Advertisement
E-Paper

কালিম্পঙের বৈঠকে ডাক নয় হরকাকে

কালিম্পংয়ের নেতাদের মধ্যে সব থেকে পরিচিত মুখ যাঁর, সেই হরকাবাহাদুর ছেত্রীই এখন তৃণমূল শিবিরের থেকে কিছুটা দূরে সরে গিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী যখন কালিম্পঙে যাচ্ছেন, হরকা তখন পারিবারিক কাজে কলকাতায়।

দেবাশিস চৌধুরী

শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৮ ০৪:০৮
হরকাবাহাদুর ছেত্রী। ফাইল চিত্র।

হরকাবাহাদুর ছেত্রী। ফাইল চিত্র।

গত বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি জন্ম হয়েছিল কালিম্পং জেলার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে বলেছিলেন, ‘‘আজ ভ্যালেন্টাইন্স ডে, ভালবাসার দিন, এ দিন আমরা কালিম্পং ডে পালন করলাম।’’ তার পরে এই প্রথম বার তিনি সেখানে যাচ্ছেন প্রশাসনিক বৈঠক করতে। কিন্তু সেই কালিম্পংয়ের নেতাদের মধ্যে সব থেকে পরিচিত মুখ যাঁর, সেই হরকাবাহাদুর ছেত্রীই এখন তৃণমূল শিবিরের থেকে কিছুটা দূরে সরে গিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী যখন কালিম্পঙে যাচ্ছেন, হরকা তখন পারিবারিক কাজে কলকাতায়। আগামী মঙ্গলবার নিজের শহরে ফিরলেও তিনি নিজেকে প্রশাসনিক তৎপরতা থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে চান।

জিটিএ-র যে নেতৃত্ব এখন রাজ্য সরকারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কাজ করছেন, তার মাথায় রয়েছেন দার্জিলিঙের বিনয় তামাং এবং কার্শিয়াঙের অনীত থাপা। জিএনএলএফের মন ঘিসিংকে করা হয়েছে পার্বত্য উন্নয়ন কমিটির প্রধান। তাঁর প্রভাবও মূলত দার্জিলিংকেন্দ্রিক। উল্টো দিকে, এক সময় মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত হরকাবাহাদুরের গলায় বারবার উঠে এসেছে দুঃখবোধ।

হরকা বলেন, ‘‘গত বছর পাহাড়ে যখন অনির্দিষ্টকালের বন্‌ধ ডাকা হয়, তখন আমরাই প্রথম তার বিরোধিতা করেছিলাম। সরকারের ডাক পেয়ে দু’বার সর্বদল বৈঠকে যোগও দিয়েছি। কিন্তু তার পরে দেখলাম সকলের মত নেওয়া হচ্ছে না। পরোক্ষে আমাদের অপমান করা হচ্ছে। এই অবস্থায় আর পরের বৈঠকগুলোতে যোগ দিইনি।’’

এমন দুঃখবোধ কালিম্পংবাসীদের একাংশের মধ্যেও। ১৫টি উন্নয়ন বোর্ড হয়েছে পাহাড়ে, তাদের অনেকেই নানা উন্নয়নমূলক কাজ করছে— এই কথা মেনে নিয়েও ওঁরা বলছেন, ‘‘কিন্তু একই সঙ্গে স্বজনপোষণও শুরু হয়েছে। নিজের লোক না হলে কাজের সুযোগ নেই।’’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এমনই এক সমাজসেবী মহিলা বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী যখন কালিম্পঙের দিকে আলাদা করে নজর দিয়েছেন, তখন থেকেই সকলের মনে আশা, এ বার এখানকার উন্নয়ন হবে। কিন্তু দেখুন ভাগ্য, তার পরেই পাহাড়ে গোলমাল হল। টানা ১০৪ দিনের বন্‌ধে এখানকার অর্থনীতি প্রায় ভেঙে পড়েছিল। সেই পরিস্থিতি কাটিয়ে আবার ঘুরে দাঁড়াচ্ছে কালিম্পং। এখন কি ব্যক্তিগত চেনা-পরিচয়ের সীমায় উন্নয়নের কাজ আটকে রাখা উচিত!’’

পাহাড়ের বর্ধিষ্ণু জেলা কালিম্পং। সিঙ্কোনা থেকে হর্টিকালচার, কমলালেবু থেকে পর্যটন— এই নিয়েই গড়ে উঠেছে এই জেলার অর্থনীতি। জেলার মানুষ মনে করেন, সিঙ্কোনাকে কেন্দ্র করে ওষুধ তৈরির গাছগাছালির চাষ এবং পাশাপাশি যে পর্যটনের বৈচিত্র রয়েছে এখানে, তাকে ভিত্তি করে জেলা আরও অনেক দূর এগোতে পারে। কিন্তু একই সঙ্গে তাঁদের প্রশ্ন, এই ধরনের ভেদাভেদ থাকলে শেষ অবধি সবাইকে পাশে পাওয়া যাবে তো!

এই প্রশ্ন নিয়েই মুখ্যমন্ত্রী বুধবার প্রশাসনিক বৈঠক করবেন। যিনি গত বছর গুরুংয়ের আন্দোলনের আগে থেকেই পাহাড়ে়র সব মানুষকে সঙ্গে নিয়ে সকলের জন্য উন্নয়নের কথা বলছেন। এখন তাঁর দিকেই তাকিয়ে কালিম্পং।

Harka Bahadur Chettri Kalimpong TMC হরকাবাহাদুর ছেত্রী
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy