কলকাতা পুলিশ আইন ইনস্টিটিউটের ধাঁচে রাজ্য পুলিশ এ বার ফরেন্সিক কলেজ খুলতে চাইছে পুলিশ অফিসার ও সাধারণের জন্য। মাসখানেক আগে ওই কলেজ গঠনের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে রাজ্য সরকারের কাছে। যা হওয়ার কথা ব্যারাকপুরের স্বামী বিবেকানন্দ রাজ্য পুলিশ অ্যাকাডেমিতে। প্রস্তাব অনুযায়ী, ওই কলেজ থাকার কথা পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে। ইতিমধ্যেই প্রস্তাবটির ভিত্তিতে শিক্ষা দফতর ও বিশ্ববিদ্যালয় রাজ্য পুলিশের সঙ্গে বৈঠক, সব পরিদর্শন করেছে। কলেজ হওয়ার কথা পুলিশ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের তত্ত্বাবধানে।
রাজ্য পুলিশ সূত্রের খবর, নতুন চালু হওয়া বিএনএসএসের ধারায় বলা হয়েছে, সাত বছরের বেশি সাজা রয়েছে এমন অপরাধের ক্ষেত্রে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞকে ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন নমুনা বাজেয়াপ্ত করতে হবে। যা পরে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে। তার জন্য পুলিশকর্মীদের ওই বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। এক পুলিশ আধিকারিক জানান, আপাতত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক নানা রাজ্যের আবেদনের প্রেক্ষিতে বিএনএসএসের ওই ধারা পাঁচ বছরের জন্য স্থগিত রেখেছে। ওই পাঁচ বছরের মধ্যে পুলিশকর্মীদের ফরেন্সিকের নানা বিষয়ে প্রাথমিক জ্ঞান লাভের জন্য কলেজটি খোলার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ঠিক হয়েছে, পাঁচ বছরের মধ্যে রাজ্য পুলিশের প্রতিটি থানায় ওই কলেজ থেকে পাশ করা এক জন করে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ থাকবেন। যিনি তথ্যপ্রমাণ-সহ বিভিন্ন জিনিস ঘটনাস্থল থেকে বাজেয়াপ্ত করবেন।
সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, ছ’মাসের কোর্সটি হবে সার্টিফিকেট কোর্স। এক বছরেরটি ডিপ্লোমা কোর্স। ওই দু’টি কোর্স মূলত কর্মরত পুলিশকর্মীদের কথা ভেবে ঠিক হয়েছে। কারণ, চাকরি চলাকালীন দীর্ঘমেয়াদি কোর্স করা সম্ভব না-ও হতে পারে পুলিশ অফিসারদের। তাঁদের কথা ভেবে ওই স্বল্প মেয়াদের কোর্স দু’টি খোলার ভাবনা। পুলিশকর্মীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা হতে হবে বিজ্ঞান নিয়ে স্নাতক। প্রতিটি কোর্সে ৩০ জন করে পড়ুয়া নেওয়া হবে। তার মধ্যে কত জন কর্মরত পুলিশকর্মী সুযোগ পাবেন তা, এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলে খবর। পুলিশকর্তারা জানান, পাঁচ বছর পরে রাজ্য পুলিশের সব থানায় যাতে এক জন করে ফরেন্সিক কলেজের শংসাপত্রপ্রাপ্ত পুলিশকর্মীর পোস্টিং করা যায়, সেটাই তাঁদের লক্ষ্য। তাতে আখেরে পুলিশের সুবিধা হবে। পুলিশের বিরুদ্ধে নমুনা সংগ্রহে গাফিলতির অভিযোগও কমবে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)