বেসরকারি বাসের চালক ও কন্ডাক্টরদের কাজের সময়সীমা বেঁধে দিতে উদ্যোগী হল পরিবহণ দফতর। সম্প্রতি পরিবহণ দফতরের সঙ্গে বৈঠক করেছে রাজ্যের শ্রম দফতর। সেই বৈঠকে এই সংক্রান্ত আলোচনা হয়েছে। পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা যাচ্ছে, বাসচালক এবং কন্ডাক্টারদের কাজের সময়সীমা আট থেকে ন’ঘণ্টার মধ্যে বেঁধে দেওয়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে দু’পক্ষের মধ্যে। রাজ্যে বাস দুর্ঘটনা কমাতে এই নতুন নিয়ম চালু করতে চায় তারা। এ ক্ষেত্রে তাদের যুক্তি, বাসচালক এবং কন্ডাক্টারেরা প্রতিদিন ১২-১৩ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় পরিবহণ পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত থাকেন। দীর্ঘ ক্ষণ এক ধরনের কাজের ফলে ক্লান্তি গ্রাস করে। যে কারণে পথ দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। তাই সব দিক বিবেচনা করে এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারে রাজ্য সরকার।
আরও পড়ুন:
বাসচালক এবং কন্ডাক্টারদের কাজের নির্দিষ্ট কোনও সময় নেই। ১২-১৪ ঘণ্টা করে তারা বাস পরিষেবা দেন। প্রতি দিনের লভ্যাংশে কমিশন বাবদ বাসচালকেরা ১৫ শতাংশ এবং কন্ডাক্টারেরা ৯ শতাংশ টাকা পান। বাসমালিক সংগঠনের অভিযোগ, চালক এবং কন্ডাক্টারদের কাজের সময়সীমা বেঁধে দিলে ক্ষতি তাঁদেরই। কারণ, তাঁদের নির্দিষ্ট কোনও বেতন কাঠামো নেই। রোজ বাস চালিয়ে যা রোজগার হয়, তার লভ্যাংশ থেকেই নির্দিষ্ট হারে প্রাপ্ত অংশ নিয়ে তারা বাড়ি ফেরেন। ১২-১৪ ঘণ্টা পরিশ্রম করে তাঁদের সংসার চালানোর মতো উপার্জন হচ্ছে। কাজের সময় কমিয়ে দেওয়া হলে বাসচালক এবং কন্ডাক্টারদের উপার্জন এক ধাক্কায় অনেকটাই কমে যাবে। তাই পরিবহণ বা শ্রম দফতর কোনও সিদ্ধান্ত কার্যকর করার আগে যেন সব বিষয়গুলি ঠিকঠাক বিবেচনা করে দেখে, এমনটাই মত বেসরকারি বাসমালিকদের।
সিটি সাব আর্বান বাস সার্ভিসেসের নেতা টিটু সাহা বলেন, ‘‘এটা ঠিক যে ড্রাইভার কন্ডাক্টারদের বাস চালানোর উপরেই তাঁদের উপার্জন নির্ভর করে। কাজের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হলে তা তাঁদের উপার্জনে প্রভাব ফেলবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এ ছাড়াও কাজের নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হলে, অতিরিক্ত পরিবহণকর্মীর প্রয়োজন হবে। কিন্তু করোনা সংক্রমণের পর পরিবহণ পরিষেবায় শ্রমিক মেলা বেশ কষ্টকর হয়ে পড়েছে। যদি সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়, তবে তার প্রভাব পরিবহণ পরিষেবায় পড়তে বাধ্য।’’ তবে পরিবহণ দফতরের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, আপাতত সবকিছুই আলোচনা স্তরে রয়েছে। কোনও সিদ্ধান্ত কার্যকর করার আগে বাসমালিকদের তো বটেই, চালক এবং কন্ডাক্টারদের মতামতও নেবে পরিবহণ দফতর।