Advertisement
১৪ অক্টোবর ২০২৪
Panchayat Election

অভিষেকের প্রার্থী খোঁজার ভোটে সরকারি কর্মীরা? কী বক্তব্য তৃণমূল এবং শুভেন্দুর তালিকাভুক্তদের

শুভেন্দু তাঁর অভিযোগের প্রমাণ হিসাবে একটি হোয়াট্‌সঅ্যাপ কথোপকথনের স্ক্রিনশট শেয়ার করেছেন টুইটারে। তার সঙ্গে ছিল সেই কথোপকথনে থাকা সরকারি কর্মীদের তালিকাটিও।

 Suvendu Adhikari’s Allegation about Abhishek Banerjee’s election camp

জলপাইগুড়িতে অভিষেকের আয়োজিত গণভোটে সরকারি কর্মীদের ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ শুভেন্দুর। ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০২৩ ১৩:৩৬
Share: Save:

পঞ্চায়েত ভোটে দলের প্রার্থী বাছতে জেলায় জেলায় গণভোট করাচ্ছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সেই ভোট সামলাচ্ছেন কারা? বুধবার রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেছেন, তৃণমূলের গণভোটের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে রাজ্য সরকারেরই বিভিন্ন বিভাগের কর্মচারীদের।

বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু টুইটারে লিখেছেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটের প্রার্থী বাছাইয়ের প্রাথমিক ভোটাভুটির জন্য এখন শুধু পুলিশকেই নয়, সরকারি কর্মচারীদেরও ব্যবহার করছে আঞ্চলিক দল তৃণমূল।’’ এ ব্যাপারে নাম না করেই তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেককে কটাক্ষ করে শুভেন্দু বলেছেন, ‘‘পিসি-ভাইপোর মিলিত আঞ্চলিক দল, সরকারি কর্মীদের ব্যক্তিগত কর্মচারীর মতো ব্যবহার করছে।’’ যদিও এর পাল্টা জবাবে তৃণমূল বলেছে, ‘‘অভিষেকের সভায় জনজোয়ারের ছবি দেখে সহ্য করতে না পেরে কুৎসা করতে নেমেছেন বিরোধী দলনেতা।’’

বুধবার শুভেন্দু তাঁর অভিযোগের প্রমাণ হিসাবে একটি হোয়াট্‌সঅ্যাপ কথোপকথনের স্ক্রিনশট এবং সেই কথোপকথনে থাকা একটি তালিকা শেয়ার করেছেন টুইটারে। তাতে দেখা যাচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জলপাইগুড়ি সংগঠন শীর্ষক ৪৯ জনের একটি তালিকা দিয়ে বলা হয়েছে, তালিকাভুক্ত কর্মীদের ‘‘মাননীয় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শিবিরে প্রিসাইডিং অফিসার হিসাবে ডিউটি করতে হবে।’’ এর সঙ্গে কোথায় কবে ঠিক ক’টার সময় ওই কর্মচারীদের ‘ডিউটি’ করতে হবে, তার বিশদও জানানো হয়েছে ওই হোয়াট্‌সঅ্যাপ বার্তায়। যার সত্যতা আনন্দবাজার অনলাইন যাচাই করেনি।

বিরোধী দলনেতার অভিযোগ, তালিকাটি রাজ্য সরকারের কর্মচারীদের। জলপাইগুড়িতে অভিষেকের আয়োজিত গণভোটে তাঁদের প্রিসাইডিং অফিসার হিসাবে ‘ডিউটি’ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। যদিও শুভেন্দুর দেওয়া তালিকায় থাকা নাম এবং ফোন নম্বরের তালিকা ধরে যোগাযোগ করা হলে তাঁদের অনেকেই আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছেন, এ ধরনের কোনও তালিকার কথা তাঁরা জানেন না। তাঁদের কাছে কোনও তালিকা আসেনি। এবং তাঁরা কোথাও প্রিসাইডিং অফিসার হিসাবে দায়িত্ব পালন করতেও যাননি।

তালিকায় প্রথমেই নাম ছিল সঞ্জয় সিংহ রায় নামে এক ব্যক্তির। শুভেন্দুর টুইটে অভিযোগ করা হয়েছিল, এই ব্যক্তি জলপাইগুড়ির ডিএম অফিসের স্থায়ী কর্মী। ইনিই হোয়াট্‌সঅ্যাপে ওই তালিকা এবং নির্দেশ পাঠিয়েছেন। যদিও আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে বার বার সঞ্জয়ের তালিকায় দেওয়া ফোন নম্বরে ফোন করা হলেও সেই ফোন কেউ ধরেনি। এর পরে অনেকেই সংবাদমাধ্যম থেকে ফোন করা হয়েছে শুনে ফোন কেটে দেন। পার্থপ্রতিম বসাক, শুভ্রজিৎ রায়, প্রসেনজিৎ সরকার নামে তিন জন ফোন ধরেন। এর মধ্যে প্রথম জন নিজের নাম স্বীকার করলেও কথা বলতে চাননি। বাকিদের মধ্যে শুভ্রজিৎ জানান, তিনি গোয়ালমারির পঞ্চায়েতের অফিসের এগ্‌জিকিউটিভ অ্যাসিসট্যান্ট। তবে এমন তালিকা তিনি পাননি। অভিষেকের গণভোটে কোনও বিশেষ ‘ডিউটি’তেও যাননি। জলপাইগুড়ির সদর ব্লকের পঞ্চায়েত কর্মী প্রসেনজিতেরও নাম ছিল তালিকায়। তিনিও জানিয়েছেন এ ব্যাপারে তিনি সম্পূর্ণ অন্ধকারে। তবে দু’জনেই আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছেন, তাঁরা সঞ্জয়কে ভাল ভাবেই চেনেন।

শুভেন্দু টুইটে লিখেছিলেন, ‘‘সরকারি কর্মচারীদের এই তালিকাটি দেখুন। এঁদের শাসকদলের ভোটাভুটির কাজ সামলাতে বাধ্য করা হচ্ছে। হাস্যকর বিষয় হল, এক দিকে ডিএ-র দাবিতে আন্দোলনকারী সরকারি কর্মচারীদের অন্যত্র বদলি করা হচ্ছে, আবার সেই সরকারি কর্মচারীদেরই একাংশকে পোলিং অফিসার হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে যুবরাজের হাসি-খেলার জন্য।’’

শুভেন্দুর এই বক্তব্য প্রসঙ্গে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অবশ্য শুভেন্দুর বিরুদ্ধে কুৎসা করার অভিযোগ এনেছেন। কুণাল বলেছেন,‘‘মানুষের সঙ্গে কোনও সংযোগ নেই। অভিষেকের জনসংযোগ যাত্রায় জনজোয়ারের যত ছবি দেখছে, ততই ওর মাথাখারাপ হয়ে যাচ্ছে। দিল্লির নেতারা ওর উপরেই বিরক্ত। রাজ্যের আদি বিজেপি কর্মীরা ওকে দেখতে পারেন না। ফলে এ সব কুৎসা করা ছাড়া আর ওর রাস্তা কী!’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE