Advertisement
E-Paper

আরজি কর-কাণ্ড কেন ‘বিরলতম’? ফাঁসি দেওয়া উচিত কেন? হাই কোর্টে ৬ কারণ দর্শাচ্ছে সিবিআই

আরজি কর-কাণ্ডে দোষী সঞ্জয় রায়ের মৃত্যুদণ্ডের আবেদন জানিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে সিবিআই। বক্তব্যের সপক্ষে ছ’টি কারণ দেখিয়েছে তারা। সোমবার সেই মামলার শুনানি রয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০২৫ ১৬:২৮
আরজি কর-কাণ্ডে সঞ্জয় রায়ের ফাঁসি চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টে আবেদন জানিয়েছে সিবিআই।

আরজি কর-কাণ্ডে সঞ্জয় রায়ের ফাঁসি চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টে আবেদন জানিয়েছে সিবিআই। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

আরজি করে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনা কেন ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম’? কেন এই ঘটনায় অভিযুক্তের ফাঁসির শাস্তি হওয়া উচিত? কলকাতা হাই কোর্টের আবেদনে মোট ছ’টি কারণ জানিয়েছে তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। শিয়ালদহ আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাসের সিদ্ধান্ত ‘ভুল’ বলেও উল্লেখ করেছে তারা। সোমবার হাই কোর্টে সিবিআইয়ের মামলার শুনানি হবে। বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ এই সংক্রান্ত রাজ্যের আবেদনও সোমবার শুনবে।

গত শনিবার শিয়ালদহ আদালত আরজি কর মামলায় সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করে। সোমবার তাঁর শাস্তি ঘোষণা করা হয়। বিচারক জানান, সঞ্জয়ের অপরাধ প্রমাণিত। কিন্তু এই ঘটনা ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম’ নয়। তাই সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ড তাঁকে দেওয়া হয়নি। বরং সঞ্জয়কে আমৃত্যু কারাবাসের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে মামলা করে রাজ্য সরকার। তারাও সঞ্জয়ের ফাঁসির আবেদন জানিয়েছে।

আরজি কর-কাণ্ডে প্রথম থেকেই সঞ্জয়ের সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়েছে সিবিআই। হাই কোর্টে তারা জানিয়েছে, এই ঘটনার তদন্তে নেমে ২২৫টি প্রামাণ্য নথি তারা সংগ্রহ করেছে। নিজেদের আবেদনের সপক্ষে যে ছ’টি কারণ সিবিআই দেখিয়েছে, সেগুলি হল—

  • আরজি কর হাসপাতালে যে নৃশংস অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, তা সমাজে ভীতি জাগায়। সামাজিক ভারসাম্য নষ্ট করে। সমাজে এই ধরনের ঘটনায় নিরাপত্তাহীনতার বোধ তৈরি হয়, যা জনমানসে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলে।
  • সঞ্জয়ের ধর্ষণ এবং খুনের অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে। বিচারক নিজে একে ‘জঘন্য’ এবং ‘নৃশংস’ বলে উল্লেখ করেছেন। সিবিআইয়ের তদন্তেও তা প্রমাণিত। এর পরেও এর মধ্যে ‘বিরলতম ঘটনা’ খুঁজে না-পেলে তা আইনের ভুল ব্যাখ্যা হয়ে দাঁড়ায়।
  • ঘটনার সময়ে সঞ্জয়ের মানসিক কোনও অসুস্থতা ছিল না। খুন বা ধর্ষণের জন্য কেউ তাঁকে উস্কানিও দেননি। ফলে সে সম্পূর্ণ সুস্থ মস্তিষ্কে, স্বেচ্ছায় এই কাজ করেছে। সঞ্জয়কে মৃত্যুদণ্ড না-দিয়ে ভুল করেছেন বিচারক।
  • অসহায় চিকিৎসককে হাসপাতালের ভিতর ধর্ষণ করে খুন করেছেন সঞ্জয়। ওই চিকিৎসক টানা ৩৬ ঘণ্টা ডিউটি করেছিলেন। ঘটনার প্রতিবাদে রাজ্য তথা দেশ জুড়ে বিপুল আন্দোলন শুরু হয়েছিল। লক্ষাধিক মানুষকে তার ফলে প্রতি দিন ভোগান্তির মুখে পড়তে হয়েছে।
  • সঞ্জয় কলকাতা পুলিশের সদস্য ছিলেন। সিভিক ভলান্টিয়ার হিসাবে তাঁর কাজ ছিল রোগীর পরিজন এবং পুলিশের মধ্যে সমন্বয় রক্ষা করা। অর্থাৎ, চিকিৎসকের সুরক্ষার দায়িত্বে যিনি ছিলেন, তিনিই তাঁকে ধর্ষণ এবং খুন করেছেন।
  • চিকিৎসককে ধর্ষণের পরও রেহাই দেননি সঞ্জয়। তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করেছেন। তাঁকে সংশোধনের সুযোগ দেওয়া যায় না।

আরজি কর মামলায় সঞ্জয়কে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪, ৬৬ এবং ১০৩(১) তিনটি ধারাতেই দোষী সাব্যস্ত করেন শিয়ালদহ আদালতের বিচারক। সঞ্জয় শেষ দিনও আদালতে দাবি করেছেন, তিনি নির্দোষ। জানিয়েছেন, যে কাজ তিনি করেননি, তার জন্য তাঁকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। গলায় রুদ্রাক্ষের মালার কথাও উল্লেখ করেন সঞ্জয়। নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে তিনি জানান, ঘটনার সময় ওই মালা ছিঁড়ে যায়নি। তবে বিচারক জানিয়ে দেন, সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে তাঁর অপরাধ প্রমাণিত। শাস্তি ঘোষণার পর সঞ্জয়ের ফাঁসি চেয়ে রাজ্য সরকার হাই কোর্টে যে আবেদন করে, সিবিআই তার বিরোধিতা করেছিল। রাজ্য সরকারের এই মামলা করার এক্তিয়ার আছে কি না, তা নিয়েই প্রশ্ন তোলে কেন্দ্রীয় সংস্থা। সোমবার তাদের মামলাটি উঠবে উচ্চ আদালতে।

RG Kar Case Verdict RG Kar Rape and Murder Case RG Kar Medical College and Hospital Incident CBI Calcutta High Court
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy