গণ্ডগোল যা-ই থাক না কেন, শিল্প সংস্থায় কাজ বন্ধ করা যাবে না— দুর্গাপুরের প্রশাসনিক সভায় এমনই বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের একাংশের মদতে শ্রমিক-আন্দোলনের জেরে আসানসোলে
এক বেসরকারি গ্যাস সংস্থায় মাঝে-মধ্যেই উৎপাদন বিঘ্নিত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সে প্রসঙ্গ তুলে বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘শিল্প বন্ধ হবে, এটা আমি চাই না। যারা এটা করবে তাদের প্রতি আমার কোনও সমর্থন নেই।’’
শ্রমমন্ত্রী তথা আসানসোল উত্তরের বিধায়ক মলয় ঘটককে সব পক্ষকে নিয়ে বসে তিন দিনের মধ্যে ওই সংস্থার সমস্যা মেটানোর নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্র বিএসএনএল, এয়ার ইন্ডিয়া, ব্যাঙ্কের কর্মীদের সময়ে মাইনে দেয় না। আমাদের এখানে বাজারটা দেশের থেকে ভাল। আমরা ধরে রাখতে পেরেছি বলে সমস্যা হয়নি। বিষয়টা মেটাও।’’ মলয় বলেন, ‘‘শীঘ্রই বৈঠক ডাকা হবে।’’ এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন গ্যাস সংস্থা কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: পুলওয়ামা-কাণ্ড ওঁদের কাছে এখনও রহস্যই
মজুরি বৃদ্ধি-সহ নানা দাবিতে গত জুনে ওই সংস্থায় আন্দোলন করেন গ্যাস সরবরাহকারী গাড়ির চালকেরা। নেতৃত্ব দেয় আইএনটিটিইউসি। তার জেরে সপ্তাহ তিনেক সিএনজি সরবরাহ বন্ধ থাকে আসানসোল-দুর্গাপুরে। প্রশাসনের উদ্যোগে কয়েক দফা বৈঠকের পরে সমস্যা মেটে। কিন্তু জানুয়ারিতে সংস্থার ২৯ জন নিরাপত্তাকর্মীকে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে সরানো হয়। প্রতিবাদে স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর লক্ষ্মণ ঠাকুরের নেতৃত্বে আন্দোলন শুরু হয়েছে। কাউন্সিলরের দাবি, ‘‘ওই কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ মিথ্যা।’’
এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘২৯ জনের ছাঁটাই নিয়ে সমস্যা হয়েছিল। ট্রেড ইউনিয়নের নেতাদের উচিত ছিল পুরনোদের রাখার ব্যবস্থা করা। নতুন ২৯ জনকে ওরা (সংস্থা) নিয়ে নিয়েছে।’’ শ্রমমন্ত্রীকে তিনি বলেন, ‘‘মলয় ঘটক, তোমাকে উদার (লিবারেল) হতে হবে। একেবারে বন্ধ করে দিতে চাও? না কি চালু রেখে সমস্যাটা মেটাবে? সংস্থাকেও বলব উদার হতে।’’
আসানসোল-দুর্গাপুরে শ্রমিক-আন্দোলনে আগেও নানা সংস্থায় সমস্যা তৈরি হয়েছে। আসানসোলের বিজেপি নেতা তাপস রায়ের দাবি, ‘‘আন্দোলনের নামে তৃণমূলের লোকজন নানা সংস্থায় নিয়মিত উৎপাত করেন। মুখ্যমন্ত্রী যা-ই বলুন, তা বন্ধ হবে বলে মনে হয় না।’’
ওই গ্যাস সংস্থা কর্তৃপক্ষ অবশ্য বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের ফলে শিল্পের সহায়ক পরিবেশ তৈরি হবে, যা আরও লগ্নি ও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করবে বলে তাঁদের আশা।