Advertisement
০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

জেনারেল প্রভিডেন্ট ফান্ড-এর টাকা রাজ্যকে দিতে রাজি নয় সিএজি

সরকারি কর্মীদের জেনারেল প্রভিডেন্ট ফান্ড (জিপিএফ)-এর টাকা এখন গচ্ছিত থাকে অ্যাকাউন্ট্যান্ট জেনারেল (এজি)-এর কাছে।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:২৫
Share: Save:

এজি-বেঙ্গলে গচ্ছিত সরকারি কর্মীদের জিপিএফের টাকা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে চেয়েছিল নবান্ন। তাতে আপত্তি জানিয়েছে কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল অব ইন্ডিয়া (সিএজি)। ডেপুটি কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল অনিতা পট্টনায়ক গত ২৮ মার্চ নবান্নে পাঠানো চিঠিতে লেখেন, ‘এখনই কর্মচারীদের জিপিএফের টাকা রাজ্যের হাতে দেওয়ার প্রয়োজন নেই।’ রাজ্য সরকার সিএজি-র এই সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ। নবান্নের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘কেন আমাদের হাতে জিপিএফের নিয়ন্ত্রণ দেওয়া হবে না, তা জানাতে হবে। সে জন্য আবার চিঠি লেখা হচ্ছে।’

সরকারি কর্মীদের জেনারেল প্রভিডেন্ট ফান্ড (জিপিএফ)-এর টাকা এখন গচ্ছিত থাকে অ্যাকাউন্ট্যান্ট জেনারেল (এজি)-এর কাছে। রাজ্যের এজি-বেঙ্গল অফিসই বছর শেষের সুদ কষে তা কর্মীদের তহবিলে পাঠায়। আগামী ১ এপ্রিল থেকে জিপিএফের নিয়ন্ত্রণ নিতে চেয়ে দেশের কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি) রাজীব মেহর্ষিকে চিঠি দিয়েছিলেন মুখ্যসচিব মলয় দে। তাতে মুখ্যসচিবের দাবি, কর্মীদের জিপিএফ তহবিল আরও সুরক্ষিত এবং সুচারু ভাবে চালাতে রাজ্য এই ভার নিতে চায়। ২০১৮-১৯ সালের বাজেট অনুযায়ী জিপিএফ তহবিলে ৩৬৩৫ কোটি ৭৬ লক্ষ টাকা জমা পড়বে। এর মধ্যে গ্রুপ-ডি কর্মীদের জন্য থাকবে ৩৫৩ কোটি। এজি গ্রুপ-ডি কর্মীদের তহবিল দেখে না। তাই রাজ্যের হাতে জিপিএফ এলে নবান্নের কাছে বাড়তি সাড়ে তিন হাজার কোটির ব্যবস্থা হবে।

এক অর্থ কর্তার কথায়, ‘‘কর্মীদের জিপিএফের টাকা ‘পাবলিক ফান্ডে’ জমা থাকে। তা সরকার চাইলেও হাত দিতে পারে না। তা ছাড়া বিহার, ঝাড়খণ্ড, রাজস্থান, গুজরাতে জিপিএফ নিজেদের হাতে নিয়েছে রাজ্য। কেন্দ্র অনুমতি দিয়েছে। সম্পূর্ণ সুরক্ষিত এই ব্যবস্থা সেই কারণেই নিজেদের হাতে নিতে চায় রাজ্য।’’

সরকারি কর্মীদের সিংহভাগই অবশ্য রাজ্যের বদলে সিএজি-র কাছে তাঁদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা রাখতে আগ্রহী। তাঁদের একাংশের আশঙ্কা, বেতন কমিশন কবে চালু হবে কেউ জানে না, ডিএ-র টাকাও অর্ধেক বকেয়া। এমন অবস্থায় কর্মচারীদের শেষ ভরসা জিপিএফের টাকাও রাজ্য হাতে নিলে তা সুরক্ষিত থাকবে তো? তাঁদের একাংশের আরও সংশয়, কেন্দ্রীয় সরকার যেমন পেনশনের টাকা শেয়ার বাজারে খাটাচ্ছে, রাজ্যও সেই পথে হাঁটবে না তো?

সিএজি-কে লেখা মুখ্যসচিবের চিঠির বক্তব্যে অবশ্য এমন আশঙ্কার কোনও কারণ নেই। তাতে বলা হয়েছে, অর্থ দফতর ইন্টিগ্রেটেড ফিনান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এবং হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম নামে দুটি ওয়েব নির্ভর ব্যবস্থা তৈরি করেছে। এর মাধ্যমে সহজেই কর্মচারিদের জিপিএফের টাকা রক্ষণাবেক্ষণ করা যাবে।

অর্থ দফতরের দাবি, রাজ্যের হাতে জিপিএফ এলে কোনও কর্মচারীর কাজে যোগ দেওয়ার দিনই অ্যাকাউন্ট খুলে যাবে। এখনকার মতো এক বছর অপেক্ষা করতে হবে না। এখন কর্মীরা জিপিএফের বিস্তারিত কিছুই জানতে পারেন না। রাজ্যের হাতে এলে যে কোনও সময় কর্মীরা অনলাইনে সঞ্চিত টাকার পরিমাণ, নমিনির নাম বদল, ঋণ বা অগ্রিম তোলার আবেদন জানাতে পারবেন। প্রয়োজনে কোনও ভুল দেখলে অনলাইনে শুধরে নিতে পারবেন। দ্রুত ঋণ পাবেন, জালিয়াতির সুযোগ কার্যত থাকবে না এবং বছর শেষে কত টাকা সুদ জমা হল তা সহজেই জেনে নিতে পারবেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Controller And Auditor General of India CAG GPF Nabanna State Goverment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy