বাঘনখ: জখম হয়ে হাসপাতালে। —নিজস্ব চিত্র।
ফের ফস্কে গেল বাঘ। এ বার নাকি জাল ছিঁড়ে পালিয়েছে সে!
শুক্রবার দুপুরে পশ্চিম মেদিনীপুরে চাঁদড়ার বাগঘোরার জঙ্গলে শিকারে গিয়েছিলেন জনা চল্লিশেক আদিবাসী যুবক। তাঁদের দাবি, খালের পাশে ঘাপটি মেরে বসে থাকা বাঘটি হামলা চালায়। বাঘনখের আঁচড়ে তিন যুবক জখমও হন। আহত সুদন সরেন, পন্ডা মুর্মু এবং নন্দলাল সরেনকে মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “ক্ষত দেখে মনে হচ্ছে হিংস্র পশুরই আঁচড়।”
স্থানীয়দের দাবি, হামলার পরেও বাঘটা খালের পাশে ছিল। তাকে ধরতে নাকি মাছ ধরার জাল পাতেন এলাকাবাসী। কিন্তু বাঘ জাল ছিঁড়ে পালায়। বাগঘোরার মঙ্গল মাহাতোর দাবি, “জালের একটা দিক ধরেছিলাম। বাঘটা গর্জন করে জালে জড়িয়েও গিয়েছিল। কিন্তু এত বড় চেহারা তো, ওই জালে কি আটকায়!”
দুপুরেই পৌঁছয় সুন্দরবনের ‘ট্র্যাঙ্কুলাইজেশন টিম’। ততক্ষণে টিভি চ্যানেলে চাউর হয়ে গিয়েছে জালে বাঘ পড়ার গল্প। ভিড় জমেছে। তবে বনকর্মীরা বাঘের দেখা পাননি। ঘুমপাড়ানি বন্দুক নিয়ে খালপাড়ে দীর্ঘ অপেক্ষার পরে হতাশ হয়েছেন। মেদিনীপুরের ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহা বলেন, “বাঘ ধরার চেষ্টা চলছে।” প্রয়োজনে বাগঘোরায় খাঁচাও পাতা হবে। তবে সুন্দরবনের দলটির এক সদস্যের কথায়, “ফাঁদ হয়তো পাতা হবে। তবে জঙ্গলে এত লোক এলে বাঘ ধরা মুশকিল!”
এখন আদিবাসীদের শিকার উৎসব চলছে। লালগড়ে বাঘের দেখা মেলার পরে জঙ্গলে যাতায়াত বন্ধে প্রচার চালাচ্ছে বন দফতর। জঙ্গলে ঢোকা ঠেকাতে এক মহিলা এডিএফও পায়ে ধরে অনুরোধ করেছেন। কিন্তু শোনে কে! বাগঘোরায় জখম সুদন মানছেন, “শিকার উত্সবেই জঙ্গলে গিয়েছিলাম।”
এর আগে গোয়ালতোড়েও একজন বাঘের আক্রমণে জখম হয়েছেন বলে দাবি করেছিলেন। কিন্তু সামান্য আঁচড়ে-কামড়েই কেন ক্ষান্ত দিচ্ছে বাঘবাবাজি? এক বনকর্তার ব্যাখ্যা, নতুন এলাকায় এসে বাঘটা নিজেই ভয়ে আছে। খাবারের প্রয়োজন আর আত্মরক্ষা ছাড়া সে বিশেষ হামলা করছে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy