তাঁদের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করতে বাধ্য হয়েছিলেন। তিনি নিজে তা চাননি। সে কারণে গুরুঙ্গ ‘ক্ষুব্ধ’ও।

এখন গুরুঙ্গের প্রতিনিধিরা কেন্দ্রকে এটা বোঝানোরও চেষ্টা করছেন যে, এনডিএ থেকে সরে আসা দলের একাংশের সিদ্ধান্ত। গুরুঙ্গপন্থীরা এখনও এনডিএ-তেই। সে কারণে বিজেপি সভাপতিও চান, রাজনাথ এ বিষয়ে উদ্যোগী হয়ে গুরুঙ্গকে ফেরান। কারণ, বিনয়েরা এনডিএ ত্যাগ করায় ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে দার্জিলিঙে সবেধন আসনটি হারাতে হতে পারে।

তৃণমূল সূত্রও বলছে, গুরুঙ্গকে ফেরার সুযোগ দিয়ে লোকসভা নির্বাচনে এনডিএ-কে চাঙ্গা হতে দিয়ে লাভ কী? বিনয় কি গুরুঙ্গকে দলে ফেরত নিতে রাজি হবেন? মুখ্যমন্ত্রীই বা কেন গুরুঙ্গকে গুরুত্ব দেবেন? বিশেষত সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী মমতার সঙ্গে মিটমাট করে নেওয়ায় গুরুঙ্গের গুরুত্ব যখন কমেছে বলেই দলের মত। আর প্রশাসনের মতে, রাজ্য আইনবলেই একাধিক বার পরিষদের মেয়াদ ৬ মাস করে বাড়াতে পারে। ফলে অসাংবিধানিক কাজকর্মের অভিযোগ ভিত্তিহীন।

Bimal Gurung Mamata Banerjee মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy