Advertisement
E-Paper

ছায়ায় বসে জিরোচ্ছে না তো, বাঘের খোঁজ খালপাড়ে

বনকর্তারা মনে করছেন, প্রচণ্ড গরমে কাহিল হয়ে পড়লে নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে খালপাড় বেছে নিতে পারে বাঘটি। পরপর কয়েকটি ঘটনা তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৮ ০১:০৩
নজরবন্দি: জঙ্গলের মধ্যে খালের এই অংশেই নাকি বাঘ বিশ্রাম নিচ্ছিল।  চাঁদড়া রেঞ্জের বাগঘোরার জঙ্গলের এই এলাকায় এখন বিশেষ নজর বন দফতরের। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল

নজরবন্দি: জঙ্গলের মধ্যে খালের এই অংশেই নাকি বাঘ বিশ্রাম নিচ্ছিল। চাঁদড়া রেঞ্জের বাগঘোরার জঙ্গলের এই এলাকায় এখন বিশেষ নজর বন দফতরের। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল

বনকর্মীদের সঙ্গে যেন কানামাছি খেলা খেলছে বাঘ! বেশিরভাগ সময়ে নাগালে আসছে না। কখনও সখনও এলেও ফস্কে বেরিয়ে যাচ্ছে। সব দিক দেখে এ বার জঙ্গলমহলের খালপাড়ে উঁকি মারা শুরু করেছেন বনকর্মীরা। বনকর্তাদের পরামর্শেই তাঁদের এই উঁকিঝুঁকি। বনকর্তারা মনে করছেন, প্রচণ্ড গরমে কাহিল হয়ে পড়লে নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে খালপাড় বেছে নিতে পারে বাঘটি। পরপর কয়েকটি ঘটনা তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছে।

মেদিনীপুরের ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহা মানছেন, “খালপাড়ে এসে বাঘ আশ্রয় নিতে পারে।’’ তাঁর কথায়, “বাগঘোরায় তো বাঘটা খালের সামনেই এসেছিল। একবার নয়, একাধিকবার। পড়ন্ত দুপুরে এসেছে। অর্থাৎ, কারণটা ছিল খানিক জিরিয়ে নেওয়াই।’’ রবীন্দ্রনাথবাবু জানান, সব দিক দেখেই খালপাড়গুলোয় নজরদারি বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সেই মতো নজরদারি শুরুও হয়েছে। বন দফতর সূত্রের খবর, কোথাও বাঘের ঘাপটি মেরে বসে থাকার খবর পেলেই সঙ্গে সঙ্গে সেখানে সুন্দরবন থেকে আসা দলটিকে (ট্র্যাঙ্কুলাইজেশন টিম) পাঠানো হবে। মেদিনীপুরের এক বনকর্তার কথায়, “গরমে পশুও কাহিল হয়ে পড়ে। বাঘ তার ব্যতিক্রম নয়। রোদের প্রবল তেজ থাকলে চোখ ধাঁধিয়ে দেয়। তখন আর সেই ফুরফুরে মেজাজ থাকে না। এ দিকে-সে দিকে যেতে ইচ্ছে করে না। বরং ঘাপটি মেরে এক জায়গায় বসে থাকতেই ভাল লাগে।’’ রবিবার নতুন করে কোথাও বাঘের পায়ের ছাপ মেলেনি বলেই বন দফতর সূত্রে খবর। কয়েকটি জায়গায় ঘুরে অবশ্য পায়ের ছাপের গতিবিধি বোঝার চেষ্টা করেছেন জঙ্গলের মধ্যে নখের আঁচড়ের দাগ রয়েছে কি না তা দেখার চেষ্টা করেছেন। মেদিনীপুরের বনকর্তারা মনে করছেন, বাঘটি এখন লালগড়ের জঙ্গলেই রয়েছে।

গত শুক্রবার অল্পের জন্য বাঘটা ফস্কে গিয়েছিল। মেদিনীপুর সদর ব্লকের চাঁদড়ার বাগঘোরার জঙ্গলে এক খালপাড়ের সামনে জাল ছিঁড়ে বেরিয়ে যায় বাঘবাবাজি। জঙ্গলে তিন আদিবাসী যুবক বাঘের হানায় জখমও হন। এই সময়ের মধ্যে বাঘ ধরতে কম চেষ্টা হয়নি জঙ্গলমহলে। শুরুতে ছাগলের, পরে শুয়োরের টোপ দেওয়া খাঁচা পাতা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে ড্রোন ওড়ানো হয়েছে। কিন্তু বাঘ ধরা পড়েনি। উল্টে বাঘ ধরতে গিয়ে বিশেষ গাড়িতে দমবন্ধ হয়ে দুই বনকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। বাগঘোরার আগে গোয়ালতোড়েও বাঘের হানায় এক ব্যক্তি জখম হয়েছেন বলে দাবি।

বাঘ ধরতে নতুন কোনও পরিকল্পনা? মেদিনীপুরের এক বনকর্তা বলেন, “আগাম পরিকল্পনা করে বাঘটাকে ধরা মুশকিল। অবস্থান জানা গেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে হবে। বাগঘোরায় তাই নেওয়া হয়েছিল। বাঘটা পালিয়ে যেতে পেরেছে, সেটা অন্য ব্যাপার।’’ সে দিন বন্দুক থেকে ঘুমপাড়ানি গুলি ছোঁড়া হল না? ওই বনকর্তার দাবি, “সেই সময়ই পাওয়া যায়নি।’’ তিনি মানছেন, “একটা বড় সুযোগ সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে। এখন পরবর্তী সুযোগের অপেক্ষায় থাকতে হবে।”

এই কানামাছি খেলার মাঝে কবে বাঘবন্দি হয়, তারই অপেক্ষায় জঙ্গলমহল।

Royal Bengal Tiger Forest Department
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy