প্রদীপ তা ও কমল গায়েনের স্মরণসভায় সূর্যকান্ত মিশ্র। নিজস্ব চিত্র
মানুষ তাঁদের ভালবাসলেও আস্থা রাখতে পারছেন না, বর্ধমানে এসে দলের কর্মীদের কাছে এমনই দাবি করলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। কেন তাঁদের উপরে বিশ্বাস রাখতে পারছেন না, তা মানুষের কাছে গিয়ে জানতে হবে বলে পরামর্শ দিলেন তিনি। সেই সঙ্গে আসন্ন পুরভোটে তৃণমূল এবং বিজেপি বিরোধী শক্তিদের নিয়ে এগিয়ে চলার বার্তাও দিলেন তিনি।
শনিবার বর্ধমানের সংস্কৃতি লোকমঞ্চে দলের দুই নেতা প্রদীপ তা ও কমল গায়েনের স্মরণসভায় যোগ দেন সূর্যকান্ত। ২০১২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি দেওয়ানদিঘির মির্জাপুরে খুন হন সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক প্রদীপবাবু এবং প্রবীণ নেতা কমলবাবু। অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের দিকে। অভিযুক্তেরা এখন জামিনে মুক্ত।
এ দিন সভায় সূর্যকান্ত বলেন, ‘‘মানুষ আমাদের ভালবাসছেন। অথচ, আস্থা রাখতে পারছেন না, বিশ্বাস করতে পারছেন না কেন? সেটা মানুষের কাছে পৌঁছে জানতে হবে। কেউ প্রশ্ন করলে সেটা শুনতে হবে। তার জবাব খুঁজে বার করতে হবে।’’
আসন্ন পুরভোটে লড়াইয়ের প্রসঙ্গে সূর্যকান্তের বক্তব্য, ‘‘কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা করে আমরা ভোটে লড়তে চাই, যাতে তৃণমূল-বিজেপি বিরোধী ভোট সর্বোচ্চ পর্যায়ে এক করা যায়। রাজ্য স্তরে আলোচনা করে নীতি ঠিক হয়েছে। এ বার জেলায় বসে বা আরও নীচে বসে কী ভাবে আসন সমঝোতা হবে সেটা ঠিক করতে হবে।’’ কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘জোটটাই শেষ কথা নয়। বিকল্পের সন্ধান দিতে হবে। সে জন্য একত্রিত হয়ে লড়াই করতে হবে।’’
কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে সিপিএমের বর্ধমান ‘লবি’ বারবার বিরোধিতা করেছে। জেলায় দলের এক শীর্ষ নেতা দাবি করেন, সম্প্রতি রাজ্য কমিটির বৈঠকেও বর্ধমানের নেতারা এ নিয়ে সরব হয়েছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘ওই বৈঠকেই কী ভাবে কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা করে ভোটে লড়বে দল, সে নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তাই আর পিছনোর রাস্তা নেই। রাজ্য কমিটির সিদ্ধান্ত মেনে পূর্ব বর্ধমানের ছ’টি পুরসভাতেই কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে হবে।’’ জেলা কংগ্রেসের নেতা কাশীনাথ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুরভোট নিয়ে সিপিএমের সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়নি। তবে অনেকগুলি যৌথ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।’’
সভায় সূর্যকান্তের আরও অভিযোগ, ‘‘অর্থনীতির সঙ্কট বাড়ছে। গ্রামের মানুষের কেনার ক্ষমতা কমছে। গ্রামে গরিব মানুষ যেমন বিস্কুট কিনতে পারছেন না, তেমনই শহরে বিত্তশালী মানুষজনও গাড়ি কিনতে চাইছেন না।’’ তাঁর দাবি, “ধর্মের বিভাজন নয়, আসল লক্ষ্য গরিব মানুষ। তাঁদের উপরেই আঘাত আসছে।’’ এনপিআরে নির্দিষ্ট কয়েকটির বেশি প্রশ্নের উত্তর না দেওয়ার ডাকও দেন তিনি।
বিজেপির জেলা সাংগঠনিক সভাপতি (বর্ধমান সদর) সন্দীপ নন্দীর পাল্টা বক্তব্য, ‘‘মিথ্যা অভিযোগ তোলেন বলেই মানুষের কাছে এখন আর সিপিএম নেতাদের গ্রহণযোগ্যতা নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy