Advertisement
E-Paper

সরস্বতী পুজোয় বন‌্ধ কেন, জলঙ্গি নিয়ে মমতা

বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের শুরু থেকেই বিতর্ক চলছে জলঙ্গি-কাণ্ড ঘিরে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:২০
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র

জলঙ্গিতে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী জনতার উপরে গুলিচালনার ঘটনা নিয়ে বিতর্কে যোগ হল নতুন মাত্রা। শাসক দল তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি জলঙ্গিতে আন্দোলনকারীদের উপরে গুলি চালিয়েছেন এবং দু’জনের মৃত্যু হয়েছে, এই অভিযোগে বিধানসভায় সরব ছিল বিরোধীরা। তাদের জবাব দিতে গিয়ে এ বার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাল্টা মন্তব্য করলেন, সরস্বতী পুজোর দিনে জলঙ্গিতে বন্‌ধ পালন করা হচ্ছিল কেন? পাশাপাশিই তাঁর কটাক্ষ, সিপিএমের হাত ধরতে গিয়ে রাজ্যে কংগ্রেস সাইনবোর্ড হয়ে যাচ্ছে।

বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের শুরু থেকেই বিতর্ক চলছে জলঙ্গি-কাণ্ড ঘিরে। অন্য রাজ্যে সিএএ-বিরোধী আন্দোলনে নিহত বা মৃতদের কথা রাজ্যপালের ভাষণে উল্লেখ থাকলেও জলঙ্গিতে নিহত আনারুল বিশ্বাস ও সালাউদ্দিনের প্রতি শোকপ্রকাশ কেন করা হবে না, প্রথম দিনই সেই প্রশ্ন তুলেছিল বিরোধী বাম ও কংগ্রেস। ওই দু’দলের বিধায়কেরা আলাদা শোকপালনও করেছিলেন জলঙ্গির নিহতদের স্মৃতিতে। রাজ্যপালের ভাষণের উপরে বিতর্কেও সাড়ে চার দিনে বিরোধী শিবিরের একাধিক বিধায়ক জলঙ্গির প্রসঙ্গ এনেছেন। রাজ্যপালের ভাষণ-বিতর্কের শেষে শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রীর জবাবি বক্তৃতার সময়েও বিরোধী বেঞ্চ থেকে জলঙ্গির কথা উড়ে আসে। মুখ্যমন্ত্রী তখন বলেন, ‘‘জলঙ্গিতে সরস্বতী পুজোর দিন বন্‌ধ কেন করছিলেন? আমরা ঘরে ঘরে সরস্বতী পুজো করি। দুর্গাপুজো, কালীপুজো, ইদের দিন কেউ বন্‌ধ ডাকে। সাম্প্রদায়িক তাস খেলার জন্য সরস্বতী পুজোয় বন্‌ধ ডেকেছিলেন? ওই মৃত্যুর জন্য আপনারা দায়ী!’’

মুখ্যমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের মাঝেই বিরোধী বেঞ্চ থেকে সিপিএম বিধায়ক আমজাদ হোসেন মন্তব্য করেন, ‘‘গুলিটা চালাল কে?’’ ক্রুদ্ধ মুখ্যমন্ত্রী বলে ওঠেন, ‘‘আপনি চালিয়েছেন গুলি!’’ এই সূত্রেই সিপিএম ও কংগ্রেসের জোটকে এক হাত নেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘‘ওই জন্যই কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেস গড়েছিলাম। কংগ্রেস যত সিপিএমের দিকে এগোচ্ছে, তত সাইনবোর্ড হয়ে যাচ্ছে! আমরা প্রমাণ করে দিয়েছি, কংগ্রেস সিপিএমের ডান হাত!’’

জলঙ্গির ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য ঘিরে শোরগোল শুরু হয় বিধানসভার ভিতরেই। ঘটনার পরেই বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ সরস্বতী পুজোর দিনে বন্‌ধ কীসের, এই প্রশ্ন তুলেছিলেন। সে কথা মনে করিয়ে বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী পরে সভার বাইরে বলেন, ‘‘নাগপুরের ভাষায় বাংলায় দু’টেী দল কথা বলছে! নির্দেশ একই জায়গা থেকে আসছে? তৃণমূল নেতার গুলিতে দু’জন মারা গেলেন। ঘটনা নিয়ে শোকপ্রকাশ নেই, মুখ্যমন্ত্রী গুলি চালনার নিন্দা পর্যন্ত করলেন না। তিনি সরস্বতী পুজোর কথা বলছেন! এটা ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র!’’ বিরোধী দলের সচেতক, কংগ্রেসের মনোজ চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘সরস্বতী পুজোয় বন্‌ধ তো কী হয়েছে? সরস্বতী পুজো বলে গুলি চালিয়ে দেওয়া যুক্তিযুক্ত? মদ খেয়ে মারা গেলে টাকা দেবেন, গুলিতে মারা গেলে দেবেন না? বিজেপি চটে যাবে বলে?’’

মুখ্যমন্ত্রী এ দিন অবশ্য দাবি করেছেন, বাংলায় রাজনৈতিক হিংসা অনেক কমে গিয়েছে। তাঁর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বাম জমানায় ২০০১ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত রাজ্যে রাজনৈতিক হিংসার বলি হয়েছিলেন ৬৬৩ জন। সরকার বদলের পরে ২০১১ থেকে পরের ৮ বছরে সেই সংখ্যা নেমে হয়েছে ১৫৪। মমতার কথায়, ‘‘আমরা এটাও চাই না। রাজনৈতিক খুন ২০১৯ সালে হয়েছে ১৫টা, তার মধ্যে ১৩ জনই তৃণমূলের।’’

Jalangi Death Saraswati Puja Mamata Banerjee Strike
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy