Advertisement
E-Paper

যাবজ্জীবন শুনে কোর্টেই কেঁদে ফেললেন কাও

২০১৩ সালে ৫৮ নম্বর ওয়ার্ডে জমির দখল নিয়ে ঝামেলার জেরে অধীর মাইতি নামে এক স্থানীয় তৃণমূল নেতা খুন হয়েছিলেন। ওই ঘটনায় শম্ভু কাও-সহ পাঁচ জনকে গত শুক্রবারই দোষী সাব্যস্ত করেছিল আদালত।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:০৮
আদালতে যাওয়ার পথে শম্ভুনাথ কাও। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

আদালতে যাওয়ার পথে শম্ভুনাথ কাও। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

এজলাসে এত দিন চোয়াল শক্ত করেই দাঁড়িয়ে থাকতেন তিনি। কিন্তু বিচারক যাবজ্জীবন কারাদণ্ড শোনানোর পরেই কান্নায় ভেঙে পড়লেন খুনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত, তৃণমূলের প্রাক্তন কাউন্সিলর শম্ভু কাও।

২০১৩ সালে ৫৮ নম্বর ওয়ার্ডে জমির দখল নিয়ে ঝামেলার জেরে অধীর মাইতি নামে এক স্থানীয় তৃণমূল নেতা খুন হয়েছিলেন। ওই ঘটনায় শম্ভু কাও-সহ পাঁচ জনকে গত শুক্রবারই দোষী সাব্যস্ত করেছিল আদালত। সোমবার আলিপুর আদালতের নবম অতিরিক্ত দায়রা বিচারক সুজয় সেনগুপ্ত পাঁচ জনকেই যাবজ্জীবনের সাজা শোনান। শম্ভু কাও ছাড়া বাকিরা হলেন, কানা বিকাশ, পেটকাটা বাবলু, অজয় দলুই ও শ্যামল মুখোপাধ্যায়।

এ দিন রায় ঘোষণার আগে বিচারক দোষী সাব্যস্ত হওয়া পাঁচ জনেরই বক্তব্য শোনেন। শম্ভু করজোড়ে বলেন, ‘‘স্যর, আমার কোনও অপরাধ নেই। আমি খুন করিনি। অধীর মাইতির গায়ে হাতও দিইনি। আমার বাড়িতে স্ত্রী, সন্তান ও বৃদ্ধা মা রয়েছেন। আমাকে মার্জনা করুন।’’ বাকি চার জনও দোষ অস্বীকার করেন।

সাজা ঘোষণার পরে শম্ভু কান্নায় ভেঙে পড়েন। বিড়বিড় করে বলতে থাকেন, ‘‘আমি খুন করিনি। বিনা দোষে বছর পাঁচেক জেল খাটলাম। এখন সারা জীবন জেলেই থাকতে হবে।’’ শম্ভুর পাশে তখন মাথা নিচু করে বসে কাঁদছেন বাকি চার জন।

২০১৩-র ২১ মার্চ অধীর মাইতি খুন হন। ওই ঘটনায় শম্ভু-সহ আট জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়। ওই আট জন মিলেই অধীরকে মারধর করায় তাঁর মৃত্যু হয়েছিল বলে চার্জশিটে জানায় পুলিশ। অভিযুক্তদের মধ্যে দু’জন এখনও ফেরার। তাই ছ’জনের বিচার হয়। এক জনকে আদালত বেকসুর খালাস করে দেয়।

পুলিশ জানায়, একটি কবরখানার জমির দখল নিয়েই শম্ভুর সঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল নেতা অধীরের ঝামেলা চলছিল। ওই জমি দখল করে আবাসন তৈরির পরিকল্পনা ছিল শম্ভুর। যা আটকানোর চেষ্টা করেছিলেন অধীর। তা নিয়েই বিবাদ চলছিল দু’জনের মধ্যে। ২১ মার্চ সকালে অধীরকে ওই জমির কাছেই ডেকেছিলেন শম্ভু। অধীর সেখানে গেলে শম্ভুর সঙ্গে তাঁর বচসা শুরু হয়। সেই সময়েই অধীরের উপরে চ়ড়াও হয়ে তাঁকে মারধর শুরু করেন শম্ভু-সহ আট জন। শম্ভুবাহিনীর মারের চোটে অধীর অচৈতন্য হয়ে পড়েন। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।

পুলিশ জানায়, ঘটনার পরেই ফেরার হয়ে গিয়েছিলেন শম্ভু। দিন পনেরো পরে শম্ভুকে উত্তরপ্রদেশের বালিয়া থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে শম্ভু ও তাঁর এক আত্মীয়-সহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

শম্ভুর আইনজীবী কৌস্তুভ শীল ও অরিন্দম দাস জানান, নিম্ন আদালতের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে আবেদন করবেন তাঁরা।

Shambhu Nath Kow Life imprisonment murder TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy