ধৃত দয়াল বিশ্বাস
খুনের অভিযোগেই গ্রেফতার করা হল ওঝা দয়াল বিশ্বাসকে।
মনসামঙ্গল পালা চলাকালীন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গায়ে জড়ানো বিষধর সাপের ছোবলে প্রাণ যায় কালিদাসী মণ্ডলের। হাসনাবাদের বরুণহাট বাজারে যেখানে পালা চলছিল, সেখান থেকে হাসপাতাল মিনিট কুড়ির পথ। অথচ, কালিদাসীকে সেখানে না নিয়ে গিয়ে ঝাড়ফুঁক শুরু করে দয়াল। মৃত অভিনেত্রীর ছেলেদের অভিযোগ, মাকে না জানিয়েই বিষধর সাপ দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। তার উপরে চিকিৎসা না করিয়ে ঝাড়ফুঁক করিয়ে সময় নষ্ট করা হয়। যার জেরে প্রাণ গিয়েছে কালিদাসীর।
এই অভিযোগের ভিত্তিতেই পুলিশ বুধবার রাতে গ্রেফতার করে হাড়োয়ার শালিপুর গ্রামের বাসিন্দা দয়ালকে। বৃহস্পতিবার তাকে বসিরহাটের এসিজেএমের আদালতে তোলা হলে বিচারক চোদ্দো দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। এই ঘটনায় আর কেউ জড়িত কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশের দাবি, দয়াল জানিয়েছে, তাঁর দেওয়া কেউটে, পদ্মগোখরো দু’টির বিষদাঁত ভাঙা ছিল। বহু বছর ধরে তিনি কালিদাসীর সঙ্গে পালাগানের আসরে কাজ করছেন। খুনের মতলব তার ছিল না বলেই দাবি দয়ালের।
কালিদাসীর ছেলেরা বলেন, ‘‘মনসা ভাসান এবং জ্যান্ত সাপের ভাসান— পালা করে মায়ের বেশ নামডাক হয়েছিল। তা সহ্য করতে না পেরে দলের কেউ ষড়যন্ত্র করেছে।’’
টাকি বিজ্ঞান চক্রের পক্ষে মনীষা মুখোপাধ্যায়, পার্থ মুখোপাধ্যায়রা বলেন, ‘‘সময় মতো হাসপাতালে নিয়ে গেলে হয় তো সুস্থ হয়ে উঠতেন উনি। তা না করে ওঝার উপরে বিশ্বাস করে ফেলে রাখা হল।’’ ক্যানিংয়ের যুক্তিবাদী সাংস্কৃতিক সংস্থা দীর্ঘ দিন ধরে সাপ নিয়ে কুসংস্কারের বিরুদ্ধে প্রচার চালাচ্ছে। সংস্থার সম্পাদক বিজন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘প্রথমত, জ্যান্ত সাপ নিয়ে এ ভাবে অভিনয় করাই উচিত নয়। প্রশাসনের কর্তাদের এটা বন্ধ করা উচিত।’’ অতীতেও এ ভাবে অনেকে মারা গিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। বিজনের কথায়, ‘‘সাপে ছোবল মারলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া দরকার যত দ্রুত সম্ভব। ওঝা-গুনিনের কাছে কোনও অবস্থাতেই ফেলে রাখা উচিত নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy