Advertisement
E-Paper

বারবার বদলি কেন পুলিশ কমিশনার, বিস্ময় ও প্রশ্ন প্রশাসনে

নির্বাচনী ফলাফলের পরে একই পদে এত বার রদবদলের এমন ঘটনায় প্রশাসনিক কর্তাদের অনেকেই বিস্মিত।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০১৯ ০৩:৫৩
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

প্রশাসন হোক বা পুলিশ, বদলি চাকরির অঙ্গ। কিন্তু লোকসভা ভোটের ফলাফল ঘোষণার পরে বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে একই পদে বারবার বদলির সিদ্ধান্তে প্রশাসনিক দ্বিধা-দোলাচল দেখছেন পর্যবেক্ষকেরা।

প্রথমত, বিধাননগরের পুলিশ কমিশনারের পদে পরপর চার দিনে চার বার বদলির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয়ত, ব্যারাকপুরে পুলিশ কমিশনারের পদে রদবদল হল দু’বার। তৃতীয়ত, কয়েকটি জায়গায় একাধিক বার পুলিশ-প্রশাসনের মাথা বদল হয়েছে। চতুর্থত, কিছু জেলাশাসককে বদলি করেও বুধবার ফের সেই সব পদে রদবদল করল রাজ্য সরকার।

নির্বাচনী ফলাফলের পরে একই পদে এত বার রদবদলের এমন ঘটনায় প্রশাসনিক কর্তাদের অনেকেই বিস্মিত। প্রশাসনের অন্দরে প্রশ্ন উঠছে, এই দ্বিধা, এই দোলাচল কেন? সংশ্লিষ্ট অফিসারদের উপরে আস্থা বা ভরসা নিয়ে সংশয় আছে বলেই কি বারবার বদলির সিদ্ধান্ত বদল?

ভোট এলে পুলিশ-প্রশাসনের শীর্ষ স্তরের বিভিন্ন পদাধিকারীদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ জমা পড়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে। কমিশন সেগুলি যাচাই করে কোনও কোনও কর্তাকে সরিয়ে দেয়। যত দিন পুলিশ-প্রশাসনের উপরে কমিশনের নিয়ন্ত্রণ কায়েম থাকে, বদলির সেই সব নির্দেশের হেরফের হয় না। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, কমিশনের নিয়ন্ত্রণ উঠে গেলে রাজ্য সরকার অপসারিত কর্তাদের আগের পদে ফিরিয়ে এনেছেন। এ বারের ভোটেও কমিশন বেশ কিছু প্রশাসনিক ও পুলিশকর্তাকে সরিয়ে দিয়েছিল। কমিশনের নিয়ন্ত্রণ শেষ হওয়ার পরে তাঁদের অনেককেই স্বপদে ফেরাতে দেরি করেনি রাজ্য। প্রশ্ন উঠছে, নিজেদের সেই সব অফিসারকে নিয়ে বারবার রদবদল কেন?

যে-সব পদে বারবার বদল হচ্ছে, সেই তালিকার প্রথমেই আছে বিধাননগরের পুলিশ কমিশনারের পদ। ভোটের সময় কমিশন জ্ঞানবন্ত সিংহকে সরিয়ে এন রমেশ বাবুকে বিধাননগরের সিপি করেছিল। আদর্শ আচরণবিধি উঠে যেতেই রবিবার ওই পদে জ্ঞানবন্তকে ফিরিয়ে আনা হয়। কিন্তু তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সরিয়ে দেওয়া হয় তাঁকে। ওই পদে আনা হয় নিশাত পারভেজকে। সিদ্ধিনাথ গুপ্তের জায়গায় জ্ঞানবন্ত হয়েছিলেন রাজ্যের এডিজি (আইনশৃঙ্খলা)। কিন্তু তার পরের দিনেই নিশাতকে সরিয়ে বিধাননগর পুলিশের মাথায় বসানো হয় ভরতলাল মিনাকে। আর বুধবারের নির্দেশিকা অনুযায়ী এ বার বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার হলেন লক্ষ্মীনারায়ণ মিনা। ভরতলাল মিনা শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার হিসেবেই থেকে গেলেন। চার বার বিধাননগরের কমিশনার বদল করা হল মাত্র চার দিনের ব্যবধানে!

প্রায় একই রকম দোলাচল দেখা গিয়েছে ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার বাছাইয়ের ক্ষেত্রেও। ভোটের পরে ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনারের পদ থেকে সুনীল চৌধুরীকে সরিয়ে দেবেন্দ্রপ্রকাশ সিংহকে ওই পদে বসিয়েছিল সরকার। লোকসভা ভোটে ব্যারাকপুর কেন্দ্রে জিতেছে বিজেপি। বুধবার ওই পদে ফের রদবদল করে ব্যারাকপুরের নতুন পুলিশ কমিশনার করা হয়েছে তন্ময় রায়চৌধুরীকে। হাওড়ার পুলিশ কমিশনার করা হয়েছে গৌরব শর্মাকে। তিনি ছিলেন ওই জেলারই (গ্রামীণ) পুলিশ সুপার। সেই পদে বদলি করা হয়েছে সৌম্য রায়কে।

সুন্দরবন পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার তথাগত বসুকে মঙ্গলবারেই জলপাইগুড়ির পুলিশ কমিশনার পদে বদলি করা হয়েছিল। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সেই নির্দেশিকা বাতিল করা হয়েছে। জলপাইগুড়ি জেলার পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতিকে কালিম্পংয়ের পুলিশ সুপার করা হয়েছিল

মঙ্গলবার। এ দিন সেই নির্দেশিকা বাতিল হয়েছে।

ভোটের পরে জেলাশাসক স্তরেও রদবদল করেছে রাজ্য। দার্জিলিঙের জেলাশাসক জয়সী দাশগুপ্তকে বদলি করা হয়েছে খাদ্য দফতরের যুগ্মসচিব পদে। দার্জিলিঙের নতুন জেলাশাসক হয়েছেন কেএমডিএ-র সিইও সঞ্জয় বনসল। কেএমডিএ-র সিইও-পদে পাঠানো হয়েছে অন্তরা আচার্যকে। তাঁকে সম্প্রতি উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসকের পদ থেকে সরিয়ে অর্থ দফতরে বদলি করা হয়েছিল। জলপাইগুড়ির জেলাশাসকের পদে সদ্য বদলি হয়েছিলেন শিল্পা গোরিসারিয়া। সেই নির্দেশিকা বাতিল করে তাঁকে অর্থ দফতরের যুগ্মসচিব পদে ফের বদলি করা হয়েছে।

নির্বাচনের পরে প্রথম দফার জেলাশাসক বদলির নির্দেশিকায় আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসকের পদ ফাঁকা রাখা হয়েছিল। এ দিন নতুন নির্দেশিকায় সেখানকার জেলাশাসক করা হয়েছে সুরেন্দ্রকুমার মিনাকে। তিনি দুর্গাপুরে স্পেশ্যাল কমিশনার (জিএসটি)-এর পদে ছিলেন।

Bidhannagar Police Commissionner Mamata Banerjee Election Commission Of India
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy