Advertisement
E-Paper

প্রতিরোধ জোট বেঁধে, সঙ্কেত বিরোধী ঘরে

পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন-পর্ব থেকেই অশান্তি যত বাড়ছে, শাসক দলের বিরুদ্ধে তলায় তলায় বিরোধীদের একজোট হওয়ার তাগিদও বাড়ছে। একজোট হয়ে রুখে না দাঁড়াতে পারলে প্রতিরোধ যে সম্ভব নয়, তা বুঝে বিরোধী দলের নেতারাও তাঁদের কর্মী-সমর্থকদের প্রয়োজনীয় সঙ্কেত দিয়ে রাখছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:৩৪
পাল্টা: মনোনয়ন জমা দিতে গিয়ে মার খেয়েছিল বিজেপি। পথে তৃণমূলকর্মীদের ধরে পাল্টা মারধরের অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার বীরভূমের মল্লারপুরে। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম

পাল্টা: মনোনয়ন জমা দিতে গিয়ে মার খেয়েছিল বিজেপি। পথে তৃণমূলকর্মীদের ধরে পাল্টা মারধরের অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার বীরভূমের মল্লারপুরে। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম

রাজনীতির গণ্ডি থাকবে উপরে উপরে। যেমন থাকে। কিন্তু পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন-পর্ব থেকেই অশান্তি যত বাড়ছে, শাসক দলের বিরুদ্ধে তলায় তলায় বিরোধীদের একজোট হওয়ার তাগিদও বাড়ছে। একজোট হয়ে রুখে না দাঁড়াতে পারলে প্রতিরোধ যে সম্ভব নয়, তা বুঝে বিরোধী দলের নেতারাও তাঁদের কর্মী-সমর্থকদের প্রয়োজনীয় সঙ্কেত দিয়ে রাখছেন।

মনোনয়ন জমা দিতে গিয়ে মঙ্গলবার বিভিন্ন জেলায় তৃণমূলের হাতে বিজেপি নেতা-কর্মীদের আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগ এসেছে। সেই প্রসঙ্গে বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেছেন, ‘‘বিজেপির লোকজনের উপরে হামলা হয়েছে বলে ধন্য ধন্য তো করব না! আক্রমণের নিশ্চয়ই নিন্দা করব।’’ বিমানবাবুর সংযোজন, ‘‘প্রথম দিন বামেরা বেশি মার খেয়েছিল, দ্বিতীয় দিন বিজেপি খেল। লড়াইটা হয়ে দাঁড়িয়েছে গণতন্ত্র বাঁচানোর। শাসক দল বলেছে, বিরোধীশূন্য পঞ্চায়েত চাই। আর রাজ্য নির্বাচন কমিশন মনোনয়ন প্রত্যাহারের বাড়তি সময় রেখেছে। বাংলায় গণতন্ত্রের নতুন পাঠ ছাত্রছাত্রীদের দিতে হবে!’’ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের মন্তব্য, ‘‘প্রথম রাতেই বেড়াল মারতে না পারলে গৃহস্থের পাতে কিছু পড়বে না! বাংলা সব হারাতে বসেছে। সবহারাদের শৃঙ্খল ছাড়া হারানোর কিছু নেই। প্রতিরোধ চাই এখনই।’’

বিমানবাবু, সূর্যবাবুদের কথায় স্পষ্ট, তৃণমূলের তাণ্ডব রোখাই এখন তাঁদের প্রধান মাথাব্যথা। শাসক দলের মোকাবিলায় তৃণমূল স্তরে দলের ভেদাভেদ মুছে সব বিরোধীর একজোট হওয়ার যুক্তি সেখান থেকেই তৈরি হচ্ছে। আলিমুদ্দিনে বসে এ দিন বিমানবাবু যদিও বলেছেন, ‘‘পঞ্চায়েতে একের বিরুদ্ধে এক লড়াই কী ভাবে হবে, জানি না। এই তো সবে বিজেপি রামনবমীর ডাক দিল আর তৃণমূল রামসেবায় নেমে পড়ল। তার পরে হনুমান জয়ন্তী। এই রামসেবক আর হনুমান সেবকদের বিরুদ্ধে কী ভাবে ‘একের বিরুদ্ধে এক’ হবে?’’ একই দিনে আবার সিপিএমের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক অজিত পতি বিরোধীদের জোট বেঁধে মনোনয়ন দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এটা ঠিক, বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই। কিন্তু শাসক দল কাউকেই মনোনয়ন দাখিল করতে দিচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে বিজেপি-সহ সব বিরোধী একজোট হয়ে মনোনয়ন জমা করলে আপত্তি নেই।’’

প্রার্থী হতে মানা

• পঞ্চায়েত কর সংগ্রাহক।

• জেলা পরিষদ, প়ঞ্চায়েত সমিতি এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের কাজের সঙ্গে যুক্ত ঠিকাদার (কন্ট্রাক্টর)।

• জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি এবং গ্রাম পঞ্চায়েতে নথিভুক্ত ঠিকাদার (কন্ট্রাক্টর)।

• পঞ্চায়েত থেকে মাসিক বেতন প্রাপক কর্মী (চুক্তিভিত্তিক)।

• রেশন ডিলার।

• হোমগার্ড।

• সিভিক ভলান্টিয়ার।

বাস্তব বুঝেই গ্রামে গ্রামে কে কার পাশে থাকবে, তা নিয়ে রাজ্য স্তর থেকে কোনও নির্দেশ দিচ্ছেন না প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তাঁর বক্তব্য, ‘‘কে কার সঙ্গে জোট করবে, কে কার পাশে থাকবে, এটা ব্লক স্তরে ঠিক হবে। এলাকার পরিস্থিতি বুঝে স্থানীয় নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেবেন।’’ বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুও জোট বেঁধে মনোনয়নের কথা বলেছেন।

আরও পড়ুন:
বিরোধীদের রুখে তৃণমূলের শাসানি, ‘কেটেই ফেলব’
মনোনয়নে অস্ত্রের খোঁচা, জখম বিজেপি নেতা

বিরোধীদের কথা শুনে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টেপাধ্যায় অবশ্য পাল্টা বলেছেন, ‘‘বিরোধীদের কিছু বলার নেই। ওরা এখন চেষ্টা করছে কী ভাবে দল বেঁধে কমিশনের উপরে চাপ বাড়ানো যায় আর রাজভবনের ফটকে দাঁড়িয়ে ছবি তোলা যায়!’’

সূত্র: রাজ্য নির্বাচন কমিশন

Panchayat Election Scuffle TMC Nomination BJP CPM Congress
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy