বিজেপি অফিসে সাংবাদিক বৈঠকে রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। ছবি: সুদীপ আচার্য।
রূপা গঙ্গোপাধ্যায় রাজ্যসভায় মনোনীত হওয়ার পর দলের মহিলা মোর্চার সভানেত্রী পদে নতুন মুখের খোঁজ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে গেল বিজেপি-তে।
দলের একটি সূত্রের খবর, সংসদের উচ্চকক্ষে মনোনীত হওয়ার পর সাংগঠনিক পদ যে তাঁকে ছেড়ে দিতে হতে পারে সেই ইঙ্গিত বিজেপি-র শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে আগেই দেওয়া হয়েছিল রূপাকে। সেই মোতাবেক সম্প্রতি মহিলা মোর্চার নেত্রীদের একটি বৈঠকে ডেকে পরবর্তী সভানেত্রী হিসাবে তাঁদের পছন্দের নাম জানাতে বলেছিলেন রূপা। যদিও রাজ্য বিজেপি-র অনেক নেতা তখন এ ব্যাপারটাতেও অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন। কারণ, তাঁদের মতে মহিলা মোর্চা দলের সামগ্রিক সংগঠনের অংশ। রূপা নয়, দলই ঠিক করবে পরবর্তী সভানেত্রী কে হবেন?
তবে এ নিয়ে মনোমালিন্য যাই হয়ে থাকুক মহিলা মোর্চার পরবর্তী সভানেত্রী মনোনয়ন নিয়ে এরই মধ্যে টানাপড়েন শুরু হয়ে গিয়েছে রাজ্য বিজেপি-তে। দলের একাংশ নেতার মতে, রাজ্যের মানুষের চেনা মুখ হিসাবে লকেট চট্টোপাধ্যায়কে সেই দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে। লকেটের মধ্যে লড়াইয়ের মানসিকতা ও জেদ যেমন রয়েছে, তেমনই রাজনৈতিক ভাবে তিনি অনেকের তুলনায় পরিণতবুদ্ধি বলে তাঁদের মত। এ ছাড়াও সম্ভাব্যদের তালিকায় রয়েছেন নুপূর ঘোষ, কৃষ্ণা ভট্টাচার্যের মতো নেত্রীরা- যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে দলের সঙ্গে সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত।
নতুন মুখের খোঁজ নিয়ে অবশ্য রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বৃহস্পতিবার কোনও মন্তব্য করতে চাননি। বরং নিরাপদ অবস্থান নিয়ে তিনি বলেন,‘‘মহিলা মোর্চার সভানেত্রী পদে রূপা থেকে যেতে পারেন, আবার নাও থাকতে পারেন। এ নিয়ে এখনও কোনও আলোচনা হয়নি।’’ এ দিন রূপাকে পাশে বসিয়ে দলীয় দফতরে সাংবাদিক বৈঠকও করেন রাজ্য সভাপতি। এ রাজ্য থেকে একের পর এক শিল্পীকে সংসদের সদস্য করার জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের প্রতি কৃতজ্ঞতাও জানান দিলীপ। সেই সঙ্গে বলেন,‘‘এর থেকেই স্পষ্ট কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব পশ্চিমবঙ্গকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছেন।’’ কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান রূপাও।
পরে বিজেপি-র এক বর্ষীয়ান নেতা বলেন, আসলে এ বার রাজ্যসভায় রূপাকে অনেকটা সময় দিতে হবে। লোকসভায় তৃণমূল সাংসদদের জবাব দেওয়ার জন্য সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া-বাবুল সুপ্রিয়রা রয়েছেন। রাজ্যসভায় বাংলা থেকে বিজেপি-র কোনও প্রতিনিধি নেই। ডেরেক ও ব্রায়েন-সুখেন্দুশেখর রায়দের এ বার বেগ দিতে পারেন রূপা। তা ছাড়া উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা ভোটেও রূপাকে প্রচারে ব্যবহার করতে পারেন বিজেপি নেতৃত্ব। কারণ, দ্রৌপদীর চরিত্রে অভিনয়ের জন্য হিন্দিবলয়ে তাঁর জনপ্রিয়তা কম নয়। সব মিলিয়ে রাজ্যের বাইরে দলের জন্য অনেকটা সময় দিতে হবে রূপাকে। রাজ্যের মহিলা মোর্চার সভানেত্রী পদে সেই কারণেই নতুন মুখের খোঁজ করা জরুরি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy