তপন পুরকাইত
দোকানের সামনে কথা কাটাকাটি চলছিল। অভিযোগ, আচমকাই ভিতর থেকে ধারাল অস্ত্র এনে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে কিছু লোক। রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন তপন পুরকাইত (৫৫)। দোকানের শাটার নামিয়ে পালায় আততায়ীরা। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তপনকে মৃত বলে জানিয়ে দেন চিকিৎসকেরা।
সোমবার সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে মথুরাপুরের ঘোড়াদল বাজারে। দলের একাংশ জানিয়েছেন, তপন এলাকায় তৃণমূল নেতা বলে পরিচিত। মূল অভিযুক্ত সুজয় পাইকও শাসক দলের কর্মী। ফলে গোটা ঘটনায় রাজনীতির রঙ লেগেছে। তপনবাবুর বড় বৌমা চন্দনা পুরকাইত বলেন, ‘‘দলের মধ্যে শ্বশুরমশাইয়ের গুরুত্ব দিন দিন বাড়ছিল। সেটা তৃণমূলেরই কিছু নেতা মেনে নিতে পারছিলেন না। সে জন্যই ওঁকে খুন করা হল।’’
তৃণমূল নেতা তথা লক্ষ্মী জনার্দনপুর পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রার্থী অরবিন্দ সর্দার-সহ আটজনের নামে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ দায়ের হয়েছে থানায়। সুজয় পাইক ও তাঁর দুই আত্মীয় মৃত্যুন পাইক, অয়ন পাইককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্তারা।
এ দিন অরবিন্দ ফোনে বলেন, ‘‘আমি কোনও ভাবে জড়িত নই। ঘটনাস্থলেও ছিলাম না। মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হল।’’ ঘটনাটিকে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বলে মানতে নারাজ মন্দিরবাজারের তৃণমূল বিধায়ক জয়দেব হালদারও। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি-সিপিএমের দুষ্কৃতীরাই খুন করেছে।’’ কিন্তু নিহতের পরিবার যে অন্য কথা বলছে! জয়দেববাবুর যুক্তি, ‘‘ওঁরা অনেক কিছুই বলতে পারেন। কিন্তু এর পিছনে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই।’’
বিজেপি নেতা সুফল ঘাঁটু তৃণমূলের অভিযোগ অস্বীকার করেন। তাঁর কথায়, ‘‘নিজেদের দলের গোলমাল ঢাকতে আমাদের নামে মিথ্যা দোষারোপ করছে।’’ ঘটনার পিছনে পুরনো শত্রুতা থাকতে পারে বলে পুলিশের অনুমান। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, কিছু দিন আগে তপনের এক মেয়ের শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে সুজয়ের পরিবারের ঝামেলা থানা-পুলিশ পর্যন্ত গড়িয়েছিল। এ নিয়ে সুজয়ের সঙ্গে তপনেরও গোল বাধে। এ দিন সকালে সুজয়ের হার্ডওয়্যারের দোকানের সামনে তা নিয়েই ফের ঝগড়া শুরু হয়। সেখানে সুজয়ের কয়েক জন আত্মীয় ছিলেন। অভিযোগ, হঠাৎই ধারালো অস্ত্র এনে আক্রমণ করা হয় তপনের উপরে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy